প্রথমে প্রবাসীদের তথ্য সংগ্রহ, এরপর অনুসরণ করে ডাকাতি
Published: 7th, August 2025 GMT
দেশে আসা প্রবাসীদের তথ্য সংগ্রহ করা হয় হোয়াটসঅ্যাপে। বিমানবন্দরে নামার পর অনুসরণ করা হয়। এরপর নির্জন সড়কে গাড়ি থামানো হয় ধাক্কা দিয়ে। কেড়ে নেওয়া হয় যাবতীয় মালামাল। ডাকাত দলের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর দেশে আসা প্রবাসীদের মালামাল ডাকাতির এ তথ্য জানায় পুলিশ। এক প্রবাসীর ডাকাতির মামলার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ চক্রটির সন্ধান পায়। গ্রেপ্তার সাতজন হলেন মো.
পুলিশ জানায়, সামসু উদ্দিন নামের দুবাই থেকে আসা এক প্রবাসী গত ২১ জুলাই সকাল আটটার দিকে নগরের অলংকার এলাকায় বাসায় আসার সময় বন্দর লিংক রোডে ডাকাতির শিকার হন। ডাকাত দল তাঁর কাছে থাকা ১৯ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এ ঘটনায় প্রবাসী বাদী হয়ে হালিশহর থানায় মামলা করেন। তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ ডাকাতিতে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটির মাধ্যমে চালককে শনাক্ত করে। পরে একে একে বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (পশ্চিম) কবির হোসাইন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে মজিবুল হক দুবাইপ্রবাসী মো. ফয়সালের কাছ থেকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে দেশে আসা যাত্রীদের আগমনের তারিখ, ছবিসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেন।
কবির হোসাইন ভূঁইয়া প্রবাসীর মালামাল লুটের ঘটনাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রবাসী সামসু উদ্দিন ২১ জুলাই বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে বাড়ি ফেরার জন্য একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করেন। তাঁর আসার কথা আগেই জেনেছিলেন আসামি মনির উদ্দিন। এ কারণে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রধান ফটকেও অবস্থান নেন তিনি। এরপর মনির, আলীম হাওলাদার, রুবেলসহ আসামি একটি মাইক্রোবাস নিয়ে প্রবাসী সামসু উদ্দিনের অটোরিকশা অনুসরণ করতে থাকেন। প্রবাসীকে বহনকারী অটোরিকশাটি বন্দর লিংক রোডের বারুণীঘাট ব্রিজের ওপর পৌঁছালে পেছন থাকা মাইক্রোবাস দিয়ে অটোরিকশায় ধাক্কা দেওয়া হয়। হঠাৎ ধাক্কা লাগায় অটোরিকশাটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন মাইক্রোবাস থেকে নেমে আসামিরা প্রবাসীর কাছ থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ ১৯ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যান। পরে চান্দগাঁও এলাকায় স্বর্ণালংকার বিক্রি করেন। বাকি মালামাল বিক্রি করে তাঁরা টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেন। এভাবে সুযোগ বুঝে প্রবাসীদের মালামাল ডাকাতি করে চক্রটি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রব স দ র
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে গভীর রাতে অস্ত্রের মুখে ৭ জনকে জিম্মি করে সোনার দোকানে ডাকাতি
যশোরের অভয়নগর উপজেলার একটি সোনার দোকানে ডাকাতি হয়েছে। গতকাল রোববার গভীর রাতে মশিয়াহাটী বাজারের সৌখিন জুয়েলার্সে এ ঘটনা ঘটে।
দোকানটির মালিক গৌতম কর্মকার (৫০)। তিনি মনিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
গৌতম কর্মকার জানান, গতকাল রাত ১০টার দিকে তিনি দোকান বন্ধ করে বাড়িতে যান। গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনে একটি কল আসে। অপর প্রান্ত থেকে তাঁকে জানানো হয়, তাঁর সোনার দোকানে ডাকাতি হচ্ছে। কিন্তু ভয়ে তিনি রাতে বাড়ি থেকে বের হননি। আজ সকালে দোকানটিতে গিয়ে তিনি ডাকাতির আলামত দেখতে পান।
গৌতম কর্মকারের দাবি, তাঁর দোকানের লকারে প্রায় ২ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও ২৪ ভরি ওজনের রুপার গয়না ছিল। এগুলোর বাজারমূল্য চার লাখ টাকার বেশি। ডাকাত দলটি এগুলোর সব লুট করেছে।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গতকাল রাত ২টার দিকে ১০ থেকে ১২ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল মশিয়াহাটী বাজারে আসে। তাদের সবার মুখ কাপড়ে দিয়ে বাঁধা ছিল। একপর্যায়ে অস্ত্রের মুখে একজন নারীসহ বাজারের অন্তত সাতজনকে দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে এবং মুখে টেপ লাগিয়ে ফেলে রাখে। এরপর সৌখিন জুয়েলার্সের কলাপসিবল গেটের একটি পাশ এবং শাটারের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে লকারের তালা ভেঙে সোনা ও রুপার গয়না নিয়ে যায় তারা। ভোর চারটা পর্যন্ত সেখানে ডাকাতি হয়। এ সময় শব্দ শুনে ঘর থেকে বের হন স্থানীয় বাসিন্দা বিকাশ বিশ্বাস (৬০) ও তাঁর স্ত্রী প্রতিমা বিশ্বাস (৫৫)। ডাকাতেরা অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে প্রতিমা বিশ্বাসের গলার একটি সোনার হার নিয়ে যায়।
মশিয়াহাটী বাজারের পাশে সুজাতপুর গ্রাম। ওই গ্রামের কৌশিক দাস (১৬) জানায়, গতকাল রাতে ঘুম আসছিল না। রাত ২টা ২০ মিনিটের দিকে হেঁটে বাজারের দিকে যাচ্ছিল। বাজারে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ডাকাতেরা তাকে ধরে ফেলে। এরপর তার দুই হাত দড়ি দিয়ে পেছনে বেঁধে মুখে চওড়া স্কচটেপ লাগিয়ে দেয়।
কৌশিক দাস বলে, ‘ডাকাত দল চলে যাওয়ার পর ভোর চারটার দিকে আমি কৌশলে হাতের বাঁধন খুলে ফেলি। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যদের হাত ও মুখের স্কচটেপ খুলে দিয়েছি।’
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম রবিউল ইসলাম, বিষয়টি চুরি না ডাকাতি, তা তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।