খালেদা জিয়ার আসনে প্রার্থী দেবে না গণ অধিকার পরিষদ: নুরুল হক
Published: 8th, November 2025 GMT
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-৩ আসনে গণ অধিকার পরিষদ প্রার্থী দেবে না, এমন ঘোষণা দিয়ে দলের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, আগামী নির্বাচনে গণ অধিকার পরিষদের সদস্যরা নিজ দলীয় ট্রাক প্রতীকে অংশ নেবে। দিনাজপুর তথা বাংলাদেশের মানুষের অবিসংবাদিত নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্ভবত এই আসন থেকে নির্বাচন করবেন। এ কারণে গণ অধিকার পরিষদ এ আসনে কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে না।
আজ শনিবার বিকেলে দিনাজপুর শহরের ইনস্টিটিউট মাঠে গণ অধিকার পরিষদ দিনাজপুর জেলা শাখার আয়োজনে ‘গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষায় নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’–বিষয়ক গণসমাবেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের আন্দোলন–সংগ্রামে বেগম খালেদা জিয়ার যে আপসহীন ভূমিকা, দেশের মানুষের জন্য তাঁর যে ত্যাগ, সে কারণেই অন্যান্য দলের নেতাদের প্রতি এখানে প্রার্থী না দেওয়ার আহ্বান জানান নুরুল হক।
নুরুল হক বলেন, ‘শুধু বেগম খালেদা জিয়া নন, জামায়াতের আমির, ইসলামী আন্দোলনের পীর সাহেবসহ যেসব জাতীয় নেতা গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী রাষ্ট্রসংস্কার ও আলাপ-আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যাঁরা আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবেন, আমরা মনে করি, সেই সমস্ত জাতীয় নেতাদের এলাকায় রাজনৈতিক দলগুলো প্রার্থী না দিয়ে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবে। এটা জাতীয় নেতৃত্বের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা দেখিয়ে করা উচিত।’
গণ অধিকার পরিষদের এই নেতা আরও বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রসংস্কার ও রাষ্ট্র পরিবর্তনের যে জন–আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, সেটি নিয়ে যে জুলাই সনদ রচিত হয়েছে, সেখানে প্রতিটি রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর করেছে। গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের একটি প্রক্রিয়া অনতিবিলম্বে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো মিলে ঠিক করবে আশা করি। তার মধ্য দিয়েই আগামীর নতুন বাংলাদেশ রচিত হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গণ অধিকার পরিষদের দিনাজপুর জেলা শাখার সভাপতি শফিকুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের উচ্চতর পরিষদ সদস্য শহিদুল ইসলাম, হানিফ খান, কেন্দ্রীয় সদস্য কামাল হোসেন প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ল হক
এছাড়াও পড়ুন:
‘শিল্পবোধ ও আধুনিকতার সংমিশ্রণ ঘটেছিল আনিস চৌধুরীর লেখায়’
‘খেয়াল খেলা কাজ’, ‘পড়বার নিয়ম’ অথবা ‘পাশের কামরার লোকটি’ এসব শিরোনামের লেখা প্রকাশিত হয়েছিল চল্লিশের দশকে। আজাদ, মুকুলের মহফিল, ইত্তেহাদ বা অগত্যা পত্রিকায় প্রকাশিত পাঠক সমাদৃত এসব বিষয়ের লেখক প্রয়াত আনিস চৌধুরী। সেসব লেখা একসঙ্গে করে প্রকাশিত হয়েছে ‘আনিস চৌধুরী হয়ে ওঠার লেখাজোখা’ বইটি। তাঁর লেখায় ধরা আছে সময় পরিক্রমার ইতিহাস। বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উঠে এল এসব কথা। শনিবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির বেঙ্গল ফাউন্ডেশনে আয়োজিত হয় মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানটি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন লেখক ও শিল্পসমালোচক হাসনাত আবদুল হাই। তিনি বলেন, ‘আনিস চৌধুরী আমাদের সাহিত্যিকদের পূর্বসূরি। একসময় উপন্যাস বের হওয়া ছিল আলোড়ন তোলা। তখনই তিনি আমাদের কাছে জনপ্রিয় লেখক ছিলেন।’ হাসনাত আবদুল হাই আরও বলেন, আনিস চৌধুরীর লেখায় শিল্পবোধ ও আধুনিকতার সংমিশ্রণ ছিল। ডকুমেন্টেশনের ক্ষেত্রে এ বই এক দৃষ্টান্তমূলক প্রকাশনা।
কথাসাহিত্যিক পিয়াস মজিদ আনিস চৌধুরীর বইয়ের বিভিন্ন অংশ থেকে পাঠ ও আলোচনা করেন। তিনি রমনীয়তা ও রম্যতার বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরেন। আনিস চৌধুরীর কবিতা নিয়ে কম আলোচনা থাকলেও তিনি যথেষ্ট সিরিয়াস কবি ছিলেন বলে উল্লেখ করেন এই আলোচক।
প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক আলম খোরশেদ বলেন, পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে যে মানুষেরা সাহিত্য দিয়ে সমাজ নির্মাণ করে দেশকে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন, আনিস চৌধুরী তাঁদেরই একজন। তাঁরা স্বাধীন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য সম্মিলিত লড়াই করেছেন। আনিস চৌধুরীর লেখার প্রসঙ্গ ধরে আলম খোরশেদ স্মরণ করেন সদ্য প্রয়াত ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামকে।
আলোচনা পর্ব শেষে মোড়ক উন্মোচন হয় ‘আনিস চৌধুরী হয়ে ওঠার লেখাজোখা’ বইটির। পুরো আয়োজনের সঞ্চালনা করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। প্রয়াত আনিস চৌধুরী তাঁর বাবা।
আনিস চৌধুরী প্রয়াত হয়েছেন ১৯৯০ সালে। নাট্যকার, গল্পকার, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক এবং কবি আনিস চৌধুরী রেডিও, টেলিভিশনে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন।
১৯২৯ সালে জন্মগ্রহণকারী আনিস চৌধুরী নিজের সময়কালের টুকরো টুকরো ইতিহাস ধরে রেখেছিলেন সে সময়কার বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও সাময়িকীতে নিজের লেখা দিয়ে। সেসব লেখাই তিনি সংরক্ষণ করতেন সযত্নে। সেই সব লেখা নিয়েই ‘আনিস চৌধুরী হয়ে ওঠার লেখাজোখা’ নামক গ্রন্থটি। বইটি প্রকাশ করেছে বেঙ্গল পাবলিকেশনস।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু, প্রয়াত ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সহধর্মিণী সিদ্দিকা জামান, শিল্পী ঢালী আল মামুন, সাংবাদিক নাসিমুন আরা হক, প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফসহ আরও অনেক বিশিষ্টজন।