ইউক্রেনের আবাসিক ও জ্বালানি অবকাঠামোতে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতভর চালানো হামলায় ইউক্রেনজুড়ে বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার এ তথ্য দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। আলজাজিরার প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া রাতভর আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে ৫০৩টি হামলা চালায়। এর মধ্যে ছিল ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৪৫৮টি ড্রোন। দেশটির বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী ৪০৬টি ড্রোন ধ্বংস করতে সক্ষম হলেও মাত্র ৯টি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে, ফলে একাধিক অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

আরো পড়ুন:

রাশিয়ার জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা থেকে হাঙ্গেরিতে অব্যাহতি দিলেন ট্রাম্প

ইউক্রেনের ৯৮টি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি রাশিয়ার

হামলার মূল লক্ষ্য ছিল গ্যাস ও বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি অবকাঠামো। রাজধানী কিয়েভসহ একাধিক এলাকায় ব্ল্যাকআউট দেখা দিয়েছে।

ইউক্রেনের জ্বালানিমন্ত্রী জানান, রাশিয়া আবারও ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে।বিভিন্ন অঞ্চলে জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্থিতিশীল হলে তা পুনরায় চালু করা হবে বলে জানান তিনি।

পূর্ব ইউরোপে শীত ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে রাশিয়ার ধারাবাহিক হামলায় ইউক্রেনজুড়ে উদ্বেগ ও মানবিক সংকট বেড়েছে।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথ থেকে ‘উচ্চনির্ভুল দূরপাল্লার অস্ত্র’ ব্যবহার করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও ছিল।

এদিকে, ইউক্রেনের দোনেৎস্কের ফ্রন্টলাইনের শহর পোকরোভস্কে তীব্র লড়াই চলছে। শহরটির দখল নিতে সেখানে বিপুলসংখ্যক রুশ সেনা সমবেত হয়েছে। ইউক্রেনীয় সেনারা শহরের পূর্বাংশে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান ওলেক্সান্দর সিরস্কি।

 

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের চতুর্থ বছর ঘনিয়ে আসলেও শান্তি প্রচেষ্টায় অগ্রগতি না থাকায় পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠছে।

 

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ য় ইউক র ন য দ ধ ইউক র ন ইউক র ন র অবক ঠ ম

এছাড়াও পড়ুন:

নতুন শিক্ষাবর্ষে তিন শ্রেণির বই ছাপাই শুরু হয়নি

আসন্ন নতুন শিক্ষাবর্ষে বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য প্রাথমিক স্তরের অর্ধেকের বেশি বই ছাপিয়ে মাঠপর্যায়ে সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু মাধ্যমিক স্তরের কোনো বই এখনো সরবরাহ করতে পারেনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই ছাপার কার্যাদেশই এখনো দেওয়া হয়নি। আর নবম শ্রেণির বই ছাপার বিষয়ে মুদ্রণকারীদের সঙ্গে মাত্রই চুক্তি হচ্ছে।

এমন অবস্থায় জানুয়ারির শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে সব বই, বিশেষ করে মাধ্যমিকের বই তুলে দেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছেন না এনসিটিবির একাধিক কর্মকর্তা। তাঁদের ভাষ্য, এবার ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবই আবার দরপত্র দিয়ে ছাপানো হচ্ছে। আবার মাধ্যমিকে বই ছাপার কাজে মন্ত্রণালয় ও ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অনুমোদন পেতেও দেরি হয়েছে। ফলে বছরের শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দেওয়া কঠিনই হবে।

এনসিটিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক বই ছাপায় কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু মাধ্যমিক বই নিয়ে তৈরি হয়েছে বড় ধরনের সংকট। এবার মোট বইয়ের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম।

চলতি বছরও প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীর হাতে সব বই পৌঁছাতে প্রায় তিন মাস দেরি হয়েছিল। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষতির মুখে পড়ে এবং বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এনসিটিবি সমালোচনার মুখে পড়ে। কিন্তু আসন্ন শিক্ষাবর্ষেও একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে।

এনসিটিবির সূত্র জানায়, আগামী বছর বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য প্রাথমিক স্তরের মোট পাঠ্যবই ৮ কোটি ৫৯ লাখ ২৫ হাজার ৩৭৯ কপি। এর মধ্যে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ছাপা ও বাইন্ডিং সম্পন্ন হয়েছে ৬ কোটি ৬৫ লাখের বেশি বই। এর মধ্যে সরবরাহ-পূর্ব পরিদর্শন (পিডিআই) সম্পন্ন হয়েছে ৫ কোটি ৫১ লাখের বেশি বইয়ে। আর মাঠপর্যায়ে সরবরাহ করা হয়েছে ৪ কোটি ৮৫ লাখের বেশি বই।

এনসিটিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক বই ছাপায় কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু মাধ্যমিক বই নিয়ে তৈরি হয়েছে বড় ধরনের সংকট। এবার মোট বইয়ের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম।

