জোড়া গোলে মেসির রেকর্ড, বড় জয় মায়ামির
Published: 10th, July 2025 GMT
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর আবারও চেনা ছন্দে ফিরেছেন লিওনেল মেসি। মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) দুর্দান্ত ফর্মে আছেন এই আর্জেন্টাইন মহাতারকা। বৃহস্পতিবার ম্যাসাচুসেটসের জিলেট স্টেডিয়ামে নিউ ইংল্যান্ড রেভলুশনের বিপক্ষে ইন্টার মায়ামির ২-১ গোলের জয়ে জোড়া গোল করে গড়েছেন ইতিহাস।
৩৮ বছর বয়সী মেসি এখন এমএলএস ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড়, যিনি টানা চার ম্যাচে করেছেন একাধিক গোল। অর্থাৎ চার ম্যাচে করেছেন ঠিক আটটি গোল! ১৯৯৬ সালে শুরু হওয়া এমএলএসের ইতিহাসে আগে এমন কিছু কখনও দেখা যায়নি।
মেসির গোল উৎসব শুরু হয়েছিল মে মাসের শেষে, মন্ট্রিয়ালের বিপক্ষে ৪-২ গোলের জয়ে। এরপর কলম্বাসের বিপক্ষে ৫-১ ব্যবধানে জয় পাওয়া ম্যাচেও জোড়া গোল করেছিলেন। এরপর ক্লাব বিশ্বকাপের কারণে কিছুদিন বিরতি। বিশ্বকাপে চার ম্যাচে মাত্র এক গোল করলেও ফিরে এসেই আবারও এমএলএসে জ্বলে উঠেছেন তিনি।
ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে ফিরে ফের মন্ট্রিয়ালের বিপক্ষে মাঠে নামেন মেসি। সে ম্যাচে ৪-১ গোলের জয়ে আরও দুটি গোল করে ইতিহাস গড়ার মঞ্চ তৈরি করেন। আর সর্বশেষ নিউ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জোড়া গোল করে গড়লেন অনন্য এক রেকর্ড।
জিলেট স্টেডিয়ামে ম্যাচের ২৭ মিনিটে প্রতিপক্ষের ডিফেন্সের ভুলের সুযোগ নিয়ে বাঁ পায়ের শটে গোল করেন মেসি। ১১ মিনিট পর সার্জিও বুসকেটসের দুর্দান্ত লং পাস থেকে গতিময় দৌড়ে গিয়ে বাঁ পায়ের বাঁকানো শটে দ্বিতীয়বারের মতো পরাস্ত করেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক আলিয়াজ ইভাচিচকে।
এ ম্যাচে মায়ামির জয়ের পেছনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন গোলরক্ষক অস্কার উস্তারি। ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সেভ করেন তিনি। তবে ৭৯ মিনিটে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার কার্লেস গিল তার বাঁধা ভেঙে একটি গোল শোধ করেন। তাদেও অ্যালেনদের কাছ থেকে বল কাড়ার পর দুর্দান্ত শটে ব্যবধান কমান গিল।
এই জয়ে পূর্বাঞ্চলীয় কনফারেন্সের পয়েন্ট তালিকায় ছয় থেকে পাঁচ নম্বরে উঠে এসেছে ইন্টার মায়ামি। তাদের পয়েন্ট এখন ৩৫, শীর্ষে থাকা এফসি সিনসিনাতির চেয়ে ৭ পয়েন্ট কম। তবে ক্লাব বিশ্বকাপ অংশগ্রহণের কারণে এখন পর্যন্ত তিনটি ম্যাচ কম খেলেছে মায়ামি।
চলতি এমএলএস মৌসুমে এখন পর্যন্ত ১৫ ম্যাচে মেসির গোল ১৪টি। লিগের শীর্ষ গোলদাতা স্যাম সারিজের চেয়ে মাত্র দুই গোল পিছিয়ে আছেন তিনি, যদিও সারিজ খেলেছেন ছয় ম্যাচ বেশি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইন ট র ম য ম ক ল ব ব শ বক প গ ল কর
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনা
