একেক সময় একেক আচরণ করা বাইপোলার বসকে সামলাবেন যেভাবে
Published: 12th, August 2025 GMT
মনোবিজ্ঞানের ভাষায় বাইপোলার ডিজঅর্ডার একটি মানসিক সমস্যা। তবে কথ্য ভাষায় বাইপোলার বলতে এমন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়, যাঁর আচরণে প্রায়ই বৈপরীত্য দেখা যায়। হয়তো গতকালই তিনি আপনাকে অফিসের ক্যানটিনে কফি খাইয়েছেন, আজকেই আপনার সঙ্গে শুরু করলেন চিৎকার-চেঁচামেচি।
আপনি যে আজ খুব গুরুতর কোনো অপরাধের জন্য ‘দোষী’ সাব্যস্ত হয়েছেন, তা–ও কিন্তু নয়। তবু কাল আপনি যতটা সহজ হতে পেরেছেন তাঁর সঙ্গে, আজ আর ততটা পারছেন না। উল্টো তাঁর আচরণে আপনি বিরক্ত বা অপমানিত বোধ করছেন। অনেক সময় আবার পরিস্থিতি অনুযায়ী বস কথাও পাল্টে ফেলছেন। তখন বিপদে পরে যান আপনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী এবং পিএইচডি গবেষক হাজেরা খাতুন বলেন, অফিসের বসের আচরণ যদি এমন হয়, তাহলে কাজের পরিবেশ সুস্থ থাকে না। একজন কর্মীর জন্য সেখানে কাজ করাটা বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায়। তাঁর আত্মবিশ্বাস এবং কাজের আগ্রহ কমে যেতে পারে। নিজের করণীয় নিয়ে দ্বিধায় পড়তে পারেন। এমনটাও মনে হতে পারে, চাকরিটা ছেড়ে দিলেই বোধ হয় বেঁচে যাবেন তিনি।
বস যদি কড়া হন, তাহলে ভিন্ন কথা। তবে বাইপোলার বসের সঙ্গে মানিয়ে চলা কষ্টকর। এমন অবস্থায় নিজেকে সামলে চলার উপায় জেনে নেওয়া যাক হাজেরা খাতুনের কাছ থেকেই।
আরও পড়ুনছবিতে ছবিতে জেনে নিন ‘সাইয়ারা’র নায়িকা অনীত পাড্ডাকে২০ ঘণ্টা আগেবস কি সত্যিই বাইপোলারআপনার বসকে সত্যিই বাইপোলার তকমা দেওয়া যায় কি না, সেটি বিবেচনা করুন প্রথমে। প্রায়ই যদি কেউ দ্বিমুখী আচরণ করেন, কেবল তখনই তাঁকে বাইপোলার ভাবতে পারেন আপনি। লক্ষণীয় বিষয় হলো, কখন তিনি অপমান করবেন, আর কখন আপনাকে প্রশংসায় ভাসাবেন, তা আন্দাজ করা কঠিন। মাঝেমধ্যে রেগে গেলেই বসকে বাইপোলার ধরে নেবেন না, বিশেষত রাগের যথাযথ কারণ থাকলে তো নয়ই।
বাইপোলার বসকে যেভাবে সামলাবেন বাইপোলার বসের প্রতি সম্মান ধরে রাখা মুশকিল হয়ে দাঁড়াতে পারে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জবিতে র্যাগিংয়ের নামে ‘অমানবিক’ নির্যাতনের অভিযোগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিং ও অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ২০২৩-২৪ সেশনের কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীদের দাবি, নির্যাতনের পর ভয় দেখিয়ে ঘটনাটি গোপন রাখতে বাধ্য করা হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের পিয়ুস সাহা, প্রকাশ বিশ্বাস, মো. সাজ্জাদ, রিফাত হোসাইন, মো. শিহাব, কাজি ফারজানা জারিন অদ্রি, পুষ্পিতা লোদ, অন্নপূর্ণা দত্ত, তানজিলা মিতু ও মো. ফাহাদ ইসলাম।
আরো পড়ুন:
ইবিতে নবীনবরণ, র্যাগিং বন্ধে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন
গকসুর তফসিল ঘোষণা, নির্বাচন ২৫ সেপ্টেম্বর
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, গত ৩০ জুলাই জুলফা ভবনের একটি শ্রেণিকক্ষে প্রথম র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে। তবে এটি একদিনের নয়, বরং ধারাবাহিকভাবে চলে। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা একদিনে ৩-৪ বার ক্লাসে ঢুকে নবীনদের হয়রানি করতেন। কথা না শুনলে ব্যাচ বয়কটের হুমকি দিতেন। কখনো টানা ২০-৪০ মিনিট দাঁড় করিয়ে রাখা হত, কথামতো আচরণ না করলে চড়-থাপ্পড়ও মারার চেষ্টা করতেন।
ভুক্তভোগীরা আরো জানান, তারা নবীনদের ‘তুই-তুকারি’ সম্বোধন করতেন এবং জোরপূর্বক সিনিয়রদের নাম-পরিচয় বলতে বাধ্য করতেন। এসব ঘটনা বাইরে জানালে বা অভিযোগ দিলে বিভাগের সুনাম নষ্ট হবে বলে ভয় দেখানো হত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, র্যাগিং ও মানসিক নির্যাতনের ফলে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ফাতেমা আক্তার নিশা নামে এক নবীন শিক্ষার্থী প্যানিক অ্যাটাকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অসুস্থ সহপাঠীর সঙ্গে দেখা করতেও দেওয়া হয়নি তাদের এবং কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পিয়ুস সাহাকে প্রশ্ন করলে তিনি ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে কল কেটে দেন। অপর অভিযুক্ত প্রকাশ বিশ্বাসও উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে সাংবাদিককে বলেন, “যা পারেন করেন।”
এমনকি শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মনিরা জাহানকে প্রশ্ন করলে সাংবাদিকের ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চান এবং অপর এক সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগ তোলেন।
সার্বিক বিষয়ে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, “র্যাগিংয়ের বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত আছি। তবে সাংবাদিকদের নিয়ে যে অভিযোগ এসেছে, তা জানতাম না। দ্রুত বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী