রাজনৈতিক বিভেদের কারণে সামাজিক সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গেছে: অ্যাটর্নি জেনারেল
Published: 8th, November 2025 GMT
সর্বত্র রাজনৈতিক বিভেদের কারণে দেশের সামাজিক সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গেছে বলে মনে করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, এখন গ্রাম এলাকায় বিয়ে দিতে গেলেও চিন্তা করে আওয়ামী লীগ না বিএনপি, জামায়াত না বিএনপি।
আজ শনিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘একটি কার্যকর বৈষম্যবিরোধী আইন প্রবর্তন’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে অ্যাটর্নি জেনারেল এসব কথা বলেন। সংলাপের আয়োজন করে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ। সহ-আয়োজক ছিল বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ও নাগরিক উদ্যোগ। সহযোগিতা করেছে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)।
সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদে অনুযায়ী সব ধরনের বৈষম্য নিরোধে ২০২২ সালের এপ্রিলে সরকার আইন বৈষম্যবিরোধী আইন, ২০২২–এর খসড়া প্রণয়ন করে। তবে খসড়ার কিছু বিষয়ে নাগরিক সংগঠনগুলো আপত্তি জানিয়ে আসছে।
নাগরিক সংলাপে রাজনৈতিক বৈষম্যের প্রসঙ্গ টেনে অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, সব খাতে রাজনৈতিক বৈষম্য এবং বিভেদের কারণেই আজ দেশের সামাজিক সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গেছে। আগে একজন রাজনৈতিক কর্মী সারা দিন মিছিল করে এসে ভিন্ন মতের মানুষের সঙ্গে এক টেবিলে বসে চা খেতেন, আলোচনা করতেন। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে সুখ-দুঃখের গল্প করতেন। এখন গ্রাম এলাকায় গেলে দেখা যায়, বিয়ে দিতে গেলেও চিন্তা করে আওয়ামী লীগ না বিএনপি, জামায়াত না আওয়ামী লীগ। এই বিভেদ সব সীমারেখাকে অতিক্রম করে সামাজিক সম্পর্ককে নষ্ট করেছে এবং দেশকে অন্ধকারে ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী আইনের খসড়ায় বৈষম্যের যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সেটি সমর্থন করতে পারছেন না বলে মন্তব্য করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি বলেছেন, ‘এখানে বৈষম্যবিরোধিতার কথা বলতে গিয়ে কিছু ক্যাটাগরি (শ্রেণি) করা হয়েছে। আইনের মাধ্যমে বৈষম্য তৈরি করা হচ্ছে। ট্রান্সজেন্ডার বা হিজড়াকে মানুষ হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। একজন মানুষ জন্ম নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সে বাংলাদেশের নাগরিক, সে একজন মানুষ—এই তত্ত্বে এগোতে হবে। সামাজিকভাবে সেই জায়গায় যেতে পারলে সংগ্রাম সফল হবে।’ অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এটা না করে মানুষকে পঙ্গু মানুষ, অসহায় মানুষ, পিছিয়ে পড়া মানুষ, নারী মানুষ—এই শ্রেণিবিভেদের মধ্যে রাখলে সমস্যার সমাধান হবে না; বরং এই সমস্যা সমাজের বিভেদ তৈরি করবে। এটা চিরস্থায়ী বিভেদ আকারে দেখা যাবে।’
সংবিধানের মূল নীতিগুলো আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে চালিকা শক্তি হবে উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এ মূলনীতির মধ্যে আবার কোনো কোনো জায়গায় কিন্তু গরমিল আছে। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব যখন নির্ধারণ করা হচ্ছে, প্রথমে ছয়ের এক অনুচ্ছেদে বলা হচ্ছে ভূখণ্ডের ভিত্তিতে সবাই বাংলাদেশি। আবার দুইয়ে বলা হলো বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী নামে পরিচিতি লাভ করা হবে। তাহলে যাঁরা সাঁওতাল, যাঁরা ম্রো সম্প্রদায়, অন্য ভাষাভাষী; তাঁদের ক্ষেত্রে এখানে বৈষম্য করা হচ্ছে। সাংবিধানিক এই জায়গাগুলো খেয়াল রাখতে হবে।’
