যশোর বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিতের ভুয়া বিজ্ঞপ্তি, বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান
Published: 22nd, June 2025 GMT
যশোর শিক্ষাবোর্ডে আগামী ২৬ জুন অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা প্রথমপত্র স্থগিত নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ‘বাংলা প্রথমপত্রের প্রশ্নে অনিয়ম ও চুরি হয়েছে’ এমন শিরোনামে বিজ্ঞপ্তি কে বা কারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালিয়েছে। তবে এ প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হতে পরীক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
আজ রোববার বিকেলে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড.
জানা গেছে, সারাদেশে আগামী ২৬ জুন এইসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। নকলমুক্ত ও সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা গ্রহণে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। এরমধ্যে শনিবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যশোর বোর্ডে বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা স্থগিতের বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে পড়ে। বিজ্ঞপ্তিটিতে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের নাম উল্লেখ করে ভুয়া সাক্ষর করা হয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা প্রথমপত্রের প্রশ্নপত্রে অনিয়ম ও চুরি হওয়ার বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া গেছে।শিক্ষার্থীদের স্বার্থ ও পরীক্ষার নিরপেক্ষতা বজায় রাখার লক্ষে ২৬ জুনের অনুষ্ঠেয় বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষাটি স্থগিত করা হলো। পরবর্তীতে পরীক্ষার তারিখ জানানো হবে। বিজ্ঞপ্তিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিভ্রান্তি ছড়ায়।
পরবর্তীতে দুপুরে বোর্ড কর্তৃপক্ষের নজরে এলে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বোর্ডের ওয়েব সাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মতিনের সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বোর্ডের সকল ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পরীক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশক্রমে জানানো যাচ্ছে যে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কে বা কারা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সাক্ষর জাল করে পরীক্ষা স্থগিতের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের কোনো বিজ্ঞপ্তি শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ প্রকাশিত হয়নি। প্রকাশিত সূচি অনুযায়ী এইচএসসি-২০২৫ যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, কে বা কারা ভুয়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়াতে এই জালিয়াতি করেছে দুর্বৃত্তরা। আমরা পরীক্ষার্থীদের কোনো বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। জালিয়াতি চক্রদের ধরতে আইনগত ব্যবস্থা নিতে থানাতে অভিযোগ করেছি। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষাগ্রহণে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন বলেন, বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে পুলিশের একটি টিম কাজ শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, যশোর শিক্ষাবোর্ডে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় এ বছর খুলনা বিভাগের ৫৭৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক লাখ ১৬ হাজার ৩১৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। ২৪০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল এক লাখ ২২ হাজার ৫১১ জন। এ বছর যশোর বোর্ডে কেন্দ্রের ভেন্যু প্রথা বাতিল করা হয়েছে। তবে এ বার নিজ প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীদের নিজ কেন্দ্রের ভেন্যুতে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকছে না। ভেন্যু প্রথা বাতিল করায় এবার ৬টি কেন্দ্র বেড়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় পরীক্ষার্থী কমেছে। কারণ শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতির ঘাটতে থাকতে পারে, এজন্য হয়ত তারা অংশ নিচ্ছে না বলে বোর্ড সংশ্লিষ্ট জানিয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: যশ র শ ক ষ ব র ড ব র ড র পর ক ষ আহ ব ন জ ন পর ক ষ র থ অন ষ ঠ ত উল ল খ হওয় র
এছাড়াও পড়ুন:
ডেমোক্র্যাটদের জয়, অর্থনৈতিক সমস্যা—ট্রাম্পের রিপাবলিকানদের জন্য বড় ধাক্কা
