৩৭ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানের কাছে সিরিজ হারল দ. আফ্রিকা
Published: 8th, November 2025 GMT
ফয়সালাবাদে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং শুরু দেখে কেউ কি ঘুনাক্ষরেও ধারণা করতে পেরেছিল ম্যাচের পরিণতি এমন হবে! সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে আগে ব্যাটিং করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৭২ রান তুলে নেয় প্রোটিয়ারা। পাকিস্তানের চোখে-মুখে তখন ছিল উৎকণ্ঠা, বড় রানের শঙ্কা।
অথচ উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার সাজানো সংসার! নাটকীয় ব্যাটিং ধসে ১৪৩ রানে অলআউট তারা। সেটাও মাত্র ৩৭.
আরো পড়ুন:
অভিষেকের বিশ্ব রেকর্ড গড়া ম্যাচও বৃষ্টির পেটে, সিরিজ ভারতের
শ্রীলঙ্কা দলে প্রথমবার ডাক পেলেন এসহান, টি-টোয়েন্টিতে ফিরলেন রাজাপাকসে
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২৫.১ ওভারে ম্যাচ জিতে নেয় পাকিস্তান। ৭ উইকেটের জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতল পাকিস্তান। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতলেও ঘরের মাঠে এটি তাদের প্রথম সিরিজ জয়।
আহমরি বোলিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংয়ে নাটকীয় ধস নেমেছিল। ইনিংসের মধ্যভাগে ব্যাটসম্যানরা কেউ প্রতিরোধই করতে পারছিলেন না। ওপেনিংয়ে লুহান ড্রি প্রিটোরিয়াস ৩৯ ও ডি কক সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেন। এরপর তাদের দুই ব্যাটসম্যান কেবল দুই অঙ্কের ঘর পেরোতে পারে। অধিনায়ক ব্রিটজি ও পেটার ১৬ রানের দুটি ইনিংস খেলেন। বাকিরা ক্রিজে এসেছেন আর ফিরেছেন।
১০ ওভারে ১ মেডেনে ২৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে লেগ স্পিনার আবরার আহমেদ ছিলেন তাদের সেরা বোলার। ২টি করে উইকেট নেন পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদি, স্পিনার সালমান আগা ও মোহাম্মদ নওয়াজ।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কোনো রান জমা না করতেই ফখর জামান সাজঘরে ফেরেন। এরপর ক্রিজে এসে বাবর ৫ বাউন্ডারিতে নিজের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসেন। মনে হচ্ছিল, আজ তার ব্যাট থেকে ভালো একটি ইনিংস আসবে। কিন্তু রান আউটে কাটা পড়ে তার ইনিংস থেমে যায় ২৭ রানে।
সেখান থেকে সায়েম আইয়ুবের ৭০ বলে ১১ চার ও ১ ছক্কায় সাজানো ৭৭ রানের ইনিংস ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ৩২ রানে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা।
আববার দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন। কুইন্টন ডি কক ২৩৯ রান করে হন সিরিজ সেরা। এই সিরিজ দিয়ে পাকিস্তানের ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু হলো আফ্রিদির। জয়ে সিরিজ শুরু করে নিশ্চিতভাবেই আত্মবিশ্বাস পেলেন।
ঢাকা/ইয়াসিন/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে ‘৮টি বিমান’ ভূপাতিত করা হয়েছে: ট্রাম্পের নতুন দাবি
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বুধবার আবার দাবি করেছেন, গত মে মাসে ভারত-পাকিস্তানের সংঘাত তিনিই থামিয়েছিলেন। তবে তিনি এবার সংঘাতে যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার সংখ্যায় বদল এনেছেন। ///এবার তিনি বলেছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানের ভারতে হামলার সময় ‘আটটি বিমান’ গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বিশ্বের সব যুদ্ধ ও সংঘাত বন্ধে তাঁর করা বাণিজ্য চুক্তি ও শুল্কের হুমকি হচ্ছে বড় হাতিয়ার।
গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মায়ামির ‘আমেরিকান বিজনেস ফোরামে’ বক্তৃতাকালে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন শক্তির মাধ্যমে সারা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করছে। কারণ, কেউ তাদের সঙ্গে ‘ঝামেলা করতে আসবে না’।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র যেসব বাণিজ্য চুক্তি করেছে, সেগুলোর উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, তাঁর প্রশাসন চীন, জাপান ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেছে। এরপর তিনি আবারও দাবি করেন, তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের আট মাসে তিনি ‘আটটি যুদ্ধ’শেষ করেছেন।
ভারত ও পাকিস্তানের ‘সংঘাতের অবসান’ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, তিনি যখন দিল্লি ও ইসলামাবাদের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সই করার প্রায় মাঝামাঝি সময়ে ছিলেন তখনই তিনি শুনতে পান, এই দুটি প্রতিবেশী দেশ ‘যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে’। তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, তারা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে তাঁর প্রশাসন কোনো দেশের সঙ্গেই কোনো চুক্তি করবে না।
বিজনেস ফোরামের অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি দুই দেশের সঙ্গেই বাণিজ্য চুক্তি করার মাঝামাঝি জায়গায় ছিলাম। তখনই আমি একটি নির্দিষ্ট খবরের কাগজের প্রথম পাতায় পড়লাম, তারা যুদ্ধ করতে যাচ্ছে। সাত বা আটটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল। মূলত আটটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল।’
ট্রাম্পের এই সংখ্যা তাঁর আগের দাবির সংখ্যার থেকে ভিন্ন। প্রথমে তিনি বলেছিলেন তিনটি বিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল। এরপর জুলাই মাসে তিনি সংখ্যাটি বাড়িয়ে পাঁচ করেন। পরে আগস্টে সংখ্যাটি আরও বাড়িয়ে সাত করা হয়। আর এখন, ট্রাম্পের কাছে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের সময় গুলি করে নামানো বিমানের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ‘৮-এ’।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি বন্ধের হুমকি দেওয়ার পরই ‘আমি একটি ফোন কল পেলাম, তারা শান্তি চায়। তারা থেমে গেল। আমি বললাম ধন্যবাদ, চলুন ব্যবসা করি। এটা দারুণ না?’
ট্রাম্প এর আগেও বারবার দাবি করেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ‘পুরোপুরি ও দ্রুত’ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার কৃতিত্ব তাঁর প্রশাসনের।
তবে ভারত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। ভারত জানিয়েছে, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে ইসলামাবাদের সঙ্গে উত্তেজনা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কোনো ধরনের মধ্যস্থতার জন্য তৃতীয় পক্ষের কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না।