সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় সুমাইয়া জাফরিনকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

সুমাইয়া জাফরিন মেজর সাদিকুলের স্ত্রী। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাসংলগ্ন একটি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ‘গোপন বৈঠকের’ সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে জাফরিনকে গতকাল বুধবার হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মেজর সাদিকুল হকও এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সেনা হেফাজতে রয়েছেন।

পুলিশ ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সুমাইয়া জাফরিনকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে পুলিশ। আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ চাওয়া হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত তাঁকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

ডিবি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে সুমাইয়া জাফরিনের সম্পৃক্ততার বিষয়টি আসছিল। পরে মিরপুর ডিওএইচএসের একটি রেস্তোরাঁ থেকে তাঁকে ডিবি হেফাজতে আনা হয়।

গত ১৩ জুলাই রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মামলা করে পুলিশ। তাতে বলা হয়, গত ৮ জুলাই বসুন্ধরাসংলগ্ন কে বি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ একটি গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বৈঠকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা মিলে ৩০০-৪০০ জন অংশ নেন। তাঁরা সেখানে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। বৈঠকে পরিকল্পনা করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পাওয়ার পর সারা দেশ থেকে লোকজন এসে ঢাকায় সমবেত হবেন। তাঁরা ঢাকার শাহবাগ মোড় দখল করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে দেশে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করবেন। তাঁরা সেখানে এসব ষড়যন্ত্র করেছিলেন।

আরও পড়ুনসেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে: আইএসপিআর০১ আগস্ট ২০২৫

গত ৩১ জুলাই সেনাসদরের এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানানো হয়, মেজরকে সেনাবাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পরদিন ১ আগস্ট আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠা ওই সেনা কর্মকর্তাকে ১৭ জুলাই রাজধানীর উত্তরা থেকে আটক করে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে এবং প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুনসেনা হেফাজতে থাকা মেজর সাদিকুলের স্ত্রী এখন ডিবি হেফাজতে১৭ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ফর ন

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন আসিম মুনির

ভারতের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের মধ্যে ফের যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। 

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ডন ডটকম লিখেছে, চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফর করবেন আসিম মুনির। যেখানে তিনি মার্কিন সেনাপ্রধান ও পদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার ঘনিষ্ট বন্ধু হিসেবে বারবার ট্রাম্পের নাম নিলেও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ট্রাম্প যে একেবারে আলাদা, সেটি তার শুল্ক চাপানোর ঘোষণায় স্পষ্ট। 

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত

সেনাঘাঁটিতে সহকর্মীদের গুলি করলেন মার্কিন সার্জেন্ট, আহত ৫

ভারতের ওপর বর্ধিতসহ মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপালেন ট্রাম্প। অথচ পাকিস্তানের ওপর ট্রাম্পের চাপানো পাল্টা শুল্কের পরিমাণ মাত্র ১৯ শতাংশ। সম্প্রতি পাকিস্তানের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের সুনজর সব দিক থেকেই প্রকাশ পাচ্ছে। প্রথম সফরের দুই মাস না যেতেই পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের আবার যুক্তরাষ্ট্র সফরের আমন্ত্রণ তার আরেকটি প্রমাণ বলা যায়।

আসিম মুনিরের এবারের সফর একটি পাল্টা সফর হবে জানিয়ে ডন ডটকম বলেছে, এর আগে জুলাইয়ের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) প্রধান জেনারেল মাইকেল এরিক কুরিলা পাকিস্তান সফর করেছিলেন।

৪ আগস্ট প্রকাশিত এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সেন্ট্রাল কমান্ড তাদের প্রধান জেনারেল কুরিলার সাম্প্রতিক পাকিস্তান ও অঞ্চলটির অন্যান্য দেশ সফরের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

সফরকালে পাকিস্তান সরকার জেনারেল কুরিলাকে ‘নিশান-ই-ইমতিয়াজ (সামরিক)’ খেতাব প্রদান করে।

আসিম মুনির এর আগে জুনে ওয়াশিংটন সফর করন, তখন তিনি হোয়াইট হাউসে এক মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে স্বাগত জানান। এটি একটি নজিরবিহীন সম্মান, যা সাধারণত কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানদের জন্য সংরক্ষিত থাকে।

ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) অথবা ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসের পক্ষ থেকে এ সফর নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি। তবে তার আগের সফরে সেনাপ্রধান ইঙ্গিত দিয়েছিলেন,, তিনি বছরের শেষ দিকে আবার যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রত্যাশা করছেন।

এই ঘটনাপ্রবাহ এমন এক সময় ঘটছে যখন এর এক মাস আগেই এক কংগ্রেশনাল শুনানিতে মার্কিন জেনারেল পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টায় ‘চমৎকার অংশীদার’ হিসেবে অভিহিত করেন। একই সঙ্গে তিনি অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় পাকিস্তানের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

‘প্রেসিডেন্ট হওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই’
ডন ডটকম জানিয়েছে, সেনাপতি আসিম মুনিরের প্রেসিডেন্ট হওয়ার গুজবকে সম্পূর্ণভাবে উড়িয়ে দিয়েছেন আইএসপিআর প্রধান।

এর আগে জুলাইয়ের শুরুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভিও স্পষ্ট করেছিলেন, প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগে বাধ্য করার বা সেনাপ্রধানের প্রেসিডেন্ট হওয়ার কোনো পরিকল্পনার কথা সরকারের মধ্যে নেই।

দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, তার বসের (আসিম মুনিরের) প্রেসিডেন্ট হওয়ার আলোচনাকে তিনি ‘নিরর্থক’ মনে করেন।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন আসিম মুনির
  • সেনা হেফাজতে থাকা মেজর সাদিকুলের স্ত্রী এখন ডিবি হেফাজতে