মাহেরিন চৌধুরীর নামে চালু হচ্ছে সাহসিকতা পুরস্কার
Published: 7th, August 2025 GMT
বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় নিজের জীবন উৎসর্গ করে শিক্ষার্থীদের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন সাহসী শিক্ষিকা মাহেরিন চৌধুরী। তাঁর এই অনন্য আত্মত্যাগকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে শিক্ষকদের জন্য ‘মাহেরিন চৌধুরী অ্যাওয়ার্ড’ নামে বিশেষ সাহসিকতা পুরস্কার চালু করতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তিনি জানান, সাহসী ও আত্মত্যাগী শিক্ষকদের উৎসাহিত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘মাহেরিন চৌধুরী অ্যাওয়ার্ড’ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরো পড়ুন:
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনে ইসিকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি
নির্বাচনে ৪৭ হাজার কেন্দ্রে দেওয়া হবে বডি ক্যামেরা
গত ২১ আগস্ট উত্তরায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাঙ্গণে বিধ্বস্ত হয়। মাহেরিন চৌধুরী মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা মিডিয়াম শাখার তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির সমন্বয়ক ছিলেন। প্রতিদিনের মত সেদিনও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠলে শিক্ষক মাহেরিন চৌধুরী শিক্ষার্থীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে তৎপর হন। তাঁর দ্রুত সিদ্ধান্ত ও সাহসিকতায় অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী প্রাণে রক্ষা পায়। কিন্তু তিনি গুরুতর দগ্ধ হন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ঘটনার পরপরই তাঁর বীরত্বগাথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
আজ সকাল সাড়ে ১০টায় সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শুরু হয়, সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষ হয় দুপুরে।
প্রেস সচিব বলেন, “মাহেরিন চৌধুরী অ্যাওয়ার্ড প্রতি বছর এমন শিক্ষক বা শিক্ষিকাদের দেওয়া হবে, যারা সাহসিকতা, মানবতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। পুরস্কারের আনুষ্ঠানিক নীতিমালা ও প্রক্রিয়া শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।”
ঢাকা/এএএম/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
তৈরি পোশাক খাতের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে চায় আইএমএফ
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সঙ্গে বৈঠক করেছে। এতে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তৈরি পোশাক খাতের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যতের ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে অবহিত হওয়ার চেষ্টা করে আইএমএফের প্রতিনিধিদল।
পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়, রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএর কার্যালয়ে আজ বুধবার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিএমইএর নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইনামুল হক খান, সহসভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম, ভিদিয়া অমৃত খান, পরিচালক নাফিস-উদ-দৌলা, রশিদ আহমেদ হোসাইনী প্রমুখ। অন্যদিকে আইএমএফের প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ কিয়াও চেন, জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ রুইফেং ঝাং ও অর্থনীতিবিদ আয়া সাইদ।
উভয় পক্ষের আলোচনায় পোশাক রপ্তানিতে মার্কিন শুল্কের সম্ভাব্য প্রভাব, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রভাব, শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি এবং মূল্য সংযোজিত পণ্য বৈচিত্র্যকরণের কৌশল গুরুত্ব পায়। সেই সঙ্গে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সম্ভাব্য প্রভাব, ব্যবসায়ের পরিচালন ব্যয় কমানো ও ব্যবসা সহজীকরণের জন্য করণীয় বিষয়েও আলোচনা হয়।
আইএমএফের প্রতিনিধিদের কাছে জাতীয় অর্থনীতিতে তৈরি পোশাকশিল্পের অবদানসহ শিল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বিজিএমইএর নেতারা। তাঁরা শিল্পের কৌশলগত রূপকল্প তুলে ধরে জানান, পোশাকশিল্প বর্তমানে শ্রমনির্ভর মডেল থেকে বেরিয়ে এসে মূল্য সংযোজিত পণ্য, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত মানোন্নয়নের মাধ্যমে রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছে। তারই অংশ হিসেবে কৃত্রিম তন্তু ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইলভিত্তিক পোশাক তৈরির সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
বিজিএমইএ নেতারা জানান, তাঁদের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ইতিমধ্যে তৈরি পোশাকশিল্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ, বন্দর ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার উন্নয়ন, কাস্টমস ও বন্ড প্রক্রিয়া সহজীকরণ, সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন। এ ছাড়া এলডিসি থেকে উত্তরণের পর শুল্কসুবিধা বজায় রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ), যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) সই করার বিষয়ে সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে।