চুয়াডাঙ্গায় চোরাচালানের সোনা আত্মসাৎ নিয়ে বিরোধ–অপহরণ, যশোরে উদ্ধার ৫
Published: 5th, November 2025 GMT
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা সীমান্তে সোনার চালান আত্মসাৎ নিয়ে বিরোধের জেরে অপহৃত বাবা-ছেলেসহ পাঁচজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার ভোরে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার হাজিরবাগ ইউনিয়নের কুল্লা গ্রামের রেজাউল ইসলামের খামারের একটি গুদামের ভেতর থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার ব্যক্তিরা হলেন জীবননগরের গোয়ালপাড়া গ্রামের আনারুল ইসলাম (৫২), তাঁর ছেলে শফিউল ইসলাম (২৭), স্বপন হোসেন (৪০), আবুল হোসেন (৩০) ও হাসান মণ্ডল (২৭)।
চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ, সাইবার ক্রাইম অপরাধ প্রতিরোধ দল, পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও জীবননগর থানা-পুলিশ যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে। আজ সকালে ঘটনাস্থল থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) জামাল আল নাসের প্রথম আলোকে বলেন, চুয়াডাঙ্গায় ফিরে অভিযানের বিষয়ে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিস্তারিত জানানো হবে।
জীবননগর থানা-পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সোনার একটি চালান আত্মসাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোয়ালপাড়া গ্রামের দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। যা পরে জানাজানি হয়েছে। গত ১৩ অক্টোবর আনারুল ও তাঁর ছেলে শফিউল এবং পরদিন স্বপন, আবুল ও হাসানকে কৌশলে অপহরণ করেন প্রতিপক্ষের লোকজন। পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁদের সন্ধান না পাওয়ায় ২১ অক্টোবর জীবননগর থানায় একটি অপহরণের মামলা করা হয়।
হাসান মণ্ডলের বাবা শওকত আলী বাদী হয়ে ওই মামলায় গোয়ালপাড়া গ্রামের ছয়জনকে আসামি করেন। তাঁরা হলেন তিন ভাই আবদুল মজিদ (৪০), আবদুস সামাদ (৪৫) ও বিপ্লব হোসেন (৫০); লালন মণ্ডল (৪২), শাহিন উদ্দিন (৩২) ও মিজানুর রহমান (৩০)।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার ভোরে জীবননগর থানা-পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে হরিহরনগর গ্রাম থেকে আজিজুল হক (৪৫) ও আমিরুল ইসলামকে (৩৭) সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের দেওয়া তথ্য পর্যালোচনাসহ বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ ভোরে যশোরে অভিযান চালানো হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ বননগর থ ন ল ইসল ম উদ ধ র র একট
এছাড়াও পড়ুন:
নিখোঁজের চার দিন পর বিলের কচুরিপানার নিচে মিলল আনাসের মরদেহ
গাজীপুরের শ্রীপুরে নিখোঁজের চার দিন পর মিলেছে চার বছরের শিশু আনাস খানের মরদেহ। বিলে কচুরিপানার ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুটিকে অপহরণের পর হত্যা করে মরেদহ গুমের চেষ্টা করা হয়েছিল বলে ধারণা করছে পুলিশ।
নিহত আনাস খান স্থানীয় চিনাশুকানিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। সে সৌদি আরব প্রবাসী আল আমিনের একমাত্র ছেলে।
আরো পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
‘পরিস্থিতির শিকার হয়ে বাচ্চা রেখে গেলাম, দয়া করে কেউ নিয়ে যাবেন’
সোমবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে চিনাশুকানিয়া গ্রামের বাঙ্গালপাড়া বিলে কচুরিপানার নিচে আনাসের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা।
এ ঘটনায় ওই এলাকার হাসিনা আক্তার (২৮) ও তার স্বামী নজরুল ইসলামকে (৩৫) আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা শিশু অপহরণ ও হত্যায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে শ্রীপুর থানা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, গত শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় আনাস। পরে আর ঘরে ফেরেনি সে। বহু খোঁজাখুঁজির পর তার সাইকেলটি পাওয়া যায় প্রতিবেশী সাজুর বাড়িতে। সন্দেহ করা হয় সাজুর প্রতিবেশী নজরুলকে। তখনই শুরু হয় পুলিশের অনুসন্ধান।
নিহত শিশুর চাচাতো ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, “আমাদের আনাসকে ওরা কেমন নির্দয়ভাবে হত্যা করেছে! চোখ তুলে খুঁচিয়ে মারার চিহ্ন দেখেছি। মানুষ হয়ে এমন পাশবিকতা কীভাবে করে?”
শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেছেন, “আনাস নিখোঁজের পরপরই তদন্ত শুরু হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছে, আনাসকে অপহরণের পর বাড়িতেই হত্যা করা হয়। দুই দিন সেপটিক ট্যাংকে রাখার পর দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় বিলে কচুরিপানার নিচে লাশ ফেলে দেওয়া হয়।”
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি হাসমত আলী বলেছেন, “মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে আনাসকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে ধারণা করছি। হত্যাকাণ্ডে আরো কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
ঢাকা/রফিক সরকার/রফিক