ওষুধ চুরিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ, প্রতিবাদে কালিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে মানববন্ধন
Published: 13th, July 2025 GMT
নড়াইলের কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওষুধ চুরিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে মানববন্ধন হয়েছে। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ মানববন্ধন হয়।
‘ভুক্তভোগী সাধারণ জনগণ’ ব্যানারে হওয়া এই মানববন্ধনে বক্তব্য দেন কালিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক স ম ওয়াহিদুজ্জামান, পৌর বিএনপির সভাপতি শেখ সেলিম হোসেন, পৌর বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব শেখ মনিরুজ্জামান, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক স ম রাকিবুজ্জামান, স্থানীয় বাসিন্দা ইমরান হোসেন, রবিউল সর্দার প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মরত কয়েকজন কর্মচারী অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির সঙ্গে জড়িত। তাঁরা কৌশলে হাসপাতাল থেকে দামি ওষুধ চুরি করে নিয়ে যান। আর সাধারণ রোগীরা এসে ঠিকমতো ওষুধ পান না। গতকাল হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ের এক কর্মী ওষুধ চুরি করতে গিয়ে স্থানীয় এক সাংবাদিকের কাছে ধরা পড়েন। এ ছাড়া কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে দীর্ঘদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধের টেন্ডার হয় না। যার ফলে জনগণ ওষুধসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সম্প্রতি অনিয়মের মাধ্যমে জনপ্রতি দুই লাখ টাকা নিয়ে আউটসোর্সিংয়ে আটজন কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ইমরান হোসেন বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে অস্ত্রোপচারের জন্য এই হাসপাতালে এনেছিলাম। সেখানে কর্মচারীরা অতিরিক্ত দুই হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। সিজার করতে আসা প্রত্যেক রোগীর সঙ্গে একই কাজ করে।’
মানববন্ধনে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক স ম ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘এসব ব্যাপারে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আশা করি, আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন করার আগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেবে। আর আউটসোর্সিংয়ে যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, পুনরায় সেসব পদে যাচাই-বাছাই করে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শোয়াইব বলেন, তিনি যোগদানের আগে দীর্ঘদিন ধরে তাঁর পদে কোনো কর্মকর্তা ছিলেন না। এ কারণে অফিসের কর্মীদের বেতন, ওষুধের টেন্ডারসহ অর্থনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়নি ওই সময়। যোগদানের পর খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ওই টেন্ডারের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। পরে নিয়মানুযায়ী অন্য প্রক্রিয়ায় ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। এখন পর্যাপ্ত ওষুধ আছে। আর আউটসোর্সিংয়ের কর্মী নিয়োগ সিভিল সার্জন অফিস থেকে। এখানে তাঁর কোনো হাত নেই।
ওষুধ চুরির ব্যাপারে মোহাম্মদ শোয়াইব বলেন, ‘বিষয়টি খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত। এটি তদন্ত করে দেখা হবে। আর আজ থেকে আমাদের স্টাফদের ওষুধ দেওয়া আপাতত বন্ধ করা হয়েছে। কারও প্রয়োজন হলে যাচাই-বাছাই করে তাঁকে পরিমাণমতো ওষুধ দেওয়া হবে। এ ছাড়া অন্যান্য অভিযোগের তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগের বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ব স থ য কমপ ল ক স র ব এনপ র স আউটস র স র কর ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুনর্গঠন: রাষ্ট্র মেরামতের কেন্দ্রে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা
দক্ষিণ বাংলাদেশের ঝালকাঠি জেলার এক গ্রামে ৫২ বছর বয়সী আবদুল করিম কয়েক দিন ধরে দুর্বলতা, মাথা ঘোরা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা হেঁটে তিনি পৌঁছালেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখলেন—লম্বা লাইন, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ নেই, ল্যাব বন্ধ। বলা হলো, ‘আগামীকাল আসুন।’
সেই রাতে করিমের অবস্থা আরও খারাপ হয়। বাধ্য হয়ে পরিবার তাঁকে দূরের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। যাত্রা ছিল কষ্টকর, ব্যয়বহুল, আর চিকিৎসাও করিমের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। চিকিৎসা শেষে তিনি শুধু হতাশই নন, বরং চিন্তিত। কারণ, চিকিৎসার এই খরচ মেটাতে তাঁর পরিবারকে ধার করতে হয়েছে প্রতিবেশীর কাছ থেকে।
