ঢাবিতে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ৭৫ বছর পূর্তি উদ্যাপন
Published: 8th, November 2025 GMT
দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ৭৫ বছর পূর্তি উদ্যাপন এবং বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র সমিতির ‘গ্র্যান্ড রিইউনিয়ন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে বর্ণাঢ্য র্যালির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান।
দিনভর কর্মসূচির মধ্যে ছিল আলোচনা সভা, গুণীজন সংবর্ধনা, কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও বৃত্তি প্রদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি।
সকালে টিএসসি মিলনায়তনে আলোচনা সভায় রাজনৈতিক বিভাজন ভুলে জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান।
ভিসি বলেন, ‘দলীয় রাজনীতি আমাদের নানাভাবে বিভাজিত করে ফেলেছে। আমরা শিক্ষা ও গবেষণাকে সব রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখতে চাই। আমরা সমাজের সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলতে চাই। ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সম্পর্ক আরও জোরদার ও অ্যালামনাই নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করতে চাই।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আতাউর রহমান বিশ্বাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সাবেক ছাত্র সমিতির সভাপতি শবনম শেহনাজ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ৭৫ বছর পূর্তি উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আবদুল বাছির।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বক্তব্য দেওয়ার সময় তাঁর প্রয়াত মা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও দেশের প্রথম নারী জাতীয় অধ্যাপক (ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী এবং পরে ওই বিভাগের শিক্ষক ছিলেন) অধ্যাপক সুফিয়া আহমেদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ইতিহাসের গভীর বোধ ছাড়া কোনো সংস্কারক প্রজ্ঞাবান হতে পারেন না। কোনো বিচারক তাঁর সভ্যতার শিকড় না বুঝে আইনের যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারেন না।’
তিনি বলেন, ‘আইন হলো কোনো জাতির নৈতিক ইতিহাস, যা ন্যায়ের ভাষায় লেখা হয়; আর ইতিহাস হলো কেন সমাজকে আরও ভালো হতে হবে, তার অনুসন্ধান।’
বিচার বিভাগীয় সংস্কার প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘বিচার বিভাগ কেবল ঐতিহ্যের স্বস্তিতে টিকে থাকতে পারে না। এটিকে সময়ের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক হতে হয়; এ জন্য তার সংস্কার করতে হয়।’
প্রধান বিচারপতি জানান, গত ১৫ মাসে বিচারব্যবস্থার স্বায়ত্তশাসন, দক্ষতা বৃদ্ধি ও জনগণের বিচারপ্রাপ্তির সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বিভাগের কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিভাগের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৭৫ জন শিক্ষার্থীকে প্রাক্তন ছাত্র সমিতির পক্ষ থেকে বিশেষ বৃত্তিসহ বিভাগের মোট ৮৪ জন শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হয়।
এ ছাড়া সম্প্রতি পিএইচডি ও এমফিল ডিগ্রি অর্জন করা প্রাক্তন ছাত্র সমিতির ১১ জন সদস্য, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক এবং সমমান পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলের জন্য প্রাক্তন ছাত্র সমিতির সদস্যদের ৫৮ জন সন্তান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারী ১৩ জন শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের শেষে ছিল দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বেলা সাড়ে তিনটায় প্রাক্তন ছাত্র সমিতির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সমিতির দ্বিবার্ষিক সভায় শবনম শেহনাজ চৌধুরী দীপাকে সভাপতি ও মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খানকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০২৫ ও ২০২৬ সালের জন্য ৩৫ সদস্যের নতুন কমিটি গঠন করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ৭৫ বছর প র ত অন ষ ঠ ন র
এছাড়াও পড়ুন:
সুস্থ থাকার মন্ত্রে নানা আয়োজনের ফ্লো ফেস্ট
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার মন্ত্রে আয়োজিত হলো তিন দিনব্যাপী ফ্লো ফেস্ট। এতে ছিল ইয়োগা, নাচ, ধ্যান, গল্প, থিয়েটার, আর্ট, ফিটনেস সেশন ও বই প্রকাশসহ একশর বেশি কার্যক্রম। ফেস্ট ছিল সবার জন্য উন্মুক্ত।
‘বি ইন ইয়োর ফ্লো’ স্লোগান সামনে রেখে রাজধানীর গুলশান–২ এর বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ পার্কে গত বৃহস্পতিবার শুরু হয় এই ফেস্ট। আজ শনিবার ছিল উৎসবের তৃতীয় ও শেষ দিন। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এ আয়োজন।
মেলায় ছিল পাঁচটি গ্রাউন্ড—ইয়োগা সালা, মেডিটেশন গার্ডেন, আর্ট সোল জোন, প্লে-গ্রাউন্ড এবং অ্যাম্ফিথিয়েটার। পাঁচটি গ্রাউন্ডই দিনভর ছিল নানা আয়োজনে ব্যস্ত।
ইয়োগা ও ওয়েলনেস উৎসব হিসেবে ইতিমধ্যে আয়োজনটি দেশে জায়গা করে নিয়েছে। ২০২২ সাল থেকে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ পার্কে এ আয়োজন করা হচ্ছে। প্রতিবছরই এর পরিসর বাড়ছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা। সবার জন্য উন্মুক্ত এ আয়োজনে গতকাল অংশ নেন বিপুল দর্শনার্থী।
ফ্লো ফেস্টের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাজিয়া ওমর বলেন, ‘শারীরিক ও মানসিকভাবে সুন্দর জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ করা এবং সুস্থতার চর্চাকে দৈনন্দিন জীবনের অংশ করে তোলার জন্য আমাদের এ আয়োজন। আমরা চাই, প্রতিটি মানুষ সুস্থ থাকুক; ওষুধ ছাড়া সুস্থভাবে বাঁচুক।’
শাজিয়া ওমর বলেন, ‘স্বপ্নটি বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা প্রতিবছর একটি ফ্লো ফেস্টের আয়োজন করি। এখানে বিভিন্ন ধরনের ইয়োগা ও মেডিটেশনের প্রশিক্ষকদের আনা হয়। সুস্থতার জন্য প্রয়োজন আমাদের মুভমেন্ট, মেডিটেশন, ক্রিয়েটিভিটি আর কানেকশন।’
মেলায় অ্যাডভেঞ্চারে মেতেছে এক শিশু। রাজধানীর গুলশান-২; ৮ নভেম্বর ২০২৫