নাগরিক সমাজকে ‘সমাজের ক্যানসার’ সঠিকভাবে নির্ণয় করারও আহ্বান জানান অ্যাটর্নি জেনারেল। নারীজাগরণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নারীর প্রতি বৈষম্য যতক্ষণ পর্যন্ত নিরসন না হবে; যে দল তার রাজনৈতিক কর্মসূচিতে, নির্বাচনী ইশতেহারে নারীর প্রতি বৈষম্য বন্ধে কার্যকর কোনো প্রতিশ্রুতি না করবে, নির্বাচনের আগেই সরকারকে অধ্যাদেশ (বৈষম্যবিরোধী আইনের) করতে বাধ্য না করবে; তাদের ভোট দেবেন না।’
মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাওয়া বাংলাদেশ প্রতিটি মানুষের উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান জানান, সেই দেশের মানুষ হিসেবে এখানে কোনো ধরনের বৈষম্য থাক, সেটি তিনি চান না।
নাগরিক সংলাপে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন। এতে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ইউনিভার্সিটি অব আলস্টারের অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ এস আর ওসমানী, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, ঢাকার মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান তানভিরুর রহমান, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, ইউএনডিপি বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা গভর্ন্যান্স ড্রাগান পোপোভিচ, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আরিফ খান প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আস দ জ জ ম ন র জন ত ক ব
এছাড়াও পড়ুন:
গোঁফওয়ালা শাকিবকে দেখে ভক্তদের উল্লাস
একটি সুপারশপের সামনে দিয়ে বয়ে গেছে পাকা রাস্তা। তার ওপরে দাঁড়িয়ে অগণিত মানুষ। কখনো শিস বাজাচ্ছেন, কখনো ‘উই লাভ শাকিব খান’ বলে স্লোগান দিচ্ছেন ভক্ত-অনুরাগীরা।
অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায়, শো রুমের শাটার ধীরে ধীরে উঠছে, অপর প্রান্তে কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছেন। সময়ের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিকে পুরোপুরি দেখা যায়, আর তাকে দেখেই উল্লাস করতে থাকেন উৎসুক জনতা। কারণ দাঁড়িয়ে থাকা লোকটি অন্য কেউ নেন, ঢালিউড কিং শাকিব খান।
আরো পড়ুন:
শাকিবের নায়িকা হতে ইধিকার ৩৮ লাখ টাকা পারিশ্রমিক দাবি?
‘রাক্ষস’ ছেড়ে ‘বনলতা এক্সপ্রেস’-এ সাবিলা নূর
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে এমন দৃশ্য দেখা যায়। তবে শাকিব খানকে একদম নয়া লুকে দেখা যায়। গোঁফওয়ালা শাকিব খানকে দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন নেটিজেনরাও। দেলোয়ার নামে একজন লেখেন, “কিরে বাবা বয়স খালি কমে, বাড়ে না।” মুন্না লেখেন, “বস।” এমন অসংখ্য মন্তব্য ভেসে বেড়াচ্ছে নেট দুনিয়ায়।
কিছু দিন আগে প্রকাশিত হয়েছে শাকিব খানের পরবর্তী সিনেমা ‘সোলজার’ এর লুক; যা বিশেষভাবে নজর কাড়ে। সেই লুকেই শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর বনানীতে একটি সুপারশপের আউটলেট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির হন শাকিব খান। তার যাওয়ার খবরে বনানীতে ভিড় করেন ভক্ত-অনুরাগীরা।
নিঃসন্দেহে বলা যায়, ক্যারিয়ারে দারুণ সময় পার করছেন শাকিব খান। বাংলা চলচ্চিত্রের শীর্ষ এই নায়ককে নিয়ে নির্মাতা সাকিব ফাহাদ নির্মাণ করছেন ‘সোলজার’ সিনেমা। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করছেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী তানজিন তিশা। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছর সিনেমাটি মুক্তি পাবে।
ঢাকা/শান্ত