ময়মনসিংহে হত্যা মামলায় দুই ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড
Published: 22nd, October 2025 GMT
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে জহিরুল ইসলাম মিঠু হত্যা মামলায় দুই ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে ময়মনসিংহের বিশেষ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফারহানা ফেরদৌস এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- উপজেলার বাড়িওয়ালাপাড়ার এলবার্ট ডেবিট বাদলের ছেলে এলবার্ট ডেবিট রকি (২৫) ও এলবার্ট ডেবিট সেন্টু (৪০)। তারা পলাতক রয়েছেন। আদালত পরিদর্শক পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান মামলার রায়ের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর গৌরীপুর পাটবাজারে টিপু সুলতান জুয়েলার্সে স্বর্ণের দাম নিয়ে দোকানির সঙ্গে রকি ও সেন্টুর বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় দোকানির চাচাত ভাই জহিরুল ইসলাম মিঠু বিষয়টি সমাধানে এগিয়ে এলে সেন্টু বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে মিঠুর বুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহতাবস্থায় মিঠুকে প্রথমে গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা মিঠুকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরদিন জহিরুল ইসলাম মিঠুর বাবা মো.
মামলায় ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ, জেরা-তর্ক শেষে আদালত এ রায় দেন। রাষ্ট্র ও অভিযুক্তের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী হাসিব আহামদ মাহবুবুল আলম ও মো. আকরাম হোসেন।
ঢাকা/মিলন/রাজীব
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সিটি করপোরেশনের নামমাত্র সেবা কত দিন
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের যাত্রা শুরু হয়েছে সাত বছর আগে, কিন্তু আজও নগরীর নাগরিকেরা, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের প্রায় দেড় লাখ মানুষ সুপেয় পানির মতো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। পৌরসভা থেকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত হলেও ওয়াসার মতো পানি সরবরাহের কোনো প্রতিষ্ঠানই গড়ে ওঠেনি। নগরবাসীর সংখ্যা বাড়তে থাকলেও পুরোনো পৌরসভার সেবাই চালু আছে। আর কত বছর পার হলে সিটি করপোরেশনের প্রকৃত সেবা পাবেন নগরবাসী?
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ময়মনসিংহ শহরে ১৩৬ বছর আগে মুক্তাগাছার জমিদার মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরী যান্ত্রিক উপায়ে ব্রহ্মপুত্রের পানি শোধন করে সরবরাহের ব্যবস্থা করেছিলেন। সেই শহরে আজ মানুষ টাকায় কিনে পাচ্ছেন দুর্গন্ধ ও ময়লাযুক্ত পানি। প্রতি মাসে সিটি করপোরেশনকে টাকা দেওয়ার পরও লাইনে যে পানি আসে, তা ময়লা, দুর্গন্ধযুক্ত এবং তাতে পোকা ও শামুক পর্যন্ত পাওয়া যায়। এই পচা পানি ব্যবহার করে অনেকের শরীরে চুলকানির মতো নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
সিটি করপোরেশন হওয়ার পর নগরের পরিসর বেড়েছে, নগরবাসীর সংখ্যাও বেড়েছে। কিন্তু পানির সংযোগ পৌরসভা আমলের। ফলে আয়ের চেয়ে বেশি ব্যয়ে পানি সরবরাহ করতে হচ্ছে সিটি করপোরেশনকে। চাহিদা, ঘাটতি ও সামর্থ্যহীনতার কারণে শহরটিতে পানি সরবরাহ নিয়ে চরম অব্যবস্থাপনা তৈরি হয়েছে, কোনো সন্দেহ নেই। আবার আয়ের তুলনায় ব্যয়ের যে হিসাব দেখা যাচ্ছে, তাতে কোনো অনিয়ম হচ্ছে কি না, সেটিও অনুসন্ধানের বিষয়।
ময়মনসিংহে পানির সরকারি সংযোগ আছে মাত্র সাত হাজার পরিবারের। অন্যদিকে প্রায় দেড় লাখ নিম্ন আয়ের মানুষের চাহিদা মেটাতে সিটি করপোরেশন অনুমোদনের মাধ্যমে বা গোপনে সাড়ে ২২ হাজারের বেশি সাবমারসিবল পাম্প স্থাপনকে উৎসাহ জুগিয়েছে। এই অনিয়ন্ত্রিত পাম্প স্থাপন ও ব্যবহারের ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আরও বড় সংকট তৈরি করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন পরিবেশবিদেরা।
সিটি করপোরেশনের বক্তব্য, সিটি করপোরেশন হওয়ার পর জনসংখ্যা বাড়লেও পানি সরবরাহের সক্ষমতা বাড়েনি এবং রাজস্ব আয় সামান্য হওয়ায় সরকার থেকে বিশেষ প্রকল্প না পেলে বড় কোনো উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষমতা নেই।
জানা যাচ্ছে, সিটি করপোরেশন হলেও এর নিজস্ব জনবল কাঠামোই এখনো ঠিক হয়নি। পৌরসভার জনবল দিয়েই চলছে সিটি করপোরেশন। প্রশ্ন হচ্ছে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন কত দিন ‘নামকাওয়াস্তে’ সিটি করপোরেশন হয়ে থাকবে। নগরবাসীর জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থাসহ অন্যান্য নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে আমরা জোরালো আহ্বান জানাই।