শহরে দিন দিন কমছে সবুজ। তাপমাত্রা বাড়ছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বায়ুদূষণ—এসব কোনো খবরই এখন আর নতুন নয়। এত কিছুর পরও প্রতিনিয়ত মানুষ শহরমুখী হচ্ছে, বাড়ছে পরিবেশ দূষণ। এসব সমস্যার সমাধানের জন্যই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের দল ‘নিউরাল নিনজাস’ তৈরি করেছে এক বিশেষ প্রকল্প, নাম ‘আর্বানোভা’। এই প্রকল্পের সুবাদে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ‘আন্তর্জাতিক ডাটা সায়েন্স অলিম্পিয়াড-২০২৫’-এ তারা পেয়েছে ব্রোঞ্জ পদক।

নিউরাল নিনজাস দলে দলনেতা অপূর্ব কুমার ছাড়াও ছিলেন দীপংকর মিত্র ও আবরার ফাইয়াজ। তবে ডকুমেন্টেশন ও রিসার্চের কাজে সাহায্য করেছেন বাংলাদেশি তিন শিক্ষার্থী—নির্ঝর সরকার, মোহাম্মদ আলী ও রাজেশ আহমেদ।

আন্তর্জাতিক ডাটা সায়েন্স অলিম্পিয়াড ফাউন্ডেশন প্রতি বছর ইমার্জিং টেকনোলজিস অলিম্পিয়াডের অংশ হিসেবে এই প্রতিযোগিতাটির আয়োজন করে। নিউরাল নিনজাস দলের সদস্যরা সেখান থেকেই প্রতিযোগিতাটির খোঁজ পান। পরে কয়েক ধাপে অনলাইন সাবমিশনের মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করেন তাঁরা। দলটি অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছিল প্রায় দুই মাস আগে, আগস্ট মাসে। এই অল্প সময়ের মধ্যে তাদেরকে মডেল তৈরি, ডেটা সংগ্রহ, প্রিপ্রসেসিং, এবং ভিজুয়াল অ্যানালিটিকস ড্যাশবোর্ড ডিজাইন—সবই করতে হয়েছে। অংশ নিতে হয়েছে প্রিলিমিনারি রাউন্ড (যেখানে ডেটা সমস্যার সমাধান ও প্রাথমিক আইডিয়া জমা দিতে হয়) ও কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডে (প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত দলগুলোকে তাদের সম্পূর্ণ প্রকল্প তৈরি করে জমা দিতে হয়)।

আর্বানোভা মূলত এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত একটি ‘নগর-পরিকল্পনা প্ল্যাটফর্ম’। এটি স্যাটেলাইট ডাটা ব্যবহার করে পরিসংখ্যান ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে উপাত্ত বিশ্লেষণ করবে। বিশ্লেষণ শেষে এআই নগর-পরিকল্পনা সংক্রান্ত উপযুক্ত সমাধান বের করে দেবে। দলটির মতে, এই প্রক্রিয়ায় কয়েক মাসের নগর-পরিকল্পনার বিশ্লেষণ কয়েক মুহূর্তেই করে ফেলা সম্ভব। দলের সদস্যদের আইডিয়াটা মাথায় আসে একটি একাডেমিক কোর্স করার সময়। তাঁরা খেয়াল করেন, নগর-পরিকল্পনায় স্যাটেলাইট ডাটা ব্যবহার করার অনেক সুযোগ আছে। কিন্তু বাংলাদেশে তা খুব কমই ব্যবহার করা হয়। এমন এক উপলব্ধি থেকেই এই আইডিয়ার জন্ম।

তবে দুর্ভাগ্যবশত আগে থেকে অবগত না থাকায় জাতীয়ভাবে বিসিওএলবিডি (ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ) এর বাংলাদেশ রাউন্ডে অংশ নিতে পারেনি দলটি। দলের মোট ৬ সদস্যের ৩ জন বুয়েটের এবং ৩ জন চীনের উঝৌ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। তাই কাজটির মূল অনুপ্রেরণা বুয়েটের হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের চীনের প্রতিনিধিত্ব করতে হয়েছে।

