ফাস্ট বোলিং ক্রিকেটে সবচেয়ে সুন্দর ও রোমাঞ্চকর ব্যাপার। একজন ফাস্ট বোলারের বোলিংও ক্রিকেটে সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্যগুলোর একটি। কিন্তু তাঁদের বল খেলার মতো ভয়ংকর আর কিছুও এই খেলায় নেই। অস্ট্রেলিয়ান সাংবাদিক জ্যারড কিম্বার তাঁর ‘দ্য আর্ট অব ব্যাটিং’ বইয়ে ফাস্ট বোলিং নিয়ে একটি অধ্যায় রেখেছেন, যেখানে এই শিল্প কী, কীভাবে খেলতে হয়, কিংবদন্তিরা খেলেছেন কীভাবে—তার বয়ান আছে। আসুন জেনে নেই কী আছে ফাস্ট বোলিং নিয়ে বইটির ‘র‍্যাপিড’ অধ্যায়ে।ফাস্ট বোলিংয়ের মতো ভীতিকর আর কিছু নেই

মনে মনে উত্তেজনায় ফেটে পড়ছিলেন কোরি রিচার্ডস। দ্রুত রান তুলতে তাঁকে আগে নামানো হবে। সে জন্য বেশি দেরি করতে হলো না। নিউ সাউথ ওয়েলস ওপেনার ক্রেগ সিমন্স বোল্ড হতেই তিনে নামলেন। ক্রিজে গিয়েই বুঝলেন কিসের মুখোমুখি হতে হবে। অন্য প্রান্তের সতীর্থ, অস্ট্রেলিয়ান টেস্ট ওপেনার ফিল জ্যাকস তাঁকে সাবধান করেছেন, ‘গতি অনেক বেশি।’

রিচার্ডস ভাবলেন কতই–বা আর হবে! পাত্তা দিলেন না। একটু পর অবশ্য দিতে হলো। খাটো লেংথ থেকে উঠে আসা বলে মাথাটা সরাতে গিয়ে বুঝলেন দেরি হয়ে গেছে। ভাগ্যিস, বলটা সুইং করে বেরিয়ে গেছে, নইলে! তবে বেশিক্ষণ দুশ্চিন্তা করতে হলো না। রিচার্ডস একটু পরই স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট। মাথু ফিলিপস, ব্র্যাড হাডিন, জ্যাকস নিজেও বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না।

সেই স্পেল নিয়ে জ্যাকস পরে (লেখককে) বলেছিলেন, ‘আমার মুখোমুখি হওয়া সবচেয়ে গতিময় স্পেল। শোয়েব আখতার ও ডেল স্টেইনকে খেলেছি। কিন্তু ওটা অন্য পর্যায়ের ছিল। অন্য মাত্রার গতি।’
জ্যাকস যে বোলারের বিষয়ে বলছিলেন তাঁর নাম শন টেইট। সেদিন পাঁচ স্পেলে ১০ ওভারে ৪১ রানে (১৪টি ওয়াইড) ৬ উইকেট নেন।
ওটা সিম বোলিং ছিল না। ওটা ছিল শুধু গতি, গতি এবং আরও গতি।

আরও পড়ুনভালো ব্যাটসম্যানরা কি অন্ধকারেও দেখতে পান০২ নভেম্বর ২০২৫

ফাস্ট বোলিংয়ের মুখোমুখি হওয়াটা আসলে কী? ওয়েস্টার্ন সিনেমার উদাহরণ টেনে ইংল্যান্ডের সাবেক ডেভিড ‘বাম্বল’ লয়েড বলেন, ‘এটা আসলে শুটআউট অ্যাট দ্য ও.

কে. কোরাল। সে তোমার খুলিটা ওড়াতে চায়। তোমার চাই সাহস, ওপেনার হলে আরও বেশি। তবে সফল হতে সাহস থাকলেই চলবে না, দুর্দান্ত দক্ষতা এবং একটু ভাগ্যের পরশও লাগে। তবে ফাস্ট বোলিং খেলার মূল রোমাঞ্চের জায়গাটা হলো, আঘাত যে পেতে পারি, তা জানা থাকে।’

ফ্রেড ট্রুম্যান পরিচিত ছিলেন ‘ফায়ারি ফ্রেড’ নামে

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনের আবাসিক ও জ্বালানি অবকাঠামোতে রাশিয়ার হামলা, নিহত ১১

ইউক্রেনের আবাসিক ও জ্বালানি অবকাঠামোতে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতভর চালানো হামলায় ইউক্রেনজুড়ে বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার এ তথ্য দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। আলজাজিরার প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া রাতভর আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে ৫০৩টি হামলা চালায়। এর মধ্যে ছিল ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৪৫৮টি ড্রোন। দেশটির বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী ৪০৬টি ড্রোন ধ্বংস করতে সক্ষম হলেও মাত্র ৯টি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে, ফলে একাধিক অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

আরো পড়ুন:

রাশিয়ার জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা থেকে হাঙ্গেরিতে অব্যাহতি দিলেন ট্রাম্প

ইউক্রেনের ৯৮টি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি রাশিয়ার

হামলার মূল লক্ষ্য ছিল গ্যাস ও বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি অবকাঠামো। রাজধানী কিয়েভসহ একাধিক এলাকায় ব্ল্যাকআউট দেখা দিয়েছে।

ইউক্রেনের জ্বালানিমন্ত্রী জানান, রাশিয়া আবারও ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে।বিভিন্ন অঞ্চলে জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্থিতিশীল হলে তা পুনরায় চালু করা হবে বলে জানান তিনি।

পূর্ব ইউরোপে শীত ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে রাশিয়ার ধারাবাহিক হামলায় ইউক্রেনজুড়ে উদ্বেগ ও মানবিক সংকট বেড়েছে।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথ থেকে ‘উচ্চনির্ভুল দূরপাল্লার অস্ত্র’ ব্যবহার করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও ছিল।

এদিকে, ইউক্রেনের দোনেৎস্কের ফ্রন্টলাইনের শহর পোকরোভস্কে তীব্র লড়াই চলছে। শহরটির দখল নিতে সেখানে বিপুলসংখ্যক রুশ সেনা সমবেত হয়েছে। ইউক্রেনীয় সেনারা শহরের পূর্বাংশে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান ওলেক্সান্দর সিরস্কি।

 

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের চতুর্থ বছর ঘনিয়ে আসলেও শান্তি প্রচেষ্টায় অগ্রগতি না থাকায় পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠছে।

 

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