চলতি বছরও প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীর হাতে সব বই পৌঁছাতে প্রায় তিন মাস দেরি হয়েছিল। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষতির মুখে পড়ে এবং বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এনসিটিবি সমালোচনার মুখে পড়ে। কিন্তু আসন্ন শিক্ষাবর্ষেও একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে।

গত বছর বই সরবরাহে দীর্ঘ দেরির কারণে এবার আগেভাগেই দরপত্র প্রক্রিয়া প্রায় শেষ করে মূল্যায়নের কাজও সম্পন্ন করেছিল এনসিটিবি। কিন্তু হঠাৎ ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপার দরপত্র সেপ্টেম্বর মাসে বাতিল করা হয়। এই তিন শ্রেণির বইয়ের বাতিল হওয়া দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল গত মে ও জুনে। এরপর আবার দরপত্র আহ্বান করে এনসিটিবি। দরপত্র আহ্বানের পর যাচাই-বাছাই শেষ হলেও এখনো এই তিন শ্রেণির বই ছাপার কার্যাদেশ দেওয়া যায়নি।

নবম শ্রেণির বই ছাপানোর জন্য মুদ্রণকারীদের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে এবং ছাপার কাজও চলছে। ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই ছাপার কার্যাদেশও দু-এক দিনের মধ্যেই দেওয়া হবে। প্রাথমিক স্তরের বই ছাপার অগ্রগতি ভালো। আশা করা যায়, বছরের শুরুতেই সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়া যাবে।এনসিটিবির বিদায়ী চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী

এবার ষষ্ঠ শ্রেণির বইয়ের সংখ্যা ৪ কোটি ৪৩ লাখের বেশি, সপ্তম শ্রেণির ৪ কোটি ১৫ লাখের বেশি ও অষ্টম শ্রেণির মোট বই ৪ কোটি ২ লাখের বেশি।

দরপত্রের নিয়ম অনুযায়ী কার্যাদেশের পর চুক্তি হবে, আর চুক্তির পর ৪৫ দিনের মধ্যে ওই তিন শ্রেণির বই ছাপিয়ে সরবরাহের কথা। এমন অবস্থায় কার্যাদেশ ও চুক্তি সম্পন্ন করে জানুয়ারির শুরুতেই সব শিক্ষার্থীর হাতে বই দেওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন এনসিটিবির কর্মকর্তারা।

এবার ষষ্ঠ শ্রেণির বইয়ের সংখ্যা ৪ কোটি ৪৩ লাখের বেশি, সপ্তম শ্রেণির ৪ কোটি ১৫ লাখের বেশি ও অষ্টম শ্রেণির মোট বই ৪ কোটি ২ লাখের বেশি।

এনসিটিবি সূত্র আরও জানায়, এবার নবম শ্রেণির মোট পাঠ্যবই ৫ কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার ২৮ কপি। বুধবার মতিঝিলে এনসিটিবি কার্যালয়ে দেখা যায়, এসব বই ছাপার বিষয়ে মুদ্রণকারীদের সঙ্গে এখন চুক্তি হচ্ছে। চুক্তি করতে আসছেন মুদ্রণকারীরা।

নিয়মানুযায়ী চুক্তির পর ৬০ দিনের মধ্যে নবম শ্রেণির বই সরবরাহের কথা। ইতিমধ্যে নভেম্বরের প্রায় এক সপ্তাহ কেটে গেছে। নভেম্বর-ডিসেম্বরে মুদ্রণকারীরা সাধারণত নোট ও গাইড ছাপানোয় ব্যস্ত থাকেন। আবার ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন ঘিরে পোস্টার ছাপানোর কাজও বাড়বে। সব মিলিয়ে জানুয়ারির শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

অন্যদিকে ইবতেদায়ি স্তরের মোট বই ৩ কোটি ১১ লাখের বেশি; যার মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ ছাপা হয়েছে।

অবশ্য এনসিটিবির বিদায়ী চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী বলেছেন, নবম শ্রেণির বই ছাপানোর জন্য মুদ্রণকারীদের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে এবং ছাপার কাজও চলছে। ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই ছাপার কার্যাদেশও দু-এক দিনের মধ্যেই দেওয়া হবে। প্রাথমিক স্তরের বই ছাপার অগ্রগতি ভালো। আশা করা যায়, বছরের শুরুতেই সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়া যাবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘জেনারেল উইন্টার’ ঘিরে পুতিনের নতুন কৌশল
  • রাশিয়ার কাছ থেকে তেল-গ্যাস কেনায় যুক্তরাষ্ট্রের ছাড়পত্র পেল হাঙ্গেরি
  • পেঁয়াজের দাম প্রতিবছর বাড়ে কেন?
  • হঠাৎ বেড়েছে পেঁয়াজের দাম, কারণ কী
  • ইলন মাস্ক মঞ্চে নাচলেন, সঙ্গী হলো রোবট
  • নতুন শিক্ষাবর্ষে তিন শ্রেণির বই ছাপাই শুরু হয়নি
  • মিয়ানমার সংঘাতের আঞ্চলিক প্রভাব যাচাইয়ে বাংলাদেশ ঘুরে গেলেন জার্মানির সংসদ সদস্য
  • পেঁয়াজের দামবৃদ্ধিতে কার পকেট ভারী?