দলের প্রধান অপূর্ব কুমার বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমরা আমাদের ফাইনাল পরীক্ষার মাঝে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারব কিনা সেটা নিয়েই অনিশ্চিত ছিলাম, সেখান থেকে এত দূর আসা। তা ছাড়া ফাইনালের দিন সকল টিমের প্রেজেন্টেশন দেখে কিছুটা দ্বিধায় পড়ে গিয়েছিলাম। তাই রেজাল্ট ঘোষণার মুহূর্তটি ছিল অবিশ্বাস্য। পৃথিবীর ৩০টিরও বেশি দেশের মধ্যে নিজেদের জায়গা করে নেওয়াটা ছিল একই সঙ্গে গর্বের ও আনন্দের।’ নিউরাল নিনজাস দলের তৈরি আর্বানোভা প্রজেক্টটি মূলত শহর এলাকায় সবুজ গাছপালার পরিমাণ কমে যাওয়া, তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও বায়ুদূষণ—এই তিনটি সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করে।

আরও পড়ুনকারওয়ান বাজারে নতুন রূপে ফিরে এল ‘পেয়ালা’ ক্যাফে০৩ নভেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অল ম প য় ড সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

দীপিকার লিভারের ২২ শতাংশ কেটে ফেলা হয়েছে

হিন্দি টিভি সিরিয়ালের জনপ্রিয় মুখ দীপিকা কাক্কর লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার লিভারের একটি অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। ভারতী সিং ও তার স্বামী সঞ্চালিত পডকাস্টে হাজির হয়ে এসব তথ্য জানান দীপিকা।  

এ বিষয়ে দীপিকা কাক্কর বলেন, “আমার শরীর থেকে প্রায় ১১ সেন্টিমিটার আকারের একটি টিউমার অপসারণ করা হয়েছে, যা লিভারের প্রায় ২২ শতাংশ।” 

আরো পড়ুন:

বয়স্করা প্রেমের সম্পর্ক লুকিয়ে রাখতে বেশি পারদর্শী: টুইঙ্কেল

ডিভোর্সের গুঞ্জনের মাঝে হাসপাতালে মাহি

বর্তমান শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে দীপিকা বলেন, “নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আবারো এফএপিআই স্ক্যান করাব। এফএপিআই স্ক্যান অনেকটা সিটি স্ক্যানের মতো। তবে এটি বিশেষভাবে শরীরে ক্যানসারের কোষ শনাক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হয়। অস্ত্রোপচার বা চিকিৎসা শুরু করার আগে ক্যানসার কতটা ছড়িয়েছে তা বুঝতে এটি সাহায্য করে।” 

ক্যানসারের সেল শুধু টিউমারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, তার শরীরের অন্য কোনো অঙ্গে ছড়ায়নি। ক্যানসারযুক্ত অংশটি লিভারের সঙ্গে অপসারণ করা হয়েছে। মূলত, এটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কেটে ফেলা হয় বলে জানান দীপিকা। 

দীপিকার রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকরা বিস্মিত হয়েছিলেন। কারণ তার জীবনযাপন অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। এ বিষয়ে দীপিকা বলেন, “স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের পরও কীভাবে আমার ক্যানসার হয়েছে, তার উত্তর চিকিৎসকরা দিতে পারেননি।” 

ইউনিভার্সিটি অব মুম্বাই থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে বিমানবালা হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন দীপিকা কাক্কর। অসুস্থতাজনিত কারণে ৩ বছর পর এ চাকরি ছেড়ে দেন। ২০১০ সালে অভিনয়ে পা রাখেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে অভিনয়ে খ্যাতি কুড়ান এই অভিনেত্রী।  

২০১১ সালে রওনক নামে একজনকে বিয়ে করেন দীপিকা। ২০১৫ সালে ভেঙে যায় এ সংসার। ২০১৮ সালে সহঅভিনেতা শোয়েব ইব্রাহিমকে বিয়ে করেন দীপিকা। ২০২৩ সালের ২১ জুন পুত্রসন্তানের মা হন দীপিকা। 

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