জোহরান মামদানির ঐতিহাসিক জয়ের রহস্য কী
Published: 5th, November 2025 GMT
ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিউইয়র্ক সিটির ১১১তম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমো ও রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে পরাজিত করে ইতিহাস গড়েছেন তিনি। এ জয়ের মধ্য দিয়ে জোহরান হলেন শহরটির প্রথম মুসলিম মেয়রও।
নিউইয়র্ক সিটির বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য লড়াই করছিলেন। তবে গত সেপ্টেম্বরে নির্বাচনী দৌড় থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।
৩৪ বছর বয়সী ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট ও কুইন্স থেকে নির্বাচিত অঙ্গরাজ্য পরিষদ সদস্য জোহরান ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হন। ৬৭ বছর বয়সী কুমো পান ৪০ শতাংশের কিছু বেশি ভোট, আর স্লিওয়া ৭ শতাংশের কিছু বেশি।
৩৪ বছর বয়সী ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট ও কুইন্স থেকে নির্বাচিত অঙ্গরাজ্য পরিষদ সদস্য জোহরান ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হন। ৬৭ বছর বয়সী কুমো পান ৪০ শতাংশের কিছু বেশি ভোট, আর স্লিওয়া ৭ শতাংশের সামান্য বেশি।যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ডেমোক্র্যাটদের একের পর এক সাফল্যের মধ্যে জোহরান মামদানির ঐতিহাসিক এ জয় এসেছে। ভার্জিনিয়ায় কংগ্রেস সদস্য অ্যাবিগেইল স্প্যানবার্গার অঙ্গরাজ্যের প্রথম নারী গভর্নর হচ্ছেন, নিউজার্সিতে গভর্নর পদে মিকি শেরিল ট্রাম্প-সমর্থিত প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করছেন। ক্যালিফোর্নিয়ায় গভর্নর গ্যাভিন নিউসমের নতুন আসনবিন্যাস পরিকল্পনায় ডেমোক্র্যাটদের জন্য পাঁচটি নতুন কংগ্রেস আসন যোগ হতে যাচ্ছে।
ব্রুকলিনের ব্রুকলিন প্যারামাউন্ট হলে জোহরানের বিজয় ঘোষণার পর উল্লাসে ফেটে পড়েন সমর্থকেরা। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস তাঁর পক্ষে ফল ঘোষণা করতেই উপস্থিত জনতা চিৎকার, করতালি, আলিঙ্গনে মেতে ওঠেন।
নিউইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম মেয়র হওয়ার পাশাপাশি জোহরান শহরের ইতিহাসে প্রথম দক্ষিণ এশীয় ও গত এক শতকের বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী মেয়র।
গত শরতে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরুর সময় জোহরান ছিলেন তুলনামূলক অচেনা রাজনীতিক। কিন্তু শহরের বসবাসযোগ্যতা নিয়ে তাঁর স্পষ্ট বার্তা ও প্রাণবন্ত প্রচার দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তাঁর ঘোষিত কর্মসূচিতে ছিল বাড়িভাড়া স্থির রাখা, সাশ্রয়ী আবাসন নির্মাণ, ন্যূনতম মজুরি ঘণ্টায় ৩০ ডলার করা, বাস পরিবহনসেবা ফ্রি করা, ধনীদের ওপর কর বাড়ানোসহ নানা উদ্যোগ।
হাস্যোজ্জ্বল জোহরান মামদানি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন উইয়র ক বছর বয়স প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
জোহরান মামদানির সাফল্যে ডেমোক্র্যাটদের উচ্ছ্বাস; কিন্তু ক্ষমতায় ফেরা কি সহজ হবে
যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতা ও নেতৃত্ব—দুটিই হারানোর এক বছর পর ডেমোক্রেটিক পার্টি এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে।
মাসের পর মাস আত্মসমালোচনার পর এ সপ্তাহে তিনটি বড় নির্বাচনী লড়াই ডেমোক্র্যাটদের নতুন করে অতিপ্রয়োজনীয় গতি ও আত্মবিশ্বাস এনে দিয়েছে।
৩৪ বছর বয়সী এক ডেমোক্র্যাট সমাজতান্ত্রিক প্রার্থী যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে অপ্রত্যাশিতভাবে জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে ভার্জিনিয়ায় সাবেক একজন সিআইএ কর্মকর্তা এ অঙ্গরাজ্যের প্রথম নারী গভর্নর হয়েছেন।
আবার, নিউ জার্সিতে গভর্নর পদে নৌবাহিনীর সাবেক এক হেলিকপ্টার পাইলট প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প–সমর্থিত রিপাবলিকান প্রার্থীকে পরাজিত করে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্পের বিরোধিতাকে মুখ্য ইস্যু করেছিলেন তিনি।
জয়ী এই তিন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হলেন যথাক্রমে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য পরিষদ সদস্য জোহরান মামদানি, অ্যাবিগেইল স্প্যানবার্গার ও নিউ জার্সি থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য মিকি শেরিল। তিনজনই ভিন্ন ভিন্ন ধরনের প্রচার চালিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও ২০২৮ সালের ভোটের আগে কোনো নির্দিষ্ট নেতৃত্ব না থাকায় ডেমোক্র্যাটরা এখন ভাবছেন কীভাবে তাঁরা একটি স্পষ্ট বার্তা দেবেন, নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠন করবেন ও ভোটারদের ফিরিয়ে আনার নতুন কৌশল তৈরি করবেন।তিন প্রার্থীর এ জয় ডেমোক্র্যাটদের ভবিষ্যৎ পথনির্দেশ নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে—২০২৬ সালের গুরুত্বপূর্ণ মধ্যবর্তী নির্বাচনে ও নির্বাচনের পরে দলের নেতৃত্ব কারা নেবেন—মধ্যপন্থী নাকি বামপন্থীরা?
তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও ২০২৮ সালের ভোটের আগে কোনো নির্দিষ্ট নেতৃত্ব না থাকায় ডেমোক্র্যাটরা এখন ভাবছেন কীভাবে তাঁরা একটি স্পষ্ট বার্তা দেবেন, নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠন করবেন ও ভোটারদের ফিরিয়ে আনার নতুন কৌশল তৈরি করবেন।
কেউ কেউ মনে করেন, জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয়সংকট মোকাবিলায় মনোযোগ বাড়িয়ে ডেমোক্র্যাটরা এ লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন। অন্যরা বলেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আরও জোরালো রাজনৈতিক অবস্থান নেওয়া হবে জরুরি।
ভার্জিনিয়ার গভর্নর পদে বিজয়ী অ্যাবিগেইল স্প্যানবার্গার (ডানে)