শ্রমিকের টাকা দিতে জেলে বসেই সম্পত্তি বিক্রির অনুমতি দিলেন নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান
Published: 20th, September 2025 GMT
শ্রমিকের পাওনা পরিশোধে সম্পত্তি বিক্রি করতে রাজি নাসা গ্রুপ। সরকারের দেওয়া সময়সীমার মধ্যেই নাসা গ্রুপ তার সম্পত্তি বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। কোন কোন সম্পত্তি বিক্রি করবে গ্রুপটি, তা–ও জানিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আজ শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্পত্তি বিক্রির জন্য গ্রুপ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার পাওয়ার অব অ্যাটর্নি–বিষয়ক নথিতে আজ স্বাক্ষর করেছেন। নাসা গ্রুপ কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে।
যেসব সম্পত্তি বিক্রি হবে, সেগুলো হচ্ছে গুলশান ৭ নম্বর রোডের ৬ নম্বর প্লট, আশুলিয়ার তৈয়বপুর মৌজায় ৫ বিঘা জমি ও ৭ তলা ভবন, নারায়ণগঞ্জের চর চেঙ্গাকান্দি মৌজায় ১০ বিঘা জমি এবং প্রায় ৮৬ কোটি টাকার বিভিন্ন শেয়ার এবং রাজউকের প্লট।
নাসা গ্রুপের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়, সম্পত্তি বিক্রির জন্য খসড়া পাওয়ার অব অ্যাটর্নি স্বাক্ষরিত হওয়ায় খুব কম সময়ের মধ্যে তাদের সম্পত্তি বিক্রি করে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হবে।
জানতে চাইলে নাসা গ্রুপের উপদেষ্টা সিরাজুল ইসলাম আজ প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আজ শনিবার ম্যাজিস্ট্রেট, বিভিন্ন সংস্থা ও বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে জেলগেটে নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের স্বাক্ষর নেওয়া হয়।
নজরুল ইসলাম মজুমদার ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। ১৭ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয় এক সিদ্ধান্ত নিয়ে জানায়, সম্পত্তি বিক্রি করে শ্রমিকের পাওনা পরিশোধের ব্যবস্থা করতে ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিতে হবে। নইলে মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং নাসা গ্রুপের মালিক, মালিকের স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ের পাসপোর্ট বাতিল করা হবে।
নাসা গ্রুপের সম্পত্তির একটি তালিকা করেছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে রয়েছে গুলশান-১–এ ১২ তলাবিশিষ্ট ২টি ভবন, ৭১ নম্বর প্লটে ১ বিঘা, তেজগাঁও শিল্প এলাকায় ৩ বিঘা, তেজগাঁও আড়ংয়ের বিপরীতে ৭ বিঘা, মহাখালী ডিওএইচএসে ১০ কাঠা, ঢাকার নিকেতনে ১০ বিঘা, উত্তরায় ১০ বিঘা, ১৩ নম্বর সেক্টরে প্লট এবং দিয়াবাড়িতে ৩ প্লট মিলে ৪০০ কোটি টাকা দামের সুইমিং পুল, পূর্বাচলে ২ বিঘা, ২০টি প্লট ও হাসপাতাল, মেঘনা ঘাটে আরও ১০ বিঘা জমি, ঠাকুরগাঁওয়ে ৩০০ বিঘা জমি, দুবাইয়ে খেজুরবাগান ও দুবাই রিসোর্ট, এক্সিম ব্যাংকে ২৪ কোটি টাকাসহ আরও সম্পত্তি।
জানা গেছে, নাসা গ্রুপের বিভিন্ন কারখানায় ২০ হাজারের বেশি শ্রমিক রয়েছেন। তবে ২২টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে নাসা গ্রুপ এখন ৮ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকার খেলাপি। কারখানাগুলো বন্ধ থাকায় বেতন-মজুরি পাচ্ছেন না নাসা গ্রুপের শ্রমিক-কর্মচারীরা। অধিকার আদায়ে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করে যাচ্ছেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইয়েমেনে সাংবাদিকের ওপর হামলা ছিল রেকর্ড করা দ্বিতীয় ভয়াবহ ঘটনা
গত সপ্তাহে ইয়েমেনে সংবাদপত্র অফিসে ইসরায়েলি হামলায় ৩১ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মী নিহত হয়েছেন। কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) শুক্রবার এ ঘটনাকে গত ১৬ বছরের মধ্যে সাংবাদিকদের উপর সবচেয়ে মারাত্মক আক্রমণ বলে অভিহিত করেছে।
১০ সেপ্টেম্বর ইয়েমেনের রাজধানী সানায় একটি সংবাদপত্র কমপ্লেক্সে ইসরায়েল হামলা চালায়। সেখানে হুতির সঙ্গে সম্পৃক্ত তিনটি সংবাদপত্র ছিল। প্রকাশনার প্রধান সম্পাদকের মতে, সেই সময় ইয়েমেনি সেনাবাহিনীর প্রেস শাখার সদস্যরা সাপ্তাহিক মুদ্রিত সংস্করণ শেষ করছিলেন। এর ফলে হামলার সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের সংখ্যা বেশি ছিল।
হুতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, হামলায় কমপক্ষে ৩৫ জন নিহত হয়, যাদের মধ্যে একজন সাংবাদিকের সাথে অফিসে আসা এক শিশুও ছিল এবং ১৩১ জন আহত হয়।
২০০৯ সালে ফিলিপাইনে মিন্দানাওয়েতে গণহত্যার পর সিপিজে-র রেকর্ড করা সাংবাদিকদের উপর এই হামলা ছিল দ্বিতীয় সবচেয়ে মারাত্মক।
২৬ সেপ্টেম্বরের প্রধান সম্পাদক নাসের আল-খাদরি সিপিজেকে বলেন, “এটি একটি নৃশংস এবং অন্যায্য আক্রমণ যা নিরীহ মানুষকে লক্ষ্য করে করা হয়েছিল যাদের একমাত্র অপরাধ ছিল মিডিয়াতে কাজ করা, যাদের হাতে কেবল কলম এবং মুখে কথা ছিল।”
সিপিজে জানিয়েছে, ইয়েমেনে এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে গণমাধ্যম কর্মীদের হত্যার বৃহত্তর ধরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং সাংবাদিকদের যোদ্ধা হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করে সেই হত্যাকাণ্ডের অজুহাত দেখানো হচ্ছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ২৪৭ জন সাংবাদিককে হত্যা করেছে ইসরায়েল।
ঢাকা/শাহেদ