সকালে উঠেই কেন যেন মনটা খারাপ হয়ে গেল আপনার? কিছুতেই মন বসাতে পারছেন না কাজে? একান্ত প্রিয় মানুষটাও রুটিন অনুযায়ী ফোন করলেন। জানালেন কুয়াশা ঘেরা শীতের শিশিরমাখা শুভেচ্ছা। মিষ্টি মুখে বাবাও মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। চুলে বিলি কাটলেন মাও।
খাপছাড়া মন
বারান্দায় বসে আছেন আপনি। একা। আনমনে কত কী যে ভাবছেন! অথচ কী ভাবছেন– তাও বুঝতে পারছেন না। এই ভাবছেন তো এই ভুলে আবার ভাবনার বেড়াজাল থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিচ্ছেন। এই ভাবছেন তো এই আবার তালগোল পাকিয়ে নিজের ওপর নিজেই তিতিবিরক্ত হচ্ছেন। এমন ঘটনা হঠাৎ উদয় হলো আপনার মনের আকাশে– তাও নয়; প্রায়ই এমন হয়। ভাবনারা এই আসে, এই আবার টুপ করে ডুব দিয়ে হারিয়ে যায় দূরে কোথাও। নাগালের বাইরে থেকে যেতে চায়। আবার ধরা দিতে দিতেও দেয় না।
উড়ালপঙ্খি মন
এমন উড়ালপঙ্খি মন শুধু আপনার নয়; সব তরুণ-তরুণীরই। এ যে মনের স্বাধীনতা! আপনি যেমন একটু স্বাধীনতা পেলে অনেক কিছু করতে পারেন, তেমনি মনও স্বাধীনতা পেলে অনেক কিছু করতে পারে। একেবারে বিপ্লব ঘটিয়ে দিতে পারেন! জানেন নিশ্চয়ই, মানুষ যত বড়ই হোক, যত ক্ষমতা পকেটে নিয়েই হাঁটুক না কেন, সে কিন্তু তার মনের লাগামটা ধরতে পারে না। পারে না নির্দেশ দিয়ে মনটাকে সোজা চালিয়ে নিয়ে যেতে। আসলে পারার কথাও না। মনটাকে সঠিক ট্র্যাকে চালাতে পারে কেবল মনই।
মনের লাগাম
মন যখন যা চায়, তাকে তা করতে দেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। নিজের হাতে মনের লাগাম না ধরে মনের হাতেই মনের লাগাম ছেড়ে দেওয়া উচিত। তবেই মন আপনাকে আপনার ভেতর থেকে বের করে মনের পিঠে ছড়িয়ে টেনে নিয়ে যাবে আপনার স্বপ্নের সোনালি গন্তব্যের দিকে।
জানি, এই সময়টা স্কুল, কলেজ কিংবা
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেকেই ছুটি পেয়েছেন। কিংবা চাইলেই ছুটি নিতে পারেন। সদ্য কাটিয়ে আসা ঈদের ছুটিতে অনেকে আবার মনের ডানায় চড়ে কত জায়গায় ঢুঁ মেরে এসেছেন এবং আসছেন প্রতিনিয়ত। কল্পনায় নয়, অনেকে বাস্তবেই দলবলে সশরীরে সগৌরবে পাড়ি দিচ্ছেন প্রকৃতির আলিঙ্গনে নিজেকে জড়াতে। এই তো সময়।
লাভের হিসাব
ব্যাংকে টাকা রাখলে যেমন মাসের পর মাস মুনাফা পাওয়া যায়, তেমন করে এখনকার সময়টা মনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে আসুন; দেখবেন, সারা বছর এই ঘোরাঘুরি, এই প্রকৃতি আপনায় ভালোবাসা বিলিয়ে যাবে। দূর করে দেবে হঠাৎ উড়ে আসা মন খারাপের সময়গুলোকে। অথবা কিছুই করতে ইচ্ছে না হলে মনকে বলে দিন– আজ আমি কিছুই করব না; কিংবা বলতে পারেন– আজ আমি কোথাও যাব না। দরকার কী সব কাজে সবার সঙ্গে তাল মেলানোর? আবার মন বলছে ঘরে বসে থাকতে। থাকুন না আনমনে ঘরে বসে!
শান্তির পরশ
আপনি যদি এই কাজে শান্তি পান, তাতে কার কী আসে যায়? একটা দিন থাকুন না না নিজের মতো করে। ভুলে যান না সব রুটির-ফুটিন! ভোরে ঘুম থেকে উঠে সন্ধ্যা পর্যন্ত যদি বারান্দায় বসে মজা লুটতে পারেন আপনি; তবে লুটে নিন প্রাকৃতিক মজা! যদি মজা না আসে তো মনটাকে একটা কাজ দিয়ে দিন।
পৃথিবী আনন্দময় হোক
আরেকটা কথা, সোশ্যাল মিডিয়ায় সবসময় নিজেকে ডুবিয়ে রাখবেন না। এতে মানসিক রোগী হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে প্রবল! যারা এর ধারক-বাহক, মানে এসব পরিচালনা করেন তারা সবাই কিন্তু নিজেকে প্রকৃতির কাছাকাছিই রাখেন। দিন শেষে প্রকৃতিই সব! u
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: মন র ল গ ম প রক ত আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
শুভ জন্মাষ্টমী আজ
অত্যাচারীর বিরুদ্ধে দুর্বলের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করতে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ—এই বিশ্বাস পোষণ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। শ্রীকৃষ্ণের এই আবির্ভাব তিথি শুভ জন্মাষ্টমী হিসেবে উদ্যাপন করা হয়।
সনাতন ধর্মের মানুষ বিশ্বাস করেন, পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। আজ শনিবার শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথি।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল শুক্রবার এক বাণীতে তিনি বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর। সমাজে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সমাজে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে শ্রীকৃষ্ণ আজীবন ন্যায়, মানবপ্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। শ্রীকৃষ্ণ যেখানেই অন্যায়-অবিচার দেখেছেন, সেখানেই অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আবহমানকাল থেকে এ দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ভরপুর বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আজ সকাল আটটায় দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় শ্রীশ্রী গীতাযজ্ঞ, বেলা তিনটায় ঐতিহাসিক কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিল ও রাতে শ্রীকৃষ্ণপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, রাজধানীর পলাশীর মোড়ে আজ বেলা তিনটায় কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিলের উদ্বোধন করবেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন ও নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. মঈন খান।