আবদুল করিমের এই কষ্ট একার নয়; এটি বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার গভীর সংকটের প্রতিচ্ছবি। গ্রামাঞ্চল হোক বা শহরের বস্তি, কোথাও কার্যকর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নেই। অনেক জায়গায় সেবাকেন্দ্র আছে, কিন্তু জনবল নেই, ওষুধ নেই, সেবার মান নেই।
দীর্ঘদিনের খণ্ডিত বিনিয়োগ, শহরমুখী ও হাসপাতালনির্ভর প্রবণতা এবং সামগ্রিক বৈষম্যের ফলে স্বাস্থ্যব্যবস্থা হয়ে উঠেছে দুর্বল ও অকার্যকর। কোভিড-১৯ মহামারি এই দুর্বলতাগুলো স্পষ্ট করে দিয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের কোটি মানুষ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার নিরাপত্তা থেকে বঞ্চিত। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামতের এজেন্ডা উপস্থাপন করছে এক যুগান্তকারী রূপরেখা, যার মূল কেন্দ্রবিন্দু প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা।
দুর্বল ও খণ্ডিত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাবাংলাদেশে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এখনো দুর্বল, খণ্ডিত এবং অসমভাবে বিতরণকৃত। ‘সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা’ সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি হলেও, আজও দেশব্যাপী কার্যকর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠেনি। গ্রামীণ এলাকায় কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে, কিন্তু সেখানে পর্যাপ্ত জনবল, ওষুধ, লজিস্টিক ও রেফারেল ব্যবস্থা নেই। অপর দিকে শহরাঞ্চলে, যেখানে এখন প্রায় অর্ধেক মানুষ বাস করে, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যত অনুপস্থিত। ফলে নিম্ন আয়ের নাগরিকেরা বাধ্য হচ্ছেন অপরিকল্পিত প্রাইভেট ক্লিনিক বা ওষুধের দোকানে নির্ভর করতে।
দীর্ঘদিন ধরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দুর্বল থেকেছে জবাবদিহির অভাব, নীতিনির্ধারণে অব্যবস্থাপনা এবং শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকারের ব্যাপক দুর্নীতির কারণে। জনগণের অর্থে নির্মিত স্বাস্থ্যব্যবস্থা ধীরে ধীরে পরিণত হয়েছে এক লুটপাটের কেন্দ্রে, যেখানে প্রকৃত সেবার চেয়ে দলীয় নিয়ন্ত্রণ ও কমিশন–বাণিজ্যই মুখ্য হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, একটি সুস্পষ্ট কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির অভাব। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা যে একটি কার্যকর ও ন্যায়ভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার ভিত্তি, সেই মৌলিক উপলব্ধিই শাসকগোষ্ঠীর নীতিতে প্রতিফলিত হয়নি।
এর ফলে প্রতিরোধযোগ্য রোগে অসুস্থতা ও মৃত্যুহার বেড়েছে এবং নিজের পকেট থেকে স্বাস্থ্য ব্যয় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে অবস্থান করছে। এই খণ্ডিত ও দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবস্থা দেশের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য এবং জরুরি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনাকেও মারাত্মকভাবে দুর্বল করে দিয়েছে।
নতুন প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা মডেলবিএনপির সংস্কার এজেন্ডার মূল প্রতিশ্রুতি হলো প্রতিটি ইউনিয়নে ও প্রতিটি পৌর ওয়ার্ডে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ইউনিট (PHCU) স্থাপন। এটি হবে নতুন জাতীয় স্বাস্থ্য কাঠামোর প্রথম সারির কেন্দ্র। এই ইউনিটগুলো ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে, থাকবে একটি মিনি ল্যাব, প্রাথমিক রোগনির্ণয়ের সরঞ্জাম এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ওষুধ সরবরাহকারী ফার্মেসি। প্রতিটি ইউনিট জনগণকে প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা ও পুনর্বাসনমূলক সেবা দেবে, যা হবে নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবার প্রথম প্রবেশদ্বার।
প্রতিটি ইউনিটের সঙ্গে যুক্ত থাকবে তিনটি স্যাটেলাইট হেলথ হাব, যেখানে তিনজন করে কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মী পরিবারভিত্তিক সেবা দেবেন। এসব হাব অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, শিশু পুষ্টি উন্নয়ন ও স্বাস্থ্য প্রচারণায় কাজ করবে। রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও অপুষ্টি দ্রুত শনাক্তকরণ এবং জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে জনগণকে সুস্থ রাখা ও হাসপাতালে চাপ কমানোই এর লক্ষ্য।
মানসিক স্বাস্থ্য ও প্রবীণ সেবার একীকরণনতুন প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো শুধু সংক্রামক ও দীর্ঘস্থায়ী রোগের বিরুদ্ধে লড়বে না; বরং দুটি দীর্ঘদিন উপেক্ষিত মানসিক স্বাস্থ্য ও প্রবীণবান্ধব সেবা বিষয়ে গুরুত্ব দেবে। সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা যায়, বাংলাদেশের প্রায় ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি মানসিক রোগে আক্রান্ত, কিন্তু তাঁদের মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ চিকিৎসা পান। তা ছাড়া ৮০ শতাংশ প্রবীণ ব্যক্তি উদ্বেগ বা বিষণ্নতায় ভুগছেন, অনেকের রয়েছে একাধিক শারীরিক সমস্যা।
নতুন মডেলে প্রতিটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ইউনিটে মানসিক স্বাস্থ্য স্ক্রিনিং, কাউন্সেলিং ও জনসচেতনতা কার্যক্রম থাকবে। প্রবীণ জনগোষ্ঠী, যারা এখন দেশের ৯-১০ শতাংশ, তাদের জন্য থাকবে সহজপ্রাপ্য, ধারাবাহিক ও মর্যাদাপূর্ণ সেবা। এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো মানসিক ও প্রবীণ স্বাস্থ্যসেবা কমিউনিটি পর্যায়েই নিশ্চিত করা, যাতে হাসপাতালের ওপর অতিরিক্ত চাপ না পড়ে।
দক্ষতা, গুণগত মান ও জবাবদিহির জন্য ডিজিটাল রূপান্তরপ্রতিটি নাগরিকের জন্য চালু করা হবে ইলেকট্রনিক হেলথ কার্ড, যা হবে একীভূত রেফারেল ও পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের অংশ। এই কার্ডের মাধ্যমে রোগীর তথ্য নিরাপদভাবে সংরক্ষণ ও শেয়ার করা যাবে, যা চিকিৎসা, রোগনির্ণয় ও ফলোআপ প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করবে। যদি কোনো প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ইউনিট চিকিৎসা দিতে না পারে, রোগীকে ইলেকট্রনিকভাবে পরবর্তী স্তরে পাঠানো হবে। এই রেফারেলভিত্তিক ব্যবস্থা হাসপাতালের অপ্রয়োজনীয় ভিড় কমাবে, ব্যয় হ্রাস করবে এবং সার্বিক দক্ষতা বৃদ্ধি করবে। জরুরি অবস্থা ছাড়া কেউ এই রেফারেল পদ্ধতি বাইপাস করতে পারবে না। ফলে জটিল রোগীদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল সংরক্ষিত থাকবে, আর সাধারণ সেবা পাওয়া যাবে স্থানীয় পর্যায়েই।
ন্যায়, দক্ষতা ও বিকেন্দ্রীকরণএই প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রিক ভিশন কেবল একটি স্বাস্থ্যনীতি নয়, এটি একটি সামাজিক চুক্তি। এটি বিএনপির বৃহত্তর রাষ্ট্র মেরামতের এজেন্ডার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এর মাধ্যমে প্রতিটি নাগরিকের জন্য মৌলিক সেবা নিশ্চিত করা হবে, স্থানীয় প্রশাসনকে ক্ষমতায়ন করা হবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ হবে বিকেন্দ্রীকৃতভাবে।
স্থানীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ইউনিটগুলোকে দেওয়া হবে সীমিত প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বায়ত্তশাসন, যাতে তারা নিজস্বভাবে ছোটখাটো সরঞ্জাম কিনতে, ওষুধ মজুত রাখতে ও অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারে। এতে সেবার গুণগত মান বাড়বে, সমস্যা সমাধান দ্রুত হবে এবং জবাবদিহি নিশ্চিত হবে।
একই সঙ্গে, চিকিৎসায় অবহেলা ও গাফিলতি রোধে প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কার আনা হবে। বছরের পর বছর ধরে ফ্যাসিবাদী শাসনের অধীনে জনগণের আস্থা যে ভেঙে পড়েছে, সেই আস্থা পুনরুদ্ধারে এটি হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। চিকিৎসাব্যবস্থায় জবাবদিহি, স্বচ্ছতা ও ন্যায়ের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করলেই জনগণ আবার বিশ্বাস ফিরে পাবে—যে স্বাস্থ্যসেবা তাদের অধিকার, অনুগ্রহ নয়।
একটি সুস্থ ও ন্যায্য বাংলাদেশের পথেবিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক লক্ষ্য একটি বিশ্বাসের ওপর দাঁড়ানো, ‘কোনো মানুষ যেন চিকিৎসা ছাড়া মারা না যায়’। এটি কেবল রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নয়; এটি মর্যাদা, ন্যায় ও মানবিকতার প্রতীক। দেশব্যাপী প্রযুক্তিনির্ভর, উদ্ভাবনী ও কমিউনিটি-ভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে বাংলাদেশকে একটি প্রতিরোধমূলক ও মানুষকেন্দ্রিক স্বাস্থ্যব্যবস্থায় রূপান্তর করা সম্ভব। এই রূপান্তর শুধু স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে উন্নত করবে না; বরং চাকরি সৃষ্টি, স্বাস্থ্য পণ্যের স্থানীয় উৎপাদন এবং গ্রামীণ উদ্যোক্তা উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনীতিকেও শক্তিশালী করবে।
শেষ কথাএকটি সুস্থ বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে হাসপাতাল থেকে নয়, বরং প্রতিটি গ্রাম, ওয়ার্ড ও কমিউনিটি থেকে, যেখানে মানুষ বাস করে এবং স্বপ্ন দেখে। বিএনপির প্রস্তাবিত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বিপ্লব, ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামতের এজেন্ডার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জন ও জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারের এক বাস্তব ও দূরদর্শী রূপরেখা উপস্থাপন করছে।
ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, বিশ্বব্যাংকের সাবেক স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ
*মতামত লেখকের নিজস্ব