নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে নির্বাচনে আরেক ধাপ এগিয়ে গেলেন কুইন্স কাউন্টির জনপ্রিয় ডেমোক্রেটিক নেতা জোহরান মামদানি। তিনি প্রার্থিতার দৌড়ে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাথমিক নির্বাচনেও জিতেছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমোকে ৭০ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন। আগামী ৪ নভেম্বর মেয়র পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
নিউইয়র্কের দুটি শক্তিশালী শ্রমিক ইউনিয়ন ও নার্সদের বৃহৎ সংগঠন মামদানিকে সমর্থন দিয়েছে। সংগঠনগুলো হলো– হোটেল অ্যান্ড গেমিং ট্রেডস কাউন্সিল (এইচটিসি), সার্ভিস এমপ্লয়িজ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন (এসইআইইউ, ৩২বিজে) এবং নিউইয়র্ক স্টেট নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (এনওয়াইএসএনএ)। নিউইয়র্ক শহরে ৩২ বিজে এসইআইইউর ৮০ হাজার, এইচটিসির ৪০ হাজার ও এনওয়াইএসএনএর ৩০ হাজার সদস্য রয়েছে।
এসব সংগঠনের নেতারা বলছেন, ভোটে তারা গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক নেতা মামদানির পক্ষে কাজ করবেন, যিনি প্রচারণায় শ্রমিকদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছেন। নভেম্বরের নির্বাচনে বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের বিপরীতে তারা মামদানিকে বেছে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
হোটেল অ্যান্ড গেমিং ট্রেডস কাউন্সিলের সভাপতি রিচ মারোকো বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে, সদস্যদের যে কোনো সমস্যায় মামদানি আমাদের পাশে থাকবেন। এ জন্যই আমরা তাঁকে নিউইউয়র্কের মেয়র হিসেবে দেখতে চাই।’ অ্যান্ড্রু কুওমোকে সমর্থনকারী কিছু শ্রমিক নেতাও বলেছেন, শ্রমিকদের স্বার্থের পক্ষে মামদানির যেসব প্রচেষ্টা রয়েছে, তাতে আমরা কুওমোর শিবির ত্যাগ করতে রাজি আছি।
সংগঠনগুলোর সমর্থন পাওয়ার পর মামদানি বলেন, ‘শ্রমজীবী মানুষ প্রতিদিন লড়াই করে। আমি তাদের সমর্থন পেয়ে সম্মানিত। শ্রমজীবীরা সামর্থ্য অনুযায়ী চাকরি পাওয়ার যোগ্য। তাদের মর্যাদা ধরে রাখাই লড়াইয়ে আমার সমর্থন ঘোষণা করছি।’
ডেমোক্রেটিক নেতা ক্যাথি হোচুল, সিনেটর চাক শুমার, প্রতিনিধি হাতিক জেফ্রিসসহ রাজ্যের বেশির ভাগ নেতা মামদানিকে প্রকাশ্যে সমর্থন না দিলেও তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। অবশ্য প্রাইমারিতে বিজয়ের পর মেয়র অ্যাডামসের তীব্র সমালোচনার শিকার হয়েছেন মামদানি। ফক্স অ্যান্ড ফ্রেন্ডস শোতে তিনি মামদানিকে ‘সাপের তেল বিক্রেতা’ বলে নিন্দা করেন। সিএনএন উপস্থাপক ডন লেমন মেয়রকে জিজ্ঞাসা করেন, মামদানিকে তিনি ইসরায়েলবিরোধী বলে মনে করেন কিনা। মেয়র জবাবে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি তা মনে করি।’ গত বছরের অক্টোবরে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দেন মামদানি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন উইয়র ক য ক তর ষ ট র ন উইয়র ক ন ম মদ ন ম মদ ন ক
এছাড়াও পড়ুন:
এপস্টেইন–কাণ্ডে নিজেকে বাঁচাতেই কি বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করলেন ট্রাম্প
যৌন নিপীড়নকারী কুখ্যাত মার্কিন ধনকুবের জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের কী সম্পর্ক ছিল, তা নিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধানদের তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর আহ্বানের পর মার্কিন বিচার বিভাগ ক্লিনটনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
প্রয়াত এপস্টেইনের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন ক্রমেই বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে দিতেই গতকাল শুক্রবার তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধানদের প্রতি এ আহ্বান জানান বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্প বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান জে পি মরগান চেজ এবং হার্ভার্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ল্যারি সামারসের বিরুদ্ধেও বিচার বিভাগ ও এফবিআই তদন্তের দাবি করেছেন। ল্যারি সামারস ক্লিনটনের অর্থমন্ত্রী ছিলেন।
