নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে: লক্ষ্মীপুরে এ্যানি
Published: 20th, September 2025 GMT
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচনের দিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক আমরা উঁচিয়ে ধরব তারেক রহমানের নেতৃত্বে। নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রত্যেক ঘরে যেতে হবে। সব প্রজন্মের কাছে পৌঁছাতে হবে। বিশেষ করে আমাদের মা-বোনদের কাছে, যাঁরা বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে ত্যাগ স্বীকার করেছেন। এটা তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত।’
আজ শনিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রামগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে এ আয়োজন করা হয়।
শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘আজ সবাই এক মঞ্চে। আমরা এক মঞ্চে মিলিত হয়েছি। রামগঞ্জে আমরা ঐক্যের বন্ধন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। এখানে কোনো পক্ষ-বিপক্ষ নাই। এখানে কোনো মতভেদ নাই।’
রামগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী।
রামগঞ্জ পৌর বিএনপির আহ্বায়ক শেখ কামরুল হোসেনের সঞ্চালনায় এ সময় ১২–দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম আশরাফ উদ্দিন, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সাহাব উদ্দিন প্রমুখ।
প্রায় ৩৭ বছর পর রামগঞ্জে বিএনপির সম্মেলন হচ্ছে। সম্মেলনে দলটির বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীরা উপস্থিত হন। সম্মেলনকে ঘিরে সম্মেলনস্থল ও শহরের বিভিন্ন সড়ক তোরণ, ফেস্টুন আর ব্যানারে ছেয়ে গেছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে রামগঞ্জে বিএনপির সম্মেলন হয়। এরপর যত কমিটি হয়েছে সবই সমঝোতার মাধ্যমে। সর্বশেষ গত দুই বছর ধরে চলছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা তৎপর হয়ে ওঠেন। আত্মগোপনে থাকা নেতা-কর্মীরা ফিরতে শুরু করেন। কারাবন্দী নেতা-কর্মীরা জামিনে মুক্ত হয়ে এসে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রামগঞ্জ উপজেলা ও পৌরসভার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদ কারা পাচ্ছেন, তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। সম্মেলন ঘিরে উপজেলা ও শহরের বিভিন্ন এলাকা প্রার্থীদের ছবি–সংবলিত ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুনে ভরে গেছে।
সম্মেলনে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের পদের জন্য মোট ১৯ জন নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
রামগঞ্জ উপজেলা বিএনপির জন্য ৭১০ জন কাউন্সিলর তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। আর পৌর বিএনপিরও ৭১০ জন কাউন্সিলর রয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র মগঞ জ উপজ ল ব এনপ র কর ম র উদ দ ন
এছাড়াও পড়ুন:
উড়োজাহাজ খাতে প্রতিযোগিতায় স্বচ্ছতা ও বৈষম্য বিলোপের তাগিদ ইইউ রাষ্ট্রদূতের
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে নতুন উড়োজাহাজ যুক্ত করতে যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িং এবং ইউরোপের এয়ারবাসের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে বেশ কয়েক বছর ধরে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ দিকে হঠাৎ এয়ারবাসের সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছিল। আর চলতি বছর পাল্টা শুল্কের দর–কষাকষির ইস্যুতে বোয়িং অন্যতম শর্ত হিসেবে সামনে এসেছে।
এমন এক প্রেক্ষাপটে ঢাকায় এক আলোচনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার উড়োজাহাজ খাতে ব্যবসায় স্বচ্ছতা ও বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি সব পক্ষের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন। এই খাতে ‘অন্য অংশীদারদের’ তুলনায় ইউরোপের প্রতিষ্ঠানগুলোকে যাতে কম গুরুত্ব দেওয়া না হয়, সে বিষয়টি বাংলাদেশকে নিশ্চিত করতে বলেছেন।
মঙ্গলবার ঢাকায় ফ্রান্স-জার্মান দূতাবাসে ‘বাংলাদেশের এভিয়েশন গ্রোথ’ শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি এ অভিমত দেন। আলোচনায় মাইকেল মিলার ছাড়াও যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লে, জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লটজ এবং এয়ারবাসের কমার্শিয়াল সেলস ডিরেক্টর (চিফ রিপ্রেজেনটেটিভ, বাংলাদেশ) রাফায়েল গোমেজ নয়া অংশ নেন।
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি এ দেশে এয়ারবাসের উপস্থিতির বিষয়টিকে বিবেচনায় নিতে জোর দিচ্ছি। আমি খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই, স্বচ্ছতা এবং বৈষম্যহীনতার দীর্ঘদিনের আশ্বাস পূরণ করে এটিকে যেন বিমানের বহরকে আধুনিকীকরণ পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ দেশের উড়োজাহাজ খাতে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অবশ্যই বিবেচনায় রাখা উচিত।’
ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লে বলেন, ফ্রান্স ও ইউরোপের উড়োজাহাজ শিল্পের কেন্দ্রে অবস্থান করছে এয়ারবাস। প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও উদ্ভাবনের অনন্য সমন্বয়ই এটিকে বিশ্বজুড়ে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর এক বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এই খাতে বাংলাদেশের বিকাশ পর্বে এয়ারবাস হতে পারে এক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তাঁর মতে, বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল সংযোগ ও ভৌগোলিক অবস্থান এই দেশকে আকাশপথে যোগাযোগের আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। বিমান বাংলাদেশের বহরে এয়ারবাস যুক্ত হলে এর স্থিতিশীলতা ও প্রতিযোগিতার সক্ষমতা আরও বাড়বে।
জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লটজ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বাড়ছে, মধ্যবিত্ত শ্রেণি সম্প্রসারিত হচ্ছে। বিমানের এখন প্রয়োজন আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব উড়োজাহাজ, যেখানে এয়ারবাস শক্ত অবস্থানে রয়েছে।
যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও আকাশপথে যোগাযোগের আঞ্চলিক কেন্দ্র হওয়ার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য সব সময় পাশে থাকবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বাণিজ্যিক যোগ্যতার ভিত্তিতে ইইউর অর্থনৈতিক উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতার সুযোগ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ প্রত্যাশা করি। এর অর্থ হলো বাংলাদেশকে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অপারেটরদের অন্যান্য বাণিজ্যিক অংশীদারদের তুলনায় কম সুবিধা দেওয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, বোয়িং ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ২৫টি উড়োজাহাজ বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে, আর এয়ারবাস দিয়েছে ১৪টির। এর মধ্যে রয়েছে ১০টি এ৩৫০ ও ৪টি এ৩২০ নিও।