নির্বাচনী আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনার মধ্যে ঢাকা-১০ সংসদীয় আসনের ভোটার হচ্ছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া৷

আজ রোববার বিকেলে এই আসনের ধানমন্ডি থানার নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে ভোটার হওয়ার আবেদন করবেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক এই সমন্বয়ক।

সকালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তার পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বেলা তিনটায় ধানমন্ডি থানা নির্বাচন কার্যালয়ে উপস্থিত থাকবেন৷ তিনি ধানমন্ডি থানার ভোটার হবেন৷

ঢাকা-১০ নির্বাচনী আসনটি ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, কলাবাগান ও হাজারীবাগ থানা নিয়ে গঠিত৷ বিএনপি এই আসনে এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি৷ তবে জামায়াতে ইসলামী এই আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে৷ জামায়াতের প্রার্থী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জসীম উদ্দিন সরকার৷

এর আগে মুরাদনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা-৩ আসনের ভোটার ছিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ৷ এই আসন থেকে তিনি নির্বাচন করতে পারেন, এমন আলোচনাও শোনা গিয়েছিল৷ সম্প্রতি গুঞ্জন তৈরি হয়, বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতা হলে সরকার থেকে পদত্যাগ করে ঢাকা-১০ আসনে নির্বাচন করতে পারেন আসিফ মাহমুদ৷ বিএনপি এই আসনে প্রার্থী ঘোষণা না করায় গুঞ্জন আরও জোরালো হয়৷ এখন আসিফ মাহমুদের এই আসনের ভোটার হতে যাওয়ার মধ্য দিয়ে গুঞ্জনটি আরও পাকাপোক্ত হচ্ছে৷

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখসারির অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া৷ আন্দোলনের সময় ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন৷ অভ্যুত্থানের সর্বশেষ কর্মসূচি ৬ আগস্টের পরিবর্তে ৫ আগস্টে আনার বিষয়টি তিনিই ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন৷ সব মিলিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা হিসেবে ব্যাপক আলোচিত হন আসিফ মাহমুদ৷ অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত বছরের ৮ আগস্ট গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পান কুমিল্লার ছেলে আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া৷

আসিফ মাহমুদ ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন৷ সেখান থেকে তিনি স্নাতক শেষ করেছিলেন৷ ছাত্রজীবনের শুরু থেকেই ছাত্র অধিকার পরিষদের রাজনীতিতে যুক্ত হন আসিফ মাহমুদ। ক্যাম্পাসে নির্যাতনবিরোধী বিভিন্ন আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ছিলেন৷ পরে ২০২৩ সালে ছাত্র অধিকার পরিষদের একটি অংশের উদ্যোগে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি নামে যে নতুন ছাত্রসংগঠন গঠিত হয়, আসিফ মাহমুদ ছিলেন এর অন্যতম উদ্যোক্তা তিনি ছাত্রশক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ছিলেন৷ জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির নেতাদের অধিকাংশই ছিলেন এই ছাত্রশক্তির নেতা৷

অন্তর্বর্তী সরকারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন আসিফ মাহমুদ৷ সরকারি দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি বেসরকারি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স বিষয়ে স্নাতকোত্তর করছেন তিনি৷

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আসন র ভ ট র ধ নমন ড উপদ ষ ট এই আসন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

দৃঢ়ভাবে বলছি, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনে আমরা বদ্ধপরিকর: আসিফ নজরুল

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার কোনো কারণ দেখছেন না তিনি। আজ রোববার সকালে রাজশাহী লিগ্যাল এইড অফিসে বিচারকদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দেশে ১৬ থেকে ১৭ বছর ধরে নির্বাচন হয় না, ইলেকশনের অভ্যাসটাই হারিয়ে গেছে। অনেক মানুষের বয়স ৩২ থেকে ৩৪ হয়ে গেছে, কিন্তু জীবনে একবারও ভোট দিতে পারেনি। প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ কখনো ভোট দিতে পারেনি, এটা কত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়! আমি যেখানে যাই, পোস্টার দেখতে পাচ্ছি, মানুষের মধ্যে উৎসাহ–উদ্দীপনা দেখতে পাচ্ছি।’

নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কার কোনো কারণ দেখেন না মন্তব্য করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের ওপর কিংবা আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে কিছু কথা বলে, আবার কিছু মন্তব্য হয়তো আন্তরিকভাবেও আসে। সবকিছু মিলিয়ে অনেকে ভাবেন, নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। কিন্তু আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর।’

আরও পড়ুনরাজশাহীর প্রশংসা করলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, এড়িয়ে গেলেন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন২০ ঘণ্টা আগে

নির্বাচন বিলম্বিত করার মতো কোনো ঘটনা নেই বলে জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, অবশ্যই নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হবে। কোনো বিকল্প চিন্তা বা নির্বাচন না হলে কী হবে, এই প্রশ্ন আমাদের মাথায় নেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টিতে যা যা প্রয়োজন, সরকার তা করবে।’

আসামিদের জামিন প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘জামিন দেওয়া শুধু বিচারকের ওপর নির্ভর করে না, পুলিশ কী রিপোর্ট দিচ্ছে, সেটার ওপরও নির্ভর করে। যদি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় বা কণ্ঠ শনাক্ত হয়, তাহলে ব্যতিক্রম হতে পারে। যেখানে জামিন পাওয়ার যোগ্যতা আছে, সেখানে জামিন পাওয়াটা স্বাভাবিক। তবে যারা জামিন পেয়ে একই অপরাধ আবার করতে পারে বা আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করতে পারে, নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য হয়ে সক্রিয় থাকতে পারে, তাদের ক্ষেত্রে আমরা সতর্ক থাকব।’ তিনি আরও বলেন, ‘একজন বিচারকের জায়গায় তিনজন বিচারক নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে মামলার চাপ কমে। আদালত সংস্কারে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, এর সুফল অবশ্যই জনগণ পাবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