সম্প্রতি যৌন নিপীড়ন ও নারী পাচারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত এপস্টেইনের নতুন একগুচ্ছ ই-মেইল প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে একাধিকবার ট্রাম্পের নাম এসেছে। এতে ট্রাম্পের ওপর চাপ বাড়ছে।
এপস্টেইনের প্রেমিকা ম্যাক্সওয়েল অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের যৌনকাজে সম্পৃক্ত করতেন। ই-মেইলে দেখা গেছে, ট্রাম্প ওই মেয়েদের সম্পর্কে জানতেন। শুধু তাই নয়, ট্রাম্প একজন কিশোরীর সঙ্গে তাঁর নিজের বাড়িতে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন।বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন প্রকাশিত ই-মেইলগুলো এপস্টেইন পাঠিয়েছিলেন তাঁর সহযোগী ও সাবেক প্রেমিকা গিসলেইন ম্যাক্সওয়েল এবং ট্রাম্প–ঘনিষ্ঠ লেখক মাইকেল ওলফকে। প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি ওইসব ই–মেইল লিখেছিলেন।
এপস্টেইনের প্রেমিকা ম্যাক্সওয়েল অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদেরও জোরপূর্বক যৌনকাজে সম্পৃক্ত করতেন। ই–মেইলে দেখা গেছে, ট্রাম্প ওই মেয়েদের সম্পর্কে জানতেন। শুধু তাই নয়, ট্রাম্প একজন কিশোরীর সঙ্গে তাঁর নিজের বাড়িতে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন।
শিশুদের যৌন নিপীড়নের দায়ে দোষী সাব্যস্ত ও নারী পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার এপস্টেইন ২০১৯ সালের ১০ আগস্ট নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে কারাবন্দী অবস্থায় আত্মহত্যা করেন। তাঁর প্রেমিকা ম্যাক্সওয়েলের ২০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।
এপস্টেইন–কেলেঙ্কারিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অনেক ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম এসেছে।
৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্পের অভিযোগ, ডেমোক্র্যাটরা এপস্টেইন–কেলেঙ্কারিতে তাঁর নাম জড়ানোর ‘ষড়যন্ত্র’ করছে।
শুক্রবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে করে ছুটি কাটাতে ফ্লোরিডা যাওয়ার সময় ট্রাম্প উড়োজাহাজে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তাদের এটা অনেক আগেই ঘোষণা দেওয়া উচিত ছিল। বহু বছর ধরে জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে আমার খুবই খারাপ সম্পর্ক ছিল।’
নথিতে দেখা যাচ্ছে, এই ব্যক্তিরা এবং আরও অনেকে তাঁদের জীবনের একটি বড় অংশ এপস্টেইনের সঙ্গে তাঁর দ্বীপে কাটিয়েছেন।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্টএ বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্পকে বারবার এপস্টেইনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে।
২০১৯ সালে এপস্টেইনের বিরুদ্ধে যৌনকর্মে নারী পাচারের অভিযোগে হওয়া মামলার বিচার প্রস্তুতি চলছিল। তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিউইয়র্কের একটি কারাগারে রাখা হয়েছিল। কারাগারে নিজের কক্ষ থেকে পরে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এপস্টেইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এমন একটি যৌন চক্র চালাতেন, যেখানে কিশোরী মেয়েদের যৌনকর্মের জন্য সমাজের ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে পাঠানো হতো।
আরও পড়ুনজেফরি এপস্টেইনের ব্যক্তিগত ইমেইলে একাধিকবার ট্রাম্পের নাম১২ নভেম্বর ২০২৫ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি ও এফবিআইকে জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে বিল ক্লিনটন, ল্যারি সামারস, রেইড হফম্যান, জে পি মরগ্যান চেজ এবং আরও অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক ও জড়িত থাকার বিষয়টি তদন্ত করার জন্য অনুরোধ করবেন।
ট্রাম্প আরও লিখেছেন, ‘নথিতে দেখা যাচ্ছে, এই ব্যক্তিরা এবং আরও অনেকে তাঁদের জীবনের একটি বড় অংশ এপস্টেইনের সঙ্গে তাঁর দ্বীপে কাটিয়েছেন।’
আরও পড়ুনএকই নারীর সঙ্গে ট্রাম্প ও যৌন নিপীড়ক এপস্টেইনের সম্পর্ক ছিল১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