শেখ হাসিনার আমলে সাংবাদিকতা ও প্রথম আলো
Published: 5th, November 2025 GMT
বাংলাদেশে স্বাধীন সাংবাদিকতা সব সময়েই চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। সংবাদমাধ্যমের ওপর একদিকে মালিকগোষ্ঠীর ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষার চাপ, অন্যদিকে ক্ষমতাসীনদের রক্তচক্ষু। বিগত স্বৈরশাসনের আমলে তো পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছিল। একদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার-নির্যাতন করা হয়েছে, অন্যদিকে বহু গণমাধ্যমের মালিক, সম্পাদক ও সাংবাদিক ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সুবিধাভোগী সম্পর্ক গড়ে তুলে সরকারদলীয় মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করেছেন। বিগত স্বৈরশাসনামলে প্রথম আলোর ভূমিকা পর্যালোচনা করতে হলে এ প্রেক্ষাপট মাথায় রাখতে হবে।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে প্রথম আলো ‘নিউজপেপার অব রেকর্ড’–এর ভূমিকা পালন করে। এ কারণে যেকোনো বিতর্কমূলক পরিস্থিতিতে মানুষ অনেক সময় দেখে, প্রথম আলোয় ঘটনাটি সম্পর্কে কী লেখা হয়েছে। এটা একদিকে প্রথম আলোর জন্য গৌরবের, আরেক দিকে বিপদের। বিপদের কারণ হলো, যেকোনো সংকটমূলক পরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী চাইবে তাদের পছন্দনীয় বয়ানটি যেন প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয়। আর এটিই বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য বিরাট হুমকি।
আরও পড়ুনপ্রথম আলো সময় ও সমাজের দায় কতটুকু পূরণ করতে পারল০৬ নভেম্বর ২০২৪বিগত স্বৈরশাসন আমলে এ কারণে প্রথম আলোর ওপর সরকার ও বিরোধী পক্ষ—উভয় দিক থেকেই প্রত্যাশার চাপ ছিল মারাত্মক। প্রথম আলো যদি কোনো দলীয় রাজনৈতিক মুখপত্র হতো, তাহলে তার জন্য পরিস্থিতি এতটা জটিল হতো না।
কিন্তু দিন শেষে প্রথম আলো একটি মূলধারার বাণিজ্যিক সংবাদপত্র। তাকে টিকে থাকতে হলে বিভিন্ন ক্ষমতাধর গোষ্ঠীর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে হয়, অনেক ক্ষেত্রে আপসও করতে হয়। নানা ধরনের পরস্পরবিরোধী বয়ান ছাপাতে হয়, ফলে বিভিন্ন পক্ষ বিভিন্ন সময় ক্ষুব্ধ হয়। যেমন বিগত স্বৈরশাসন আমলে আমরা দেখেছি, প্রথম আলো পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির সংবাদ ছাপালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ক্ষুব্ধ হয়েছে, আবার পদ্মা সেতুর উন্নয়ন নিয়ে অতি উচ্ছ্বাস প্রকাশিত হলে সরকারবিরোধীরা বিরক্ত হয়েছে।
আমরা সে সময় স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে প্রথম আলোর বিরুদ্ধে সরাসরি বিষোদ্গার করতে দেখেছি, দেখেছি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করে করপোরেট কোম্পানির বিজ্ঞাপন পর্যন্ত বন্ধ করে দিতে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম আলোর সাংবাদিকদের জেল খাটতে হয়েছে, সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে সারা দেশে মামলা হয়েছে ৫৫টি। এসবের কারণ হলো প্রথম আলোর শক্তিশালী অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ও তার বিশ্বাসযোগ্যতা।
হলমার্ক, বেসিক ব্যাংক, অ্যাননটেক্স থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন মন্ত্রীর পৃষ্ঠপোষকতায় মেঘনার বালু লুণ্ঠন বা জমি দখলের মতো ঘটনাবিষয়ক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রথম আলোয় ছাপা হওয়ার কারণে হাসিনা সরকারের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়গুলো দেশে–বিদেশে বিশ্বাসযোগ্যতা পেয়েছে। নির্বাচন নিয়ে অনিয়ম ও জালিয়াতির বিষয়টিও তা–ই।
