আমাকে গ্রেপ্তার নয় অপহরণ করা হয়েছিল, বললেন মডেল মেঘনা
Published: 22nd, June 2025 GMT
মডেল মেঘনা আলম বলেছেন, গত ৯ এপ্রিল আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলা ভুল হবে। আমাকে অপহরণ করা হয়েছিল। কারণ, গ্রেপ্তার করার একটি আইনি প্রক্রিয়া থাকে, সেটি মানা হয়নি।
রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ফেরত চেয়ে আবেদন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় মেঘনা আলমের মোবাইল ফোন, আইপ্যাড ও পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছিল। এসব নিজের জিম্মায় নেওয়ার জন্য আবেদন করেন মেঘনা। তার পক্ষে আইনজীবী মহসিন রেজা পলাশ ও মহিমা ইসলাম বাঁধন শুনানি করেন।
শুনানি শেষে বিচারক পরে আদেশ দেবেন বলে জানান। আদালত সূত্র জানায়, সোমবার এ বিষয়ে আদেশ হতে পারে।
আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের মেঘনা আলম বলেন, আমার বিরুদ্ধে কোনো রাষ্ট্রদূতের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। যে রাষ্ট্রদূতের কথা বলা হচ্ছে, তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকলে আদালতে এসে প্রমাণ দিক।
তিনি বলেন, মানুষের একটি বিষয়ে পরিষ্কার হওয়া দরকার। একজন মিস বাংলাদেশকে এভাবে মিথ্যা মামলায় হেনস্তা করা বৈশ্বিকভাবেও লজ্জার। আমাদের সমাজে মডেলদের নিয়ে নানা ভুল ধারণা রয়েছে। কিন্তু আমি এ পেশাকে সম্মান জানিয়েই বলছি, আমার পেশাগত পরিচয় মডেল না; আমি একজন পলিটিকাল লিডারশিপ ট্রেইনার।
মেঘনা বলেন, আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ, মামলা বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল না। আইনের লোক হোক বা না হোক, আমার বাসায় এসে তাৎক্ষণিকভাবে হামলা করে জোর করে নিয়ে যায়। এটাকে আইনি ভাষায় অপহরণ বলে, গ্রেপ্তার বলে না।
গত ৯ এপ্রিল বাসা থেকে আটক হন মেঘনা আলম। পরদিন ১০ এপ্রিল বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ১৭ এপ্রিল আদালত ধানমন্ডি থানার মামলায় মেঘনাকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেন।
গত ২৮ এপ্রিল মেঘনার ৩০ দিনের আটকাদেশ বাতিল করা হয়। অন্যদিকে আদালত তাকে জামিন দেন। পরদিন কারামুক্ত হন তিনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অপহরণ
এছাড়াও পড়ুন:
‘আপনাদের কার্যক্রম তো সন্ত্রাসীদের মতো’ সাংবাদিকদের বললেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ভিডিও ভাইরাল
সংবাদ সংগ্রহে যাওয়ার সময় নৌকায় মোটরসাইকেল তোলা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডায় পঞ্চগড়ের কয়েকজন সাংবাদিককে ‘আপনাদের কার্যক্রম তো সন্ত্রাসীদের মতো’ বলেছেন জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
আজ রোববার দুপুরে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাটে এই ঘটনা ঘটে। সাংবাদিকদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়া ওই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নাম মো. তাহমিদুর রহমান। তিনি পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার হিসেবে কর্মরত। মহালয়া উপলক্ষে পুণ্যার্থীদের নদী পারাপারে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত ছিলেন তিনি।
তবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদুর রহমান দাবি করেন, অনুমতি ছাড়া ভিডিও করা এবং ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়ার কারণেই তিনি এ ধরনের কথা বলেছেন।
ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাভিশন ও দৈনিক কালবেলার পঞ্চগড় প্রতিনিধি মোশারফ হোসেন, আজকের পত্রিকার পঞ্চগড় প্রতিনিধি ফাহিম হাসান, ঢাকা পোস্টের পঞ্চগড় প্রতিনিধি নুর হাসান এবং ভোরের ডাকের বোদা উপজেলা প্রতিনিধি মাহমুদুল হাসান।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ৩৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলছেন, ‘আপনাদের কার্যক্রম তো সন্ত্রাসীদের মতো।’ তখন তাঁরা প্রতিবাদ করেন। সাংবাদিকেরা দাবি করেন, এর আগে আরও চারটি মোটরসাইকেল নৌকায় পার হয়েছে। কিন্তু তাঁদের বাধা দেওয়া হয়।
ঘটনাস্থল আউলিয়ার ঘাট থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরেই বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের ত্রিস্রোতা মহাপীঠধাম শ্রীশ্রী বোদেশ্বরী শক্তিপীঠ মন্দির। মহালয়া উপলক্ষে সেখানে আজ সকাল থেকে পূজা চলছে। ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়ার দিন করতোয়া নদীতে নৌকাডুবিতে ৭১ জনের মৃত্যু ও একজন নিখোঁজের ঘটনার পর থেকে প্রশাসন ঘাটে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা চালু রেখেছে।
বাংলাভিশন টেলিভিশন ও কালবেলার পঞ্চগড় প্রতিনিধি মোশারফ হোসেন বলেন, ‘মহালয়ার খবর সংগ্রহের জন্য আমরা বোদেশ্বরী মন্দিরে যেতে মোটরসাইকেলসহ নৌকায় নদী পার হতে যাই। আমাদের আগেও কয়েকটি মোটরসাইকেল পার হয়েছে। কিন্তু আমরা সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর ওই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমাদের বাধা দেন। অন্যরা যেতে পারলে আমরা কেন পারব না—এই প্রশ্ন করলে তিনি আমাদের সন্ত্রাসী বলে গালাগাল করেন।’
অভিযোগের বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০২২ সালের নৌকাডুবির ঘটনার পর প্রশাসনের নির্দেশনা ছিল—এক নৌকায় যেন ৩০ জনের বেশি যাত্রী বা কোনো যানবাহন না ওঠে। সাংবাদিকেরা মোটরসাইকেল নিয়ে একই নৌকায় যেতে চাইছিলেন বলে আমি বাধা দিই। পাশ থেকে একজন সাংবাদিক বলেন, আমাকে ভাইরাল করবেন, ঝামেলায় ফেলবেন। এভাবে আমাকে পরোক্ষভাবে হুমকি দেওয়ার জন্যই এই কথা বলেছি। আমি বলেছি, আপনারা স্টেটমেন্ট নিতে চাইলে বলেন, কিন্তু এভাবে র্যানডমলি তো ক্যামেরা ধরে ভিডিও করতে পারেন না।’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরও বলেন, ‘আমার তেমন দোষ না থাকার পরও ইউএনও স্যার (বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) আমার পক্ষ হয়ে তাঁদের কাছে “সরি” বলেছেন। ওসি সাহেবও সমাধানের চেষ্টা করেছেন। তারপরও তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ওই ভিডিও ক্লিপটি ভাইরাল করার চেষ্টা করছেন।’
এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি জানার পর ওই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে সেখান থেকে চলে আসতে বলা হয়েছে।