ইংল্যান্ডের দরকার ৩৫ রান, ভারতের ৪ উইকেট। আজ ওভালে জয় হাতছানি দিচ্ছে দুই দলকেই।

ভারতের জন্য সুবিধা হচ্ছে বোলাররা রাতে বিশ্রাম নিয়ে নতুনভাবে বোলিং শুরু করতে পারবেন। পিচের আর্দ্রতা কাজে লাগানোরও সুযোগ আছে। ৩৫ রান যত কমই মনে হোক, টেস্ট ক্রিকেটে শেষ দিকের ব্যাটসম্যানদের জন্য এক, দুই করে রান তোলা সহজ কিছু নয়।

তবে আশাবাদী হওয়ার উপাদান অনেক থাকলেও ভারতের অস্বস্তিও কম নয়। বিশেষ করে হেভি রোলারের ব্যবহার। আজ ম্যাচের শেষ দিনে হেভি রোলার যে বড় ভূমিকা রাখতে পারে, সেটি গতকাল ভারতীয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলেই বলেছেন। একই বিষয়ে প্রশ্ন হয়েছে দুই দলের সংবাদ সম্মেলনেও।

অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফির পঞ্চম ও সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটি শেষ হয়ে যেতে পারত গতকাল ওভাল টেস্টের চতুর্থ দিনই। কিন্তু প্রথমে আলোকস্বল্পতা, এরপর বৃষ্টির কারণে খেলা শেষ করা যায়নি।

দিন শেষে হার্শা ভোগলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘আমি খুশি যে অনেকে প্রশ্ন করছে, কেন কাভারগুলো সময়মতো সরানো হয়নি। এতে আমরা একটি অসাধারণ সমাপ্তি দেখতে পেতাম। এখন আমাদের আগামীকাল (আজ) ফিরে আসতে হবে। কিন্তু হেভি রোলার ব্যবহার করা যাবে, যা গেম চেঞ্জার হয়ে উঠতে পারে।’

হেভি রোলার আসলে কী?

হেভি রোলার একটি ভারী যন্ত্র। সাধারণত এর ওজন এক টনের বেশি হয়ে থাকে। লাইট বা হালকা রোলার ৫০০ কেজি থেকে ১ টনের হয়ে থাকে। এটি কয়েক ধরনের কাজ করে। যেমন পিচ সমতল করা। পিচে ফাটল বা অমসৃণ অংশ থাকলে হেভি রোলার সেগুলো চেপে সমান করে দেয়। ফলে বলের অনিয়মিত বাউন্স কমে যায়। ভারী রোলারে পিচ শক্তও হয়। সে ক্ষেত্রে রোলারের চাপে পিচের মাটি আরও সংকুচিত হয়, বল দ্রুত গতিতে এবং সমতলে আসে। পেসারদের জন্য এটা সুবিধাজনক হলেও স্পিনাররা টার্ন কম পান। এ ছাড়া হেভি রোলারের আরেক সুবিধা হচ্ছে পিচে ভোরের শিশির বা আর্দ্রতা থাকে, সেটি কমিয়ে দেয়। ফলে বলের সুইং কমে যায়।

কীভাবে ব্যবহার করতে হয়?

আইসিসি ক্রিকেট মাঠে রোলার ব্যবহারের নির্দিষ্ট সময় ও নিয়ম নির্ধারণ করে দিয়েছে। টেস্টে প্রতিদিন খেলা শুরুর আগে রোলার ব্যবহার করা যায়। ম্যাচের দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ ইনিংসের আগেও ব্যবহার করা যায়। দিনের শুরুতে হলে রোলার ব্যবহার করতে হয় খেলা শুরুর ৩০ মিনিটের মধ্যে, আবার শেষ ১০ মিনিটের আগেই শেষ করতে হয়। সর্বোচ্চ ৭ মিনিট ব্যবহার করা যায়।

ভারী রোলারের সুবিধা কী?

আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাটিং দলের অধিনায়ক ম্যাচের প্রথম ইনিংস বাদে প্রতিদিন খেলা শুরুর আগে সর্বোচ্চ ৭ মিনিট পিচ রোল করার অনুরোধ করতে পারেন। রোলিং খেলা শুরুর ৩০ মিনিটের মধ্যে শুরু করতে হবে। তবে অধিনায়ক এটি ১০ মিনিটের মতো দেরি করতে পারেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, রোলারের ধরন (হেভি বা লাইট) ব্যাটিং দলের পছন্দের ওপর নির্ভর করে। এই ক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক পোপ যদি আজ হেভি রোলার বেছে নেন, তাহলে পিচের অমসৃণতা কমে সমতল হয়ে ব্যাটিংয়ের অনুকূলে চলে আসবে। এটি অল্প সময়ের জন্য হলেও ওভালে ইংল্যান্ডের বাকি ৩৫ রান তুলতে সহায়ক হতে পারে।

ভারতের দুশ্চিন্তার কারণ

রোলার ব্যবহার হবে কি না, হলে ভারী না হালকা—এই সিদ্ধান্তটি নেওয়ার ক্ষমতা ব্যাটিং দলের অধিনায়কের। অর্থাৎ, ওলি পোপই রোলারের সিদ্ধান্ত নেবেন। আর সেটি যে পোপ নেবেনই, তা সহজেই বোধগম্য।

গতকাল ইংল্যান্ডের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা জো রুটও সেটা নিশ্চিত করেছেন, ‘রোলার এই ম্যাচে এরই মধ্যে প্রভাব ফেলেছে। পঞ্চম দিনেও যদি হেভি রোলার ব্যবহার করা হয়, আশা করি সেটা আমাদের পক্ষে কাজ করবে এবং পিচকে আরও সমতল করে তুলবে।’

ভারতের বোলিং কোচ মরনে মরকেল অবশ্য রোলারের ভূমিকা নিয়ে সরাসরি কিছু বলেননি। ইংল্যান্ড পঞ্চম দিনের খেলা শুরুর আগে রোলার ব্যবহার করতে পারে, এমন সম্ভাবনা নিয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু সঠিক জায়গায় বল ফেলার দিকে ফোকাস করব যেন আবারও কিছুটা হলেও উত্তেজনা তৈরি করা যায়।’

সিরিজের প্রথম চার টেস্ট শেষে ইংল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে। আজ ইংল্যান্ড ৩৫ রান নিতে পারলে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতবে, আর ভারত ৪ উইকেট নিতে পারলে ২-২ সমতা নিয়ে দেশে ফিরতে পারবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ল র ব যবহ র কর ৩৫ র ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ভারী রোলারে কী হয়, ভারত কেন চিন্তিত

ইংল্যান্ডের দরকার ৩৫ রান, ভারতের ৪ উইকেট। আজ ওভালে জয় হাতছানি দিচ্ছে দুই দলকেই।

ভারতের জন্য সুবিধা হচ্ছে বোলাররা রাতে বিশ্রাম নিয়ে নতুনভাবে বোলিং শুরু করতে পারবেন। পিচের আর্দ্রতা কাজে লাগানোরও সুযোগ আছে। ৩৫ রান যত কমই মনে হোক, টেস্ট ক্রিকেটে শেষ দিকের ব্যাটসম্যানদের জন্য এক, দুই করে রান তোলা সহজ কিছু নয়।

তবে আশাবাদী হওয়ার উপাদান অনেক থাকলেও ভারতের অস্বস্তিও কম নয়। বিশেষ করে হেভি রোলারের ব্যবহার। আজ ম্যাচের শেষ দিনে হেভি রোলার যে বড় ভূমিকা রাখতে পারে, সেটি গতকাল ভারতীয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলেই বলেছেন। একই বিষয়ে প্রশ্ন হয়েছে দুই দলের সংবাদ সম্মেলনেও।

অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফির পঞ্চম ও সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটি শেষ হয়ে যেতে পারত গতকাল ওভাল টেস্টের চতুর্থ দিনই। কিন্তু প্রথমে আলোকস্বল্পতা, এরপর বৃষ্টির কারণে খেলা শেষ করা যায়নি।

দিন শেষে হার্শা ভোগলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘আমি খুশি যে অনেকে প্রশ্ন করছে, কেন কাভারগুলো সময়মতো সরানো হয়নি। এতে আমরা একটি অসাধারণ সমাপ্তি দেখতে পেতাম। এখন আমাদের আগামীকাল (আজ) ফিরে আসতে হবে। কিন্তু হেভি রোলার ব্যবহার করা যাবে, যা গেম চেঞ্জার হয়ে উঠতে পারে।’

হেভি রোলার আসলে কী?

হেভি রোলার একটি ভারী যন্ত্র। সাধারণত এর ওজন এক টনের বেশি হয়ে থাকে। লাইট বা হালকা রোলার ৫০০ কেজি থেকে ১ টনের হয়ে থাকে। এটি কয়েক ধরনের কাজ করে। যেমন পিচ সমতল করা। পিচে ফাটল বা অমসৃণ অংশ থাকলে হেভি রোলার সেগুলো চেপে সমান করে দেয়। ফলে বলের অনিয়মিত বাউন্স কমে যায়। ভারী রোলারে পিচ শক্তও হয়। সে ক্ষেত্রে রোলারের চাপে পিচের মাটি আরও সংকুচিত হয়, বল দ্রুত গতিতে এবং সমতলে আসে। পেসারদের জন্য এটা সুবিধাজনক হলেও স্পিনাররা টার্ন কম পান। এ ছাড়া হেভি রোলারের আরেক সুবিধা হচ্ছে পিচে ভোরের শিশির বা আর্দ্রতা থাকে, সেটি কমিয়ে দেয়। ফলে বলের সুইং কমে যায়।

কীভাবে ব্যবহার করতে হয়?

আইসিসি ক্রিকেট মাঠে রোলার ব্যবহারের নির্দিষ্ট সময় ও নিয়ম নির্ধারণ করে দিয়েছে। টেস্টে প্রতিদিন খেলা শুরুর আগে রোলার ব্যবহার করা যায়। ম্যাচের দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ ইনিংসের আগেও ব্যবহার করা যায়। দিনের শুরুতে হলে রোলার ব্যবহার করতে হয় খেলা শুরুর ৩০ মিনিটের মধ্যে, আবার শেষ ১০ মিনিটের আগেই শেষ করতে হয়। সর্বোচ্চ ৭ মিনিট ব্যবহার করা যায়।

ভারী রোলারের সুবিধা কী?

আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাটিং দলের অধিনায়ক ম্যাচের প্রথম ইনিংস বাদে প্রতিদিন খেলা শুরুর আগে সর্বোচ্চ ৭ মিনিট পিচ রোল করার অনুরোধ করতে পারেন। রোলিং খেলা শুরুর ৩০ মিনিটের মধ্যে শুরু করতে হবে। তবে অধিনায়ক এটি ১০ মিনিটের মতো দেরি করতে পারেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, রোলারের ধরন (হেভি বা লাইট) ব্যাটিং দলের পছন্দের ওপর নির্ভর করে। এই ক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক পোপ যদি আজ হেভি রোলার বেছে নেন, তাহলে পিচের অমসৃণতা কমে সমতল হয়ে ব্যাটিংয়ের অনুকূলে চলে আসবে। এটি অল্প সময়ের জন্য হলেও ওভালে ইংল্যান্ডের বাকি ৩৫ রান তুলতে সহায়ক হতে পারে।

ভারতের দুশ্চিন্তার কারণ

রোলার ব্যবহার হবে কি না, হলে ভারী না হালকা—এই সিদ্ধান্তটি নেওয়ার ক্ষমতা ব্যাটিং দলের অধিনায়কের। অর্থাৎ, ওলি পোপই রোলারের সিদ্ধান্ত নেবেন। আর সেটি যে পোপ নেবেনই, তা সহজেই বোধগম্য।

গতকাল ইংল্যান্ডের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা জো রুটও সেটা নিশ্চিত করেছেন, ‘রোলার এই ম্যাচে এরই মধ্যে প্রভাব ফেলেছে। পঞ্চম দিনেও যদি হেভি রোলার ব্যবহার করা হয়, আশা করি সেটা আমাদের পক্ষে কাজ করবে এবং পিচকে আরও সমতল করে তুলবে।’

ভারতের বোলিং কোচ মরনে মরকেল অবশ্য রোলারের ভূমিকা নিয়ে সরাসরি কিছু বলেননি। ইংল্যান্ড পঞ্চম দিনের খেলা শুরুর আগে রোলার ব্যবহার করতে পারে, এমন সম্ভাবনা নিয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু সঠিক জায়গায় বল ফেলার দিকে ফোকাস করব যেন আবারও কিছুটা হলেও উত্তেজনা তৈরি করা যায়।’

সিরিজের প্রথম চার টেস্ট শেষে ইংল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে। আজ ইংল্যান্ড ৩৫ রান নিতে পারলে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতবে, আর ভারত ৪ উইকেট নিতে পারলে ২-২ সমতা নিয়ে দেশে ফিরতে পারবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