২০১৪ সালের ৬ জানুয়ারিতে প্রথম আলোর সংবাদ শিরোনাম ছিল: ‘জাল ভোট, কলঙ্কিত নির্বাচন’। ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরের সংবাদ: ‘একচেটিয়া ভোট, নৌকার জয়’ এবং ‘নিয়ন্ত্রিত মাঠ, অনিয়ম, অসংগতি’।
আমি বলছি না যে শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রথম আলোর সংবাদ নিয়ে কোনো সমালোচনার জায়গা নেই। শুধু শেখ হাসিনার শাসনামলই নয়, অন্যান্য সময়েও প্রথম আলোর ভূমিকা নিয়ে আমার অনেক ধরনের সমালোচনা আছে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন, প্রবৃদ্ধি, বিদেশি বিনিয়োগ, দেশি–বিদেশি করপোরেট গ্রুপ–বিষয়ক সংবাদ, বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের ভূমিকা, বেসরকারীকরণ, ক্ষুদ্রঋণ, ছাত্ররাজনীতি, শ্রমিক আন্দোলন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ইত্যাদি বিষয়েই প্রথম আলোর সংবাদ নিয়ে আমার বিস্তর সমালোচনা আছে।ভারত প্রশ্নে প্রথম আলোর ভূমিকা নিয়ে অনেকের মুখেই সমালোচনা শোনা যায়। তবে এই সমালোচনা করার বেলায় মাথায় রাখতে হবে, ওই সময় শুধু প্রথম আলো নয়, মূলধারার যেকোনো সংবাদমাধ্যমেই ভারতের স্বার্থের বিরুদ্ধে সংবাদ বা বিশ্লেষণ প্রকাশ করা কঠিন ছিল। আমি একাধিক সংবাদমাধ্যম–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে বিভিন্ন সময় শুনেছি, ভারত প্রশ্নে সমালোচনামূলক সংবাদ বা বিশ্লেষণ ছাপার পরে ভারতীয় দূতাবাস থেকে ফোন পেয়েছেন, হুমকি পেয়েছেন।
ভারত প্রসঙ্গে দেশের সব মিডিয়ার ভূমিকা নিয়েই আলোচনা–পর্যালোচনা হওয়া উচিত। তা না করে শুধু প্রথম আলোকে আলাদা করে প্রশ্নবিদ্ধ করাটা একপক্ষীয় হয়ে যায়। কারণ, এই ভয়ের পরিবেশের মধ্যেও প্রথম আলোয় ভারতের স্বার্থের জন্য অনুকূল নয়—এমন বহু সংবাদ–মতামত প্রকাশিত হয়েছে, যা অন্য অনেক মিডিয়ায় ততটা দেখা যায়নি। যেমন সুন্দরবনের জন্য ক্ষতিকর রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, ট্রানজিট, আমদানিচুক্তি–সম্পর্কিত সংবাদ–মতামত ইত্যাদি।
আরও পড়ুনপ্রথম আলো কি বানোয়াট প্রতিবেদন করেছে০২ এপ্রিল ২০২৩এবার দেখা যাক, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় প্রথম আলোর ভূমিকা কী ছিল। এ সময় আন্দোলনকারীদের ওপর সরকারি বাহিনীগুলোর নির্বিচার গুলিবর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো আড়াল করতে সরকার গণমাধ্যমকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। সরকারের চাপে ও রাজনৈতিক আনুগত্যের কারণে অধিকাংশ সংবাদমাধ্যম গণ–আন্দোলন নিয়ে নানা রকম বিভ্রান্তিকর ও ষড়যন্ত্রমূলক খবর প্রকাশ করে।
এর বিপরীতে প্রথম আলো সরকারি দমন-পীড়ন থেকে শুরু করে আহত-নিহতের সংখ্যা বস্তুনিষ্ঠভাবে প্রকাশ করে। এ সময় প্রথম আলোয় প্রকাশিত সংবাদ ও মতামতের শিরোনাম ছিল: ‘ছেলের লাশেও গুলি লাগে, বললেন বাবা’, ‘এ লাশ আমরা রাখব কোথায়’, ‘এলাকা ভাগ করে ব্লক রেইড’, ‘হাসপাতাল ঘুরলে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে’, ‘নিহত ১১৩ জন কম বয়সী, শিক্ষার্থী ৪৫’, ‘এত সব মৃত্যু বাংলায় কবে কে দেখেছে’, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন: প্রাণের হিসাব তো হতেই হবে’, ‘ঢাকায় গ্রেপ্তার ৮৭ শতাংশের রাজনৈতিক পরিচয় নেই’, ‘নিহত ৭৮ শতাংশের শরীরে প্রাণঘাতী গুলির ক্ষত’, ‘বিক্ষোভ দমনে যেভাবে “রেডলাইন ক্রস” করা হয়েছে’ ইত্যাদি।
আরও পড়ুনবাক্স্বাধীনতা, প্রথম আলো ও আমাদের গণতন্ত্র০৪ নভেম্বর ২০২২আমি বলছি না যে শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রথম আলোর সংবাদ নিয়ে কোনো সমালোচনার জায়গা নেই। শুধু শেখ হাসিনার শাসনামলই নয়, অন্যান্য সময়েও প্রথম আলোর ভূমিকা নিয়ে আমার অনেক ধরনের সমালোচনা আছে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন, প্রবৃদ্ধি, বিদেশি বিনিয়োগ, দেশি–বিদেশি করপোরেট গ্রুপ–বিষয়ক সংবাদ, বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের ভূমিকা, বেসরকারীকরণ, ক্ষুদ্রঋণ, ছাত্ররাজনীতি, শ্রমিক আন্দোলন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ইত্যাদি বিষয়েই প্রথম আলোর সংবাদ নিয়ে আমার বিস্তর সমালোচনা আছে।
একসময় আমার মনে হতো, প্রথম আলো বিভিন্ন ইস্যুতে একপক্ষীয় অবস্থান থেকে সংবাদ প্রকাশ করছে—বিশেষ করে বিদেশি বিনিয়োগ, বহুজাতিক করপোরেশন–সম্পর্কিত সংবাদ ও মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে প্রথম আলো এসব বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্লেষণ প্রকাশ করছে।
পাঠক হিসেবে অনেক সময় মনে হয় প্রথম আলো বোধ হয় সেল্ফ সেন্সর করছে বা সংবাদ প্রকাশ করতে দেরি করছে। কৃষক, শ্রমিক ও প্রান্তিক মানুষের নানান সংকট নিয়ে প্রথম আলোকে আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে। প্রতি কেজি আলুতে কৃষক যখন ৬৮ পয়সা লাভ পান, তখন সে খবর প্রথম আলোর ১২ নম্বর পাতায় ছাপা হয়, অথচ বিপুলসংখ্যক মানুষের স্বার্থসংশ্লিষ্টতার বিবেচনায় সেটা প্রধান শিরোনাম হওয়া উচিত।
আরও পড়ুনপ্রথম আলো, সমাজ ও রাজনীতি০৪ নভেম্বর ২০২৩কিন্তু এসব সমালোচনা ও প্রত্যাশা করার বেলায় একটা বিষয় মনে রাখা দরকার, বিরূপ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটা মূলধারার সংবাদমাধ্যম কী ধরনের আচরণ করবে, তা অনেক ক্ষেত্রেই শুধু সম্পাদক বা মালিকপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকে না।
স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় যথাযথ ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারার কারণে দেশের প্রধানতম মিডিয়া একেবারে বন্ধ করে দেওয়া বা জবরদখল করে নেওয়ার উদাহরণ বিশ্বে বিরল নয়। যেমন কম্বোডিয়ার স্বৈরশাসক হুন সেনের সরকার করসংক্রান্ত জটিলতা তৈরি করে সে দেশের দুটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রকে বন্ধ করে দেয়। এর ফলে ২০১৭ সালে দ্য কম্বোডিয়া ডেইলি পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায় এবং ২০১৮ সালে দ্য নমপেন পোস্ট পত্রিকাটি হুন সেন সরকারের ঘনিষ্ঠ এক সহযোগীর কাছে বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়। বাংলাদেশেও শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রথম আলো বন্ধ করে দেওয়া এবং হাসিনা–ঘনিষ্ঠ এস আলম গ্রুপের কাছে জবরদস্তিমূলকভাবে মালিকানা হস্তান্তরের চেষ্টা করা হয়েছিল।
এখানেই চলে আসে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের কাঠামোগত সংস্কারের প্রশ্নটি। জনস্বার্থের দিক থেকে গণমাধ্যমের জবাবদিহি আদায়ের সঙ্গে সংবাদমাধ্যমের জন্য একটা মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার সম্পর্ক রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন মনে করে, বাংলাদেশে স্বাধীন ও বস্তুনিষ্ঠ গণমাধ্যমের বিকাশের জন্য আইনগত, প্রাতিষ্ঠানিক ও আর্থিক—এ তিন ধরনের বাধাই দূর করতে হবে।
