ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. সাইদ মুন্সি। গত বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে পাশের মাস্টারদা সূর্য সেন হল ক্যানটিনে খেতে যান তিনি। ভাত তরকারি দিয়ে মাখানোর পর দেখেন একটি আস্ত কাঁকড়া। এ অবস্থা দেখে বমি চেপে রাখতে পারেননি তিনি। গত মাসেও একই হলে খাবারে মাছি ও পোকা পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের ২০২৩-২৪ বর্ষের এই শিক্ষার্থী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ হলের ক্যানটিনে অবস্থা অনেকটা এমনই। অব্যবস্থাপনা ও নিম্নমানের খাবার পরিবেশনের পাশাপাশি রয়েছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্নার অভিযোগও। এতে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ মেয়াদে অপুষ্টির শিকার হচ্ছেন। আবার অসুস্থও হয়ে পড়ছেন কেউ কেউ।

ক্যানটিন ব্যবস্থাপকেরা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ সময়ে মানসম্মত খাবার দেওয়া কঠিন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এ ক্ষেত্রে ভর্তুকি দিতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে অংশীজনদের নিয়ে বসার কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নতুন নেতৃত্ব। আর প্রশাসন ও ছাত্র সংসদ উভয়ের প্রচেষ্টায় পরিস্থিতির উন্নতির আশা করছে প্রশাসন।

শুধু হলের ক্যানটিন নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে খাবারের দোকানগুলোতেও নিম্নমানের খাবার পরিবেশনের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এসব খাবার খেয়ে শিক্ষার্থীদের অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনাও ঘটছে।

বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২৩-২৪ বর্ষের শিক্ষার্থী মো.

তানভীর হাসান। থাকেন শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে। তানভীর জানান, হলের খাবার খেয়ে তিনি দেড় মাসের মতো অসুস্থ ছিলেন। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর সেরে উঠেছেন।

তানভীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর সবচেয়ে বেশি যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি, তা হচ্ছে হলের খাবার নিয়ে। খাবারে খুবই নিম্নমানের সবজি ব্যবহার করা হয়। প্রতিনিয়ত পোকামাকড় পাওয়া যায়।’

তবে খাবারের নিