রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাসংলগ্ন একটি কনভেনশন সেন্টারে ‘গোপন বৈঠকের’ সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে সুমাইয়া জাফরিন নামের এক নারীকে হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তিনি এ ঘটনায় সেনা হেফাজতে থাকা মেজর সাদিকুল হকের স্ত্রী। আজ বুধবার সন্ধ্যায় তাঁকে মিরপুর ডিওএইচএস থেকে হেফাজতে নেয় ডিবি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ এবং ডিবি এ তথ্য জানিয়েছে। ডিএমপির গণমাধ্যম বিভাগ জানায়, কে বি কনভেনশন হলের ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে সুমাইয়া জাফরিনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

ডিবি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে সুমাইয়া জাফরিনের সম্পৃক্ততার বিষয়টি আসছিল। পরে মিরপুর ডিওএইচএসের একটি রেস্তোরাঁ থেকে তাঁকে ডিবি হেফাজতে আনা হয়।

গত ৩১ জুলাই সেনা সদরের এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ওই মেজরকে সেনাবাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ১ আগস্ট আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠা ওই সেনা কর্মকর্তাকে ১৭ জুলাই রাজধানীর উত্তরা থেকে আটক করে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে এবং প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় গত ১৩ জুলাই রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মামলা করে পুলিশ। তাতে বলা হয়েছে, গত ৮ জুলাই বসুন্ধরাসংলগ্ন কে বি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ একটি গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বৈঠকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা মিলে ৩০০-৪০০ জন অংশ নেন। তাঁরা সেখানে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। বৈঠকে পরিকল্পনা করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পাওয়ার পর সারা দেশ থেকে লোকজন এসে ঢাকায় সমবেত হবেন। তাঁরা ঢাকার শাহবাগ মোড় দখল করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে দেশে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করবেন। তাঁরা সেখানে এসব ষড়যন্ত্র করেছিলেন।

আরও পড়ুনসেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে: আইএসপিআর০১ আগস্ট ২০২৫

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) ওই মামলার তদন্ত করছে। এ মামলায় নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের ২২ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আইএসপিআর আরও জানায়, সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জনৈক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা–সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়া যায়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেছে। প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তদন্ত শেষে ওই সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর প্রচলিত আইন ও বিধি অনুযায়ী যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের কাজ চলছে।

আইএসপিআর আরও জানায়, ওই সেনা কর্মকর্তার কর্মস্থল থেকে অনুপস্থিত থাকা–সংক্রান্ত ব্যত্যয়ের বিষয়ে আরেকটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে আদালতের সুপারিশ ও সেনা আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাসংলগ্ন কনভেনশন সেন্টারে ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের অন্তত ২২ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই বৈঠকে মেজর পদমর্যাদার কর্মকর্তা সাদেকুল হকের সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ ওঠে।

আরও পড়ুননিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.

লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে এক মেজর৩১ জুলাই ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত র কনভ নশন ত র কর তদন ত ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকাসহ সারা দেশে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ২৯

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে অভিযান চালিয়ে ৮ দিনে ২৯ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, ম্যাগাজিন, দেশীয় অস্ত্র, মাদকসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ১১ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদাতিক ডিভিশন ও স্বতন্ত্র ব্রিগেডের অধীন ইউনিটগুলো ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এসব অভিযানে শীর্ষ সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, অবৈধ অস্ত্রধারী, মাদক ব্যবসায়ী, চোর, প্রতারক, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য, মাদকাসক্তসহ ২৯ জনকে আটক করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আটক হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে ৫টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ১টি ম্যাগাজিন, ১০টি গুলি, দেশীয় অস্ত্র, মাদক, জাল পরিচয়পত্র, সামরিক বাহিনীর ক্যাপ্টেন পদমর্যাদার পরিচয়পত্র, জাল ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড, রুপা, মুঠোফোনসহ বিভিন্ন চোরাই মালামাল ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

আটক ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ ও পরবর্তী আইনি কার্যক্রমের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, দেশব্যাপী জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত টহল ও নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ ছাড়া শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী সম্পৃক্ত রয়েছে। সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সাধারণ মানুষকে যেকোনো সন্দেহজনক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে কাছের সেনা ক্যাম্পে তথ্য দিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকাসহ সারা দেশে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ২৯
  • রবিবার আংশিক সূর্যগ্রহণ