প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের প্রতিবাদে ১৫ দিনের কর্মসূচি উদীচীর
Published: 8th, November 2025 GMT
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শরীরচর্চার শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিলের প্রতিবাদে দেশজুড়ে ১৫ দিন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর একাংশ। আজ শনিবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক এবং দেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে জানান, এই প্রতিবাদী কর্মসূচি আজ শনিবার থেকেই শুরু হয়েছে। চলবে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত।
অমিত রঞ্জন দে বলেন, ‘শিশুদের সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন করে গড়ে তোলার চক্রান্ত রুখে দিতে উদীচী সব রকমভাবে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ জানিয়ে যাবে।’ ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ, মানববন্ধন, গানের মিছিল, গোলটেবিল আলোচনা এবং বিশিষ্টজনদের বিবৃতি প্রদান রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে নজরুলসংগীত শিল্পী পরিষদের সভাপতি শিল্পী সুজিত মোস্তফা বলেন, ‘সংস্কৃতিতে আঘাত করলে আত্মপরিচয়ে আঘাত করা হয়। ইসলামের সূতিকাগার সৌদি আরবে যখন সংগীতশিক্ষার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, তখন বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে সংগীতের শিক্ষকদের বাদ দেওয়া হচ্ছে। যেভাবে চলছে, তাতে মনে হয় শিক্ষাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।’
সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনার সময় উদীচীর সহসাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে এখন ঋতুভিত্তিক উৎসবগুলো করার জন্যও জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। এর সবই ভবিষ্যতের জন্য আরও অশনিসংকেত।
গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সহসম্পাদক মানজার চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের যত সুন্দর যত শুভ, তা নষ্ট করার প্রক্রিয়া রয়েছে। এখন ভুঁইফোড় সংগঠন চর দখলের মতো করে দখল করে নিচ্ছে সবকিছু। আমরা নিজেদের স্বকীয়তা, সৌন্দর্য নষ্ট করে সাম্প্রদায়িকতার দিকে যাত্রা করছি।’
উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদ সেলিমের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সহসভাপতি কামারুজ্জামান ভূঁইয়া, রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থার সভাপতি মকবুল হোসেন, সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সহসাধারণ সম্পাদক মহাদেব ঘোষসহ অনেকে।
এদিকে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর আরেক অংশ আগামী রোববার বিকেল চারটায় ‘উদীচী থেকে যমুনা’ শীর্ষক গানের মিছিল করবে বলে জানিয়েছে। রাজধানীর তোপখানা রোডে অবস্থিত উদীচীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে এই গানের মিছিল হবে।
আজ এক বিবৃতিতে উদীচীর এই অংশ বলেছে, ‘ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দলের হুমকির মুখে সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষাবিষয়ক শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে, যার মধ্য দিয়ে মূলত একটি বিশেষ গোষ্ঠীর কাছে সরকারের নতজানু চরিত্রের প্রকাশ পেয়েছে বলে মনে করে উদীচী।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বর্ণিল আয়োজনে ‘ইয়ামাহা বাইক কার্নিভ্যালে’
বর্ণাঢ্য আয়োজন ও হাজারো রাইডারের অংশগ্রহণে শনিবার অনুষ্ঠিত হলো ‘ইয়ামাহা বাইক কার্নিভ্যাল’। ঢাকার পূর্বাচলের বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে এ আয়োজন দেশের বাইকপ্রেমীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
২০১৬ সালে ইয়ামাহার সঙ্গে এসিআই মটরসের পথচলা শুরু। ১১ নভেম্বর এই যাত্রা ৯ বছরে পদার্পণ করবে। এ উপলক্ষে ইয়ামাহা বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত দিনব্যাপী উৎসবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা রাইডাররা উপভোগ করেন টেস্ট রাইড, জিমখানা, স্টান্ট শোসহ নানা রোমাঞ্চকর বাইকিং কার্যক্রম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এসিআই মটরসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুব্রত রঞ্জন দাস। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক আরাফাত হোসেনসহ অন্য কর্মকর্তারা।
আয়োজনটি নিয়ে সুব্রত রঞ্জন দাস বলেন, ‘প্রতিবছর আমরা দিবসটিকে উদ্যাপন করি। এবার বড় পরিসরে আয়োজন করছি। সারা দেশের সাত হাজারের বেশি রাইডার এখানে অংশ নিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শুধু মোটরসাইকেল বিক্রি নয়, বাইক-সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতে এ আয়োজনকে আন্তর্জাতিক মানের করার পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে দেশের বাইরের বাইকাররাও অংশ নেবে। আর ইয়ামাহা এখন তরুণদের স্বপ্নের প্রতীক—এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য। এ ধারাবাহিকতায় আমরা বাইক ইন্ডাস্ট্রিকে নেতৃত্ব দিচ্ছি।’
এসিআই মটরসের মহাব্যবস্থাপক আরাফাত হোসেন বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, ইয়ামাহা শুধু একটি ব্র্যান্ড নয়, এটি এক বিশাল পরিবার। সামনে আরও উদ্ভাবন, আরও সেবা ও আরও ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’
মোটরসাইকেল ইন্ডাস্ট্রিতে ইয়ামাহা একটি জনপ্রিয় নাম, তরুণ প্রজন্মের কাছে যা ‘স্বপ্নের বাইক’ হিসেবে পরিচিত। বর্তমান বাজারে বিক্রির শীর্ষেও রয়েছে ইয়ামাহা। জনপ্রিয় এই ব্র্যান্ডের সফলতার পেছনে রয়েছে এর অনুমোদিত পরিবেশক এসিআই মটরস্। যাত্রার শুরু থেকেই নতুন নতুন মডেল ও বিক্রয়োত্তর সেবার মাধ্যমে বাইকপ্রেমীদের মন জয় করে নিয়েছে ইয়ামাহা ও এসিআই মটরস্, যাদের সব কার্যক্রমই হয় গ্রাহকের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিয়ে।
অনুষ্ঠানে আসা কুমিল্লা ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাবের সদস্য ইভা সরকারের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। ইভা বলেন, ‘শখ করেই বাইক রাইড করি। এটা আমাদের বাইকারদের একটি মিলনমেলা। এখানে এসে ভালো লাগল।’
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাবের সদস্য কামারুজ্জামানও এসেছিলেন এ আয়োজনে। তিনি বলেন, ‘ইতিপূর্বে অনেক অনুষ্ঠানে এসেছি। এবারের আয়োজন একেবারেই ভিন্ন। দেশের আর কোনো বাইক কোম্পানি নেই, যারা এভাবে রাইডারদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে চিন্তা করে। এ জন্য এ কমিউনিটির সদস্য হতে পেরে আমি গর্বিত।’
ইয়ামাহা বাইক কার্নিভ্যাল আয়োজনে বিভিন্ন কার্যক্রমের পাশাপাশি ছিল ইয়ামাহার বিভিন্ন সামগ্রীর প্রদর্শনীও। সন্ধ্যায় বিশেষ আকর্ষণ ছিল কণ্ঠশিল্পী কনা ও ‘নগরবাউল’ জেমসের পরিবেশনা, যা উপস্থিত বাইকপ্রেমীদের মধ্যে উৎসবের উচ্ছ্বাস আরও বাড়িয়ে দেয়।
বর্ণাঢ্য এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে গ্রাহক ও রাইডারদের সঙ্গে বন্ধন আরও সুদৃঢ় করল ইয়ামাহা ও এসিআই মটরস্—এমনই মতামত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।