জোহরান মামদানি কেন নিজ এলাকা কুইন্সে কম ভোট পেলেন
Published: 8th, November 2025 GMT
জোহরান মামদানি এরই মধ্যে ইতিহাস গড়ে ফেলেছেন। ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে নিউইয়র্ক নগরের ১১১তম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। শহরটির ইতিহাসে প্রথম মুসলিম ও অভিবাসী পরিবারে জন্ম নেওয়া মেয়র তরুণ এ রাজনীতিক।
ভোটের ফলাফলে দেখা গেছে, নিউইয়র্কের অন্যান্য কয়েকটি এলাকার তুলনায় জোহরান মামদানি নিজের এলাকা কুইন্স বরোতে কম ভোট পেয়েছেন। কিন্তু কেন? ডেমোক্রেটিক পার্টির স্বেচ্ছাসেবক, সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোর প্রচার বিভাগ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সঙ্গে কথা বলে উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।
দেখা গেছে, নিউইয়র্কের ব্রংস বরোতে জোহরান মামদানি ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। তিনি ব্রুকলিনে ৫৬ দশমিক ৮ শতাংশ, ম্যানহাটনে ৫২ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। কিন্তু নিজের এলাকা কুইন্সে পেয়েছেন ৪৭ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট।
কুইন্সের এস্টোরিয়া এলাকার বাসিন্দা জোহরান মামদানি। সেখানেই বেড়ে ওঠা তাঁর। মেয়র পদে এখান থেকেই প্রচার শুরু করেছিলেন তিনি। পরে প্রচার ছড়ায় পুরো নগরে। নগরজুড়ে অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবক যুক্ত হন তাঁর প্রচার দলে।
২০২৪ সালে জোহরান মামদানির প্রচার দলে যুক্ত হয়ে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করেছেন জে মোল্লা সানি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিউইয়র্কের পাঁচটি বোরোর মধ্যে এই কুইন্সে নানা ধরনের ভুল খবর বেশি ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রচারের একেবারে শেষ দিকে এসে কুমোর প্রচার দল নানা অপপ্রচার ছড়ানোয় বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অনেক ভোটার ভোট দেননি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যও ভোটারদের ওপর প্রভাব ফেলেছে।
জোহরান মামদানির প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমোর হয়ে প্রচারে কাজ করেছেন মওলানা কাজী কাইয়ুম। ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় ছিলেন তিনি। কাজী কাইয়ুম প্রথম আলোকে বলেন, ‘৩৫ বছর ধরে ইমামতি আর অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে কাজ করছি। আমি যা করেছি ও বলেছি, তার সঙ্গে এখনো সম্পূর্ণ একমত।’
জোহরান মামদানি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জোহরান মামদানিকে বেছে নিয়ে আমরা সার্বভৌমত্ব হারিয়েছি: ডোনাল্ড ট্রাম্প
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বুধবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘সার্বভৌমত্ব’ হারিয়েছে। কারণ, নিউইয়র্কের ভোটাররা ‘‘বামপন্থী’’ জোহরান মামদানিকে (জোহরান একজন ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট) তাঁদের পরবর্তী মেয়র হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমরা বিষয়টা সামলে নেব।’ তবে তিনি এর অর্থ ব্যাখ্যা করেননি; বরং দাবি করেন, দেশের সবচেয়ে বড় শহরটি এখন ‘কমিউনিস্ট শহর’ হয়ে উঠবে।
মায়ামিতে গতকাল এক ভাষণে ট্রাম্প এসব মন্তব্য করেন। মামদানির বড় জয়ের একদিন পরই তিনি এ–ও মনে করছেন, শিগগিরই ফ্লোরিডার এ শহর হবে সেসব মানুষের আশ্রয়স্থল, যাঁরা নিউইয়র্কের কমিউনিজম থেকে পালিয়ে আসবেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মার্কিনদের সামনে এখন খুবই স্পষ্ট এক সিদ্ধান্ত—আমাদের সামনে আছে কমিউনিজম আর সাধারণ বুদ্ধির মধ্যে এক পছন্দ।’ তিনি আরও বলেন, এ সিদ্ধান্ত হচ্ছে ‘অর্থনৈতিক দুঃস্বপ্ন’ ও ‘অর্থনৈতিক সাফল্যের বিস্ময়’ এর মধ্যে এক পছন্দ।
আরও পড়ুনডেমোক্র্যাটদের জয়, অর্থনৈতিক সমস্যা—ট্রাম্পের রিপাবলিকানদের জন্য বড় ধাক্কা১৬ ঘণ্টা আগেগত বছরের ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে পরাজিত করার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ট্রাম্প এ ভাষণ দেন। তিনি সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা আমাদের অর্থনীতি উদ্ধার করেছি, স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করেছি, আর একসঙ্গে আমরা আমাদের দেশকে বাঁচিয়েছি—৩৬৫ দিন আগে সেই গৌরবময় রাতে।’
শিগগিরই ফ্লোরিডার এ শহর (মায়ামি) হবে সেসব মানুষের আশ্রয়স্থল, যাঁরা নিউইয়র্কের কমিউনিজম থেকে পালিয়ে আসবেন।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্টনিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানি জয়ী হয়েছেন ট্রাম্পসহ রিপাবলিকান নেতা ও আরও কিছু মহলের তীব্র সমালোচনা এবং বিরোধিতার মধ্যে। ট্রাম্পপন্থী ব্যবসায়ী মহল, রক্ষণশীল গণমাধ্যম বিশ্লেষক এবং ট্রাম্প নিজেও ৩৪ বছর বয়সী দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভুত জোহরানের নীতিমালা ও মুসলিম পরিচয়কে কেন্দ্র করে তাঁকে কঠোরভাবে আক্রমণ করেছিলেন।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে বিজয়োৎসবে জোহরান বলেন, ‘যদি কেউ দেখাতে পারেন যে ট্রাম্পের কারণে একটি দেশ প্রতারিত হয়েছে এবং তাঁকে হারানো যায়, তবে সেটা করতে পারবে সেই শহরই; যেখান থেকেই তিনি নিজে উঠে এসেছেন।’
জোহরান মামদানির জয়ের মুহূর্ত