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর মঙ্গলবার ছিল প্রথম বড় নির্বাচনের দিন। এদিন নিউইয়র্ক সিটির মেয়রসহ অনুষ্ঠিত কয়েকটি নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা অনেকাংশে জয়লাভ করেছেন।
এখন ডেমোক্রেটিক পার্টির ভবিষ্যৎ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। একটি বড় বিষয় অনেকের নজরে এসেছে। সেটি হলো অর্থনীতি। এখন তা এক গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। ট্রাম্প গত শরৎকালে দেশের অর্থনীতি ভালো করার জন্য যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেটি পূরণ করতে পারেননি। এ ব্যর্থতা রিপাবলিকানদের জন্য আগামী বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে।
মঙ্গলবার ডেমোক্র্যাটরা ভার্জিনিয়া ও নিউজার্সির গভর্নর নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। নতুন গভর্নর নির্বাচনের জন্য শুধু এ দুই অঙ্গরাজ্যে ভোট হয়েছে। দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য পেনসিলভানিয়ার সুপ্রিম কোর্টের তিন আসনও দখল করেছেন ডেমোক্র্যাটরা। এ ছাড়া কলোরাডো থেকে মেইন পর্যন্ত বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে গণভোটে নানা প্রস্তাব পাস হয়েছে।
নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প অনেকটাই ছিলেন অনুপস্থিত। তবে রিপাবলিকান প্রার্থীরা তাঁর সঙ্গে নিজেদের ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত রেখেছেন। তাঁরা ভেবেছিলেন, গত বছর তাঁর বড় জয় এবারও তাঁদের জন্য পথ খুলে দেবে। কিন্তু তাঁদের ধারণা ছিল ভুল।
ডেমোক্র্যাটরা আশা করছেন, তাঁদের জয় সামনের মধ্যবর্তী নির্বাচনে নতুন কৌশলের পথ দেখাবে। তবে সতর্ক থাকারও প্রয়োজন। মঙ্গলবারের নির্বাচন শুধু কিছু নির্বাচনী অঙ্গরাজ্যেই সীমিত ছিল; যাদের অধিকাংশই নীল–অধ্যুষিত (ডেমোক্র্যাট ভোটার সংখ্যাগরিষ্ঠ) এবং সাধারণত যে দল হোয়াইট হাউসে ক্ষমতায় থাকে, তারা মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভালো ফলাফল পায় না।
এদিকে ওয়াশিংটনে রিপাবলিকানদের জন্য হয়তো আরও উত্তেজনাপূর্ণ খবর হলো, একজন স্বঘোষিত গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক জোহরান মামদানি নিউইয়র্ক সিটির পরবর্তী মেয়র হয়েছেন।
এ বছর নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প অনেকটাই ছিলেন অনুপস্থিত। তবে রিপাবলিকান প্রার্থীরা তাঁর সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক দৃঢ় দেখানোর চেষ্টা করেছেন। তাঁরা ভেবেছিলেন, গত বছরের বড় জয় এবারও তাঁদের জন্য পথ খুলবে। কিন্তু তাঁরা ভুল ছিলেন।নতুন ডেমোক্রেটিক কৌশলসাবেক কংগ্রেস সদস্য আবিগেইল স্প্যানবার্গার ভার্জিনিয়ার পরবর্তী গভর্নর হচ্ছেন। অঙ্গরাজ্যের প্রথম নারী গভর্নরও তিনি। নিউজার্সির গভর্নরের আসন জিতেছেন আরেক ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য মিকি শেরিল। তাঁরা নির্বাচনী প্রচারে মূলত অর্থনীতি, জননিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে মনোযোগ দিয়েছেন।
মঙ্গলবারের নির্বাচনী ফলাফলে দেখা গেছে, দ্রুত বর্ধনশীল শহরতলী, গ্রামীণ এলাকা ও সেনাবাহিনীর ভোটার অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে ডেমোক্র্যাটরা চার বছর আগে তুলনায় ভালো করেছেন।
ডেমোক্র্যাটরা দলের চরম-বাম নীতির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখেই জিতেছেন। স্প্যানবার্গার তাঁর বিজয় ভাষণে বলেছেন, তাঁরা ‘পক্ষপাতের চেয়ে বাস্তববাদিতা’কে গুরুত্ব দিয়েছেন।
বেশ কিছু ডেমোক্র্যাট নেতা মনে করেন, মধ্যপন্থী কৌশলই তাঁদের দলের পুনর্জাগরণের চাবিকাঠি হতে পারে; বিশেষ করে গত বছর রিপাবলিকানরা প্রেসিডেন্ট পদে ও কংগ্রেসের উভয় কক্ষে জেতার পর।
আরও পড়ুনজোহরান মামদানির ঐতিহাসিক জয়ের রহস্য কী৪ ঘণ্টা আগেসবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, উভয় অঙ্গরাজ্যে ডেমোক্র্যাটরা মূলত জীবনযাত্রার ব্যয়, যেমন খাদ্যপণ্য, জ্বালানি ও স্বাস্থ্যসেবার ক্রমবর্ধমান খরচের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন; যা নিয়ন্ত্রণে রীতিমতো লড়তে হচ্ছে ট্রাম্পকে।
অর্থনৈতিক নীতিতে মধ্যপন্থী অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি, স্প্যানবার্গার ও শেরিল প্রগতিশীল বিষয়গুলো, যেমন এলজিবিটিকিউ অধিকার এবং দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ট্রাম্পের আক্রমণ প্রতিরোধ করায় বেশি গুরুত্ব দেননি। স্প্যানবার্গার প্রচারে ট্রাম্পের নামও খুব কম উল্লেখ করেছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প, জোহরান মামদানি, মিকি শেরিল (নিচে বাঁয়ে) ও আবিগেইল স্প্যানবার্গার (নিচে ডানে)