প্রাণঘাতী রোগ ক্যানসারের বিরুদ্ধে দেহে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম ‘সুপার ভ্যাকসিন’ তৈরি করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয় অ্যামহার্স্টের বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে নিজেদের তৈরি টিকার কার্যকারিতা ইঁদুরের শরীরে পরীক্ষা করেছেন তাঁরা। গবেষণায় টিকাটি ইঁদুরের শরীরে ত্বকের (মেলানোমা), অগ্ন্যাশয় ও স্তন ক্যানসারের মতো প্রাণঘাতী ক্যানসার প্রতিরোধে আশাব্যঞ্জক ফল দিয়েছে। আর তাই ভবিষ্যতে মানবদেহেও টিকাটি কার্যকর হতে পারে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, সুপার ভ্যাকসিনে রয়েছে চর্বিজাত অণু দিয়ে তৈরি ন্যানো কণা। এই ন্যানো কণা শরীরে পৌঁছে দেয় দুটি ‘অ্যাডজুভ্যান্ট’ নামের উপাদান, যা দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, টিকা দেওয়া ৮৮ শতাংশ ইঁদুরের শরীরে কোনো টিউমার তৈরি হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে ইঁদুরের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়াও পুরোপুরি বন্ধ হয়েছে। টিকাটি মানবদেহে প্রয়োগ শুরুর আগে আরও কয়েকটি ধাপে গবেষণা করতে হবে।
গবেষণার সময় প্রথমে ন্যানো কণাকে একধরনের অ্যান্টিজেনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়, যা দেহে ক্যানসারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এরপর ইঁদুরের শরীরে টিকা প্রয়োগের পর তাদের মেলানোমা কোষের সংস্পর্শে আনা হয়। এটি এমন একধরনের ক্যানসার, যা শরীরের যেকোনো অঙ্গে দ্রুত ছড়িয়ে যেতে পারে। যেসব ইঁদুরকে ন্যানো কণাভিত্তিক টিকা দেওয়া হয়েছিল, তাদের ৮০ শতাংশই ২৫০ দিন পর্যন্ত টিউমারমুক্ত ছিল। অন্যদিকে প্রচলিত টিকা দেওয়া বা টিকা না দেওয়া সব ইঁদুর ৩৫ দিনের মধ্যেই ক্যানসারে মারা যায়।
গবেষণায় নতুন এই টিকা ফুসফুসে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়াও সম্পূর্ণভাবে ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে। আর তাই বিজ্ঞানীরা টিকার আরেকটি সংস্করণ তৈরি করেছেন, যেখানে ন্যানো কণার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে ‘টিউমার লাইসেট’ নামের অ্যান্টিজেন। এরপর ইঁদুরের শরীরে মেলানোমা, স্তন ক্যানসার ও অগ্ন্যাশয় ক্যানসারের (পিডিএসি) কোষ প্রবেশ করানো হয়। দেখা গেছে, অগ্ন্যাশয় ক্যানসারে আক্রান্ত ৮৮ শতাংশ, স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত ৭৫ শতাংশ ও মেলানোমায় আক্রান্ত ৬৯ শতাংশ ইঁদুরের শরীরে কোনো টিউমার তৈরি হয়নি।
বিজ্ঞানীদের দাবি, এই টিকার মাধ্যমে একাধিক ধরনের ক্যানসার প্রতিরোধ করা যেতে পারে। তবে টিকাটি বর্তমানে প্রাথমিক গবেষণা পর্যায়ে রয়েছে। গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানী গ্রিফিন কেইন বলেন, ‘আমাদের পাওয়া ফল অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। আমরা এখন পরবর্তী ধাপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে প্রাণী থেকে মানবদেহে এমন চিকিৎসা প্রয়োগের প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ ও জটিল।’
সূত্র: ডেইলি মেইল