এ জন্য গণমাধ্যমের মালিকানায় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের হিস্যায় লাগাম টানতে হবে; স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে বাধা—এমন আইন সংস্কার করতে হবে ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতা সুরক্ষা আইন করতে হবে; গণমাধ্যম কমিশন গঠন করে স্বনিয়ন্ত্রণ ও বৈশ্বিক উত্তম চর্চার নিরিখে গণমাধ্যমের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে; প্রকৃত প্রচারসংখ্যা নিরূপণ করে বিজ্ঞাপন বণ্টনে স্বচ্ছতা আনতে হবে ইত্যাদি। স্বাধীন ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার বিকাশের জন্য সংবাদমাধ্যমকে ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও ক্ষমতাসীন সরকার উভয়ের একচেটিয়া আধিপত্যমুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ।
কল্লোল মোস্তফা বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবেশ ও উন্নয়ন অর্থনীতিবিষয়ক লেখক
[email protected]
মতামত লেখকের নিজস্ব
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল র স ব দ ন য় প রথম আল র ভ ম ক ও প রথম আল প রথম আল য় বস ত ন ষ ঠ ক ষমত স ন প রক শ ত পর স থ ত ব দ কত র র জন ত ক র জন য সরক র ব ষয়ক করপ র ধরন র মত মত
এছাড়াও পড়ুন:
টিকটকে প্রেম, তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
বিয়ের প্রলোভনে তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা থেকে জিল্লুর রহমান (৩৬) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৫-এর একটি দল। গ্রেপ্তার জিল্লুরের বাড়ি বগুড়ার কাহালু উপজেলার বামুজা গ্রামে।
আরো পড়ুন:
জাবির সহকারী অধ্যাপক ড. নাহরিনের বিরুদ্ধে জামায়াত নেতার মামলা
দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৩
বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, প্রায় তিন মাস আগে টিকটকের মাধ্যমে ওই তরুণীর সঙ্গে জিল্লুরের পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে জিল্লুর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তরুণীকে পাবনার ঈশ্বরদীতে ডাকেন।
গত ৯ অক্টোবর রাতে ওই তরুণী ট্রেনে ঈশ্বরদী পৌঁছালে জিল্লুর তাকে মোটরসাইকেলে করে বিভিন্ন স্থানে ঘোরান। ১০ অক্টোবর দুপুরে ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া বাজার এলাকায় একটি কক্ষ ভাড়া নেন এবং ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত সেখানে বিয়ের প্রলোভনে তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন তিনি।
র্যাব জানায়, মেয়েটি বিয়ের কথা বললে জিল্লুর কালক্ষেপণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে কাজী অফিসে নেওয়ার কথা বলে ওই তরুণীর মোবাইল ফোন ও ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যান জিল্লুর। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজেই ঈশ্বরদী থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।
মামলার পর র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। গতকাল মঙ্গলবার গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৫-এর রাজশাহী সিপিএসসি ক্যাম্পের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