দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো অনিশ্চয়তা দেখছেন না সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচনের কোনো অনিশ্চয়তা দেখছি না, নির্বাচন ক্রমান্বয়ে অনিবার্য ঘটনায় পরিণত হচ্ছে।’

আজ বুধবার দুপুরে বরিশালে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের প্রাক্‌-নির্বাচনী আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় এ কথা বলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এদিন সকালে বরিশাল নগরের বান্দরোডের একটি হোটেলে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ও প্রত্যাশা পূরণের পদ্ধতি নিয়ে এই নাগরিক সংলাপের আয়োজন করা হয়।

সংলাপে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা নির্বাচনকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখতে চাই। এ লক্ষ্যে সংস্কারের ধারা অব্যাহত থাকুক এবং যে দলগুলো প্রতিশ্রুতি দেবে, সেই প্রতিশ্রুতি তাদের রক্ষা করতে হবে। মানুষ কথা বলবে, নেতাদের তা শুনতে হবে। সে জন্য আমাদের কথাগুলো আমাদের বলতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নারীর বিষয়ে কী চাই, শিশুদের বিষয়ে কী চাই; শিক্ষা-স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, সামাজিক নিরাপত্তা, সুশাসনের বিষয়ে আঞ্চলিক পর্যায়ে আমাদের ভাবনা তুলে ধরতেই এ আয়োজন। ইতিমধ্যে রাজশাহীতে তিস্তা ও ফারাক্কা নিয়ে প্রভাব সংলাপে উঠে এসেছে। আপনাদের এখানকার বিশেষ সমস্যা রাজনৈতিক দলের ম্যানিফেস্টোতে যাতে উঠে আসে, সে কারণেই এই সংলাপ।’

বিগত সময়ের দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘ব্যবসায়ী, আমলা, রাজনীতিবিদদের ত্রিধারা দেশে অলিগার্ক সৃষ্টি করেছিল। এটা এমন একটি অর্থনীতি সৃষ্টি করেছিল, যাকে আমরা অভিহিত করি চামচা পুঁজিবাদ। সেখানে রাষ্ট্রতন্ত্র ব্যবহার করে চোরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সংস্কার দিয়ে চোরতন্ত্রকে ভাঙতে হবে। আমাদের এমন ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে কেউ পেছনে না থাকে। কাউকে যদি পেছনে রাখি, সে–ও আমাদের পেছনে রাখবে।’

বরিশালে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের মতবিনিময় সভায় আগত অতিথি ও আলোচকরা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

নোয়াখালীতে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ

নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট ও সদরের আংশিক) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন দলের একটি পক্ষের নেতা–কর্মীরা। বিএনপির কেন্দ্রীয় পল্লি উন্নয়ন সম্পাদক বজলুল করিম চৌধুরীর সমর্থকেরা আজ বুধবার বিকেলে কবিরহাট উপজেলার কবিরহাট বাজারে এ কর্মসূচি পালন করেন।

কর্মসূচি ঘিরে ওই আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী ফখরুল ইসলামের সমর্থকদের কেউ কেউ কবিরহাট বাজারে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করলেও জ্যেষ্ঠ নেতাদের হস্তক্ষেপে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয়ভাবে নোয়াখালী-৫ আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ব্যবসায়ী মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের নাম ঘোষণা করা হয়। তিনি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য ছিলেন। এরপর প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে একাধিকবার বিক্ষোভ সমাবেশ করেন বজলুল করিম চৌধুরীর অনুসারীরা।

আজ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বজলুল করিমের অনুসারীরা কবিরহাট সরকারি কলেজের সামনে থেকে দলীয় প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি কবিরহাট বাজারের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জিরো পয়েন্টে এসে শেষ হয়। সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তব্য দেন কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরফাত হোসেন, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হানিফসহ স্থানীয় কয়েকজন নেতা। বক্তারা অবিলম্বে নোয়াখালী-৫ আসনে দলীয় প্রার্থী পরিবর্তন করে বজলুল করিম চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান। অন্যথায় আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

জানতে চাইলে বিএনপি নেতা বজলুল করিম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ছাত্রজীবন থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। দল করতে গিয়ে অনেক হামলা–মামলা, জেল–জুলুমের শিকার হয়েছেন। কিন্তু যাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে, বিএনপির রাজনীতিতে তাঁর কোনো অবদান নেই। এ কারণে দলের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে কর্মসূচি পালন করেছেন।

জানতে চাইলে কবিরহাট পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক মুস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা ধানের শীষের সমর্থনে ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন। দল যাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে, আমরা সবাই তাঁর পক্ষে রয়েছি। কিছু লোক কর্মসূচি পালন করেছেন, যার সঙ্গে সাংগঠনিকভাবে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