বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার পাঠ করা জুলাই ঘোষণাপত্র, ঘোষণার আয়োজন এবং একটিমাত্র দলের সঙ্গে আলাপের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা—সবকিছুই প্রমাণ করে, ইসলামপন্থীদের মতামত, আত্মত্যাগ ও সাংগঠনিক ভূমিকাকে অবজ্ঞা করা হয়েছে।’

আজ বুধবার বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলীয় অবস্থান জানান মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘এটি শুধু দুঃখজনক নয়, বরং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, ঐতিহাসিক বাস্তবতা এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতি চরম অবহেলার শামিল।’

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে যাঁরা রক্ত দিয়েছেন—আলেম-ওলামা, মাদ্রাসাশিক্ষক ও ছাত্র, প্রবাসী এবং অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের ভূমিকাকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে। ১৯৪৭-এর আজাদি, ২০১৩-এর শাপলা চত্বর গণহত্যা, পিলখানা ট্র্যাজেডির মতো গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনারও কোনো উল্লেখ নেই। অথচ এগুলোই বাংলাদেশে স্বৈরাচার পতনের ধারাবাহিকতায় সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায়। এ উপেক্ষা ইতিহাসের প্রতি চরম অবিচার।’

মামুনুল হক বলেন, ‘যাঁরা বিগত দেড় দশক ধরে ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন, জেল-জুলুম সহ্য করেছেন, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন—মূলধারার ইসলামি নেতৃত্বের এমন কেউই গতকালের মঞ্চে স্থান পাননি। তাঁদের সঙ্গে কোনো পরামর্শও করা হয়নি। বরং একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মতামতের ভিত্তিতেই সবকিছু চূড়ান্ত করা হয়েছে।’

মামুনুল হক আরও বলেন, ‘অজস্র মানুষের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত জুলাই চেতনার বাস্তবায়নকে ভবিষ্যৎ সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, যা জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ও সংস্কারের গণদাবির সঙ্গে তামাশা ছাড়া কিছু নয়। প্রধান উপদেষ্টা বিজয়ের মঞ্চে দাঁড়িয়ে জাতির সঙ্গে নির্মম সেই তামাশাটাই করলেন। আমার দল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস মনে করে, প্রকৃত সংস্কার, ফ্যাসিবাদের বিচার, জাতীয় ঐক্য এবং নির্বাচনের পূর্বে একটি “লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড” (সবার জন্য সমান সুযোগ) ছাড়া কোনো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়।’

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, নির্বাচনের আগে সব দলের অংশগ্রহণে একটি জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে অধ্যাদেশ জারি করে ‘জুলাই সনদ’ বা ‘জুলাই জাতীয় ঘোষণাপত্র’কে আইনি ভিত্তি দিতে হবে এবং তাতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনতে হবে। অন্যথায় এই ঘোষণাপত্র, নির্বাচন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের গোটা উদ্যোগই জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ম ন ল হক

এছাড়াও পড়ুন:

গণভোটকে নির্বাচনের কাছে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে সরকার, অভিযোগ তাহেরের

অন্তর্বর্তী সরকার চালাকি করে গণভোটকে জাতীয় নির্বাচনের তারিখের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।

সরকারের উদ্দেশে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, জনগণের দাবি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। সরকার চালাকি করে সময়ক্ষেপণ করছে। এই করব সেই করব করে তারা গণভোটকে জাতীয় নির্বাচনের তারিখের কাছে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এরপর তারা বলবে আর আলাদা করে (গণভোট) করার সময় নেই। অথচ নির্বাচনের তফসিল হলেও গণভোট আলাদা করে আগে হতে কোনো আইনি বাধা নেই। তাই গণভোটের পরেই জাতীয় নির্বাচন হতে হবে।

আজ শুক্রবার বিকেলে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভায় সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের এ কথা বলেন। জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা এ সভার আয়োজন করে।

বিএনপিসহ কয়েকটি দল চায় আগামী ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট আয়োজন হোক। কিন্তু জামায়াতসহ ধর্মভিত্তিক আটটি দল নির্বাচনের আগেই গণভোট আয়োজনের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে নেমেছে।

আলোচনা সভায় বিএনপিকে উদ্দেশ করে মুহাম্মদ তাহের বলেন, যারা জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট চায় না, তারা কেন চায় না, সেটি জামায়াত জানে। ডাকসু নির্বাচনের পরে তারা আর কোনো নির্বাচন মানতে পারেনি। আর কোনো ‘টেস্ট কেসে’ তারা যেতে চায় না। কারণ, গণভোট জাতীয় নির্বাচনের আগে হলে ৮০ শতাংশ লোক সংস্কারের পক্ষে ভোট দেবে।

তাহের বলেন, জামায়াত ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন চায়। তার আগে গণভোট চায়। জনগণ গণভোটে ‘না’–এর পক্ষে ভোট দিলে জামায়াত সেটি মেনে নেবে।

জামায়াতের এই নেতা বলেন, অনেকে এখন বলে, আজকের বিএনপি জিয়াউর রহমানের বিএনপি নয়। জিয়াউর রহমানের হাতে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পর বিএনপি বড় দল ছিল। তাঁর স্ত্রী খালেদা জিয়া যখন সক্রিয়ভাবে এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন, তখনো বিএনপি অনেক জনপ্রিয় দল ছিল। এখনো বিএনপি অনেক বড় দল। কিন্তু জিয়াউর রহমান বা খালেদা জিয়ার সময়ের মতো জনপ্রিয় কি না, প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি আব্দুস সালাম প্রমুখ।

আরও পড়ুনজামায়াতসহ সমমনা দলের গণভোটের দাবি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: মির্জা ফখরুল৭ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবিতে এক্সপ্রেসওয়েতে বিক্ষোভ
  • নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় বিএনপি বিজয়ী হবে: ফখরুল
  • ‘জ্ঞান জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করাই প্রকৃত সাফল্য’
  • গণভোট-সনদ জনগণ বোঝে না: মির্জা ফখরুল 
  • ‘কথায় কথায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জোটের প্রার্থী আসে কেন`
  • চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত না পাল্টালে কঠোর কর্মসূচি: বাম গণতান্ত্রিক জোট
  • সংস্কারের মূল লক্ষ্য প্রশাসনিক নয়, নৈতিক: প্রধান বিচারপতি
  • বিএনপি আহ্বান করলে আমরা আলোচনায় যেতে প্রস্তুত: আযাদ
  • অভিজাততন্ত্র থেকে কি আমাদের মুক্তি নেই
  • গণভোটকে নির্বাচনের কাছে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে সরকার, অভিযোগ তাহেরের