দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ পেতে কোনো আইনগত বাধা নেই বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় নতুন প্রতীক হিসেবে যুক্ত হলে তা বিধিসম্মতভাবে এনসিপির জন্য বরাদ্দ হবে বলে আশা রাখেন তিনি। সেই সঙ্গে অন্য একটি দল ‘শাপলা’ প্রতীক দাবি করলেও তা নির্বাচন কমিশন নিষ্পত্তি করবে বলে জানায় দলটি।

রোববার সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এনসিপি প্রতিনিধি দল। এ বৈঠকে সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মূখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দিন পাটোয়ারী, উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

বিকেলে এনসিপি আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নেতৃত্বে দল নিবন্ধনের প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র কমিশনে জমা দেন তারা। সন্ধ্যা ৭ টার দিকে নির্বাচন ভবনের নিচে নেতাকর্মীদের নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এনসিপি আহ্বায়ক।

নাহিদ ইসলাম জানান, রোববার নির্ধারিত সময়ে এনসিপির পক্ষ থেকে নিবন্ধন শর্তের চেয়েও বেশি কাগজপত্রসহ নিবন্ধন আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। সব শর্তপূরণ করে কাগজপত্রসহ আমরা আবেদন জমা দিয়েছি। ২৫টি জেলা, ১০৫টি উপজেলা কমিটি ও প্রতিটি উপজেলায় ২শ’ জন সমর্থক, অফিস চুক্তিসহ গঠনতন্ত্র, কাগজপত্র জমা দিয়েছি। আমরা আশাবাদী দ্রুত সময়ের মধ্যে এনসিপি নিবন্ধন পাবে।

তিনটি প্রতীকের জন্য এনসিপি আবেদন করেছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রথম পছন্দ শাপলা। আশা করছি, জনগণের মার্কা হিসেবে, গণঅভ্যুত্থানের মার্কা হিসেবে, গ্রাম বাংলার প্রতীক হিসেবে এনসিপি শাপলা প্রতীক পাবে। শাপলা মার্কা নিয়ে আগামী দিনে নির্বাচনে অংশ নেবো।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে প্রবাসী ভোটাধিকারের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘আমরা জোর দাবি জানিয়েছি প্রবাসীদের ভোটাধিকার যে কোনো মূল্যে যাতে রক্ষা হয়। এখনও ইসি সিদ্ধান্ত নেয় নি কোন প্রক্রিয়ায় হবে। দ্রুত সময়ে নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন।’

জাতীয় প্রতীক শাপলা কীভাবে এনসিপি বরাদ্দ পাবে? জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ইসির যে আইন-বিধি আমরা পর্যালোচনা করেছি, সেই আইনগুলোতে এ ধরনের কোনো বাধা-নিষেধ নেই। জাতীয় ফল হিসেবে কাঁঠাল একটি দলের মার্কা হিসেবে রয়েছে।সেক্ষেত্রে কোনো সমস্যা দেখি নি বলে আমরা এটিতে (শাপলা) আবেদন করেছি।’

জাতীয় প্রতীকের একটি কথা এসেছে উল্লেখ করে তিনি জানান, জাতীয় প্রতীক কেবল শাপলা নয়। শাপলা, ধানের শীষ, তারকা-এগুলো মিলিয়ে জাতীয় প্রতীক। সেক্ষেত্রে ধানের শীষ, তারকা বা তারা– এ দুটোও দুটি দলের মার্কা হিসেবে রয়েছে। ফলে সেক্ষেত্রে কোনো ধরনের আইনগত সমস্যা দেখি না। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলেছি। আমরা শাপলাকে মার্কা হিসেবে নিয়েছি। নদীমাতৃক বাংলাদেশের সবার কাছে পরিচিত শাপলা। সাধারণের দল হিসেবে আমরা শাপলাকে সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি দিয়ে আবেদন করেছি।’

ইতোমধ্যে নাগরিক ঐক্য তাদের ‘কেটলি’ প্রতীক পাল্টে ‘শাপলা’ প্রতীক দেওয়ার জন্য আবেদন করেছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মূখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘একটি দলের কথা বলেছিলেন, উনারা একটি প্রতীক অলরেডি পেয়েছেন। বিদ্যমান তালিকা থেকে যদি নিষ্পত্তি হয়ে যায়, বর্তমানে যে প্রতীক (শাপলা) চেয়েছে, সেটা নেই (বিধিমালায়)। ফলে এটার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া উচিত।’

ভবিষ্যতে নির্বাচন কমিশন বিধিমালায় এনসিপির চাওয়ার প্রতীকগুলো অন্তর্ভুক্ত হবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যে প্রতীকগুলো (বাকি) রয়েছে তাতে ভালো কোনো প্রতীক দেখি না আমরা। নতুন প্রতীক আসার সিদ্ধান্ত হবে। পদ্ধতিগত ভুল কোনো সমস্যা বলে মনে করি না আমরা।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প ন হ দ ইসল ম ইস ন হ দ ইসল ম ক গজপত র এনস প র

