লাশ নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
Published: 10th, August 2025 GMT
রংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনিতে নিহত রুপলাল দাসের লাশ নিয়ে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধের পর প্রশাসনের আশ্বাসে তাঁরা সড়ক ছেড়ে দেন।
গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা এলাকায় রুপলাল দাসসহ (৪০) দুজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। রুপলালের বাড়ি উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর এলাকায়। নিহত অন্যজন হলেন মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়াভাটা গ্রামের প্রদীপ লাল (৩৫)।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের বেলতলী এলাকায় রুপলালের লাশ রেখে এলাকাবাসী অবরোধ শুরু করেন। এতে সড়কের দুই দিকেই শত শত যানবাহন আটকে পড়ে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল রানা ও সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে রাত সাড়ে ৭টার দিকে বিক্ষোভকারীরা সড়ক থেকে সরে যান।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত রুপলালের স্ত্রী ভারতী রানী দুপুরে তারাগঞ্জ থানায় ৫০০ থেকে ৭০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, গত শনিবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটের দিকে মিঠাপুকুরের ছরান বালুয়া এলাকা থেকে ভাতিজি জামাই প্রদীপ লালকে নিয়ে ভ্যানে করে বাড়ি ফেরার পথে সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা মোড়ে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি তাঁদের পথরোধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরই একপর্যায়ে প্রদীপ লালের কালো ব্যাগ তল্লাশি করে বোতলে দুর্গন্ধযুক্ত পানীয় ও কিছু ওষুধ পান। বোতলের ঢাকনা খোলার পর দুর্গন্ধে বুড়িরহাট এলাকার কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে লোকজন উত্তেজিত হয়ে রুপলাল ও প্রদীপ লালকে বুড়িরহাট উচ্চবিদ্যালয়ে মাঠে নিয়ে লাঠিসোঁটা ও লোহার রড দিয়ে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে তাঁদের কান দিয়ে রক্ত পড়তে শুরু করে। তাঁদের তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক রুপলালকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রদীপ লালকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে প্রদীপ লাল ভোর ৪টায় মারা যান।
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ ফারুক বলেন, ‘রুপলালের লাশ নিয়ে স্থানীয়রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। আমরা তাঁদের আশ্বাস করেছি। তাঁরা লাশ নিয়ে ফিরে গেছেন।’
আরও পড়ুনস্বজন রাস্তা না চেনায় গেলেন এগিয়ে আনতে, পথে দুজনকেই পিটিয়ে হত্যা১২ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনদুজনকে পিটিয়ে হত্যা : ‘এ্যালা মুই কেমন করি বাঁচিম, কার কাছোত বিচার চাইম’১০ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র পল ল র ব ড় রহ ট র ধ কর উপজ ল অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
জাবিতে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য ঘোষিত ছাত্রদলের হল কমিটিতে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এবং ত্যাগীদের অবমূল্যায়নের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন মূল্যায়ন না পাওয়া নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাত দশটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে কাজী নজরুল ইসলাম হল, রফিক-জব্বার হল অতিক্রম করে জেনারেটর বাজার হয়ে পুনরায় বটতলায় শেষ হয়।
এসময় তারা ‘বৈষম্যের কমিটি, মানি না মানবো না’, ‘অনিয়মের কমিটি, মানি না মানবো না’, ‘পকেট কমিটি, মানি না মানবো না’, ‘সুপার ফাইভের কমিটি, মানি না মানবো না’, ‘ছাত্রলীগের কমিটি, মানি না মানবো না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
জানা যায়, একই দিনে দুপুরের দিকে জাবির ১৭টি আবাসিক হল ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এছাড়া জানা যায়, গত ৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষ (৩৯ ব্যাচ) থেকে আহ্বায়ক এবং ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ (৪০ ব্যাচ) থেকে সদস্যসচিব নিয়ে ঘোষিত ১৭৭ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটিকে বর্ধিত করা হয়েছে। নতুন বর্ধিত আহ্বায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে ৭৫ জন এবং সদস্য হিসেবে ২৯৬ জন জায়গা পেয়েছেন।
এই হল কমিটি ও বর্ধিত কমিটিতে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা–কর্মীরা ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলে রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া জাবি শাখা ছাত্রদলের একজন যুগ্ম-আহ্বায়ক জানান, কমিটিতে ত্যাগী ও যোগ্য কর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি করে এমন অনেককে রাখা হয়েছে, যারা বিগত আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী কোনো আন্দোলন সংগ্রামে ছিল না। কমিটিতে ছাত্রলীগের এবং বিতর্কিত অনেককে স্থান দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।
মিছিল শেষে বটতলা এলাকায় জমায়েত হয়ে স্লোগান দেওয়ার সময় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ বছরের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মোটরসাইকেলে সেই স্থান অতিক্রম করছিলেন। সেসময় তাকে ধাওয়া দেন যথাযথ মূল্যায়ন না পাওয়া নেতাকর্মীরা।
ঢাকা/আহসান/এস