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নিয়ে গাড়ি কেনার আগে যা দেখতে হবে

একটি গাড়ির স্বপ্ন দেশের প্রায় সব মধ্যবিত্ত পরিবারের। কিন্তু স্বপ্ন ও সাধ্যের যোগসূত্র ঘটে না। এই যোগসূত্র ঘটাতে অনেকেই গাড়ি কেনার জন্য ঋণ নেন।

ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনলে হিসাবটা ঠিকমতো না করলে বিপদের আশঙ্কাও থাকে। বাজারদর, গাড়ির অবস্থান, কাগজপত্র—সব মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কিছু বিষয় ভালোভাবে দেখা জরুরি।

ঋণ নিয়ে গাড়ি কেনা ভুল সিদ্ধান্ত নয়। তবে সিদ্ধান্তটা হতে হবে বুঝেশুনে। আর্থিক ঝুঁকি কমাতে সময় নিন, যাচাই করুন, তারপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

এ নিয়ে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো—

১. বাজেট ঠিক করুন

নতুন ও রিকন্ডিশন্ড—দুই ধরনের গাড়ির ঋণ পাওয়া যায়। শুরুতেই আপনি যে ধরনের গাড়ি কিনতে চান, সেসব গাড়ির দাম কত টাকা তা জেনে নিন। এরপর একটি বাজেট ঠিক করুন। সেই বাজেটের কত অংশ আপনি দিতে পারবেন, বাকি কত অংশ ঋণ নিতে হবে, তা নির্ধারণ করতে হবে। সম্ভব হলে মোট দামের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিন। এতে ঋণের চাপ কমবে।

২. ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ দেয়

বর্তমানে বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বেশ কম সুদে গাড়ির ঋণ দিচ্ছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এগিয়ে আছে আইপিডিসি, আইডিএলসি ও লংকাবাংলা। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে ব্র্যাক, সিটি, ডাচ্-বাংলা ও ইস্টার্ন গাড়ি ঋণের শীর্ষে আছে। কিছু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন নিজেরাই গাড়ি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে। সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গাড়ি ঋণের বিস্তারিত জেনে নিন।

৩. সুদের হার তুলনা করে দেখুন

ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সুদের হার, সার্ভিস চার্জ ও মেয়াদ—সবকিছু তুলনা করুন। অনেক সময় কম ইএমআই দেখে আমরা খুশি হই, কিন্তু মোট ঋণ ব্যয় বেশি পড়ে যায়। তাই মোট কত টাকা পরিশোধ করতে হবে—সেটা জানাটা জরুরি।

৪. ঋণের কিস্তি সাধ্যের মধ্যে রাখতে হবে

ঋণের মাসিক কিস্তি আয় অনুযায়ী হওয়াই নিরাপদ। সাধারণভাবে আয়ের ২০-২৫ শতাংশের বেশি ইএমআই রাখা ঠিক নয়। এর বেশি হলে মাসিক খরচে চাপ পড়ে।

৫. গাড়ির বাজারদর যাচাই করুন

বাজারে গাড়ির দাম যাচাই–বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। একই মডেলের একেকজন একেক দামে বিক্রি করেন। তাই একই মডেলের গাড়ি কত দামে বিক্রি হচ্ছে, তা বিক্রয়ডটকমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের গাড়ি বেচাকেনাসংক্রান্ত বিভিন্ন পেজে যাচাই–বাছাই করা যেতে পারে। তাহলে গাড়ির দাম নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে।

৬. যান্ত্রিক পরীক্ষা করুন

গাড়ির বাইরের দিক দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন না। একজন বিশ্বস্ত মেকানিক দিয়ে ইঞ্জিনের শব্দ, স্মোক, সাসপেনশনের অবস্থা, ব্রেক ও গিয়ার পরীক্ষা করান। নতুন গাড়িতে তেমন একটা সমস্যা থাকে না, কিন্তু রিকন্ডিশন্ড বা পুরোনো গাড়িতে এসব সমস্যা থাকতে পারে। গাড়িতে এসব জায়গায় সমস্যা থাকলে পরে বড় অঙ্কের মেরামত খরচ আসে।

৭. কাগজপত্র মিলিয়ে নিন

গাড়ির সব কাগজপত্র ঠিক আছে কি না, তা দেখতে হবে। যেমন রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ট্যাক্স টোকেন ও ফিটনেস, ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বর, ইনস্যুরেন্স ইত্যাদি। কাগজে গরমিল থাকলে গাড়ি কিনতে যাওয়া উচিত নয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে এল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী তাওসিফ, শ্রুতলেখক নেওয়ার অনুমতি পায়নি
  • গলা কেটে বিড়াল হত্যা, থানায় জিডি
  • ঋণ নিয়ে গাড়ি কেনার আগে যা দেখতে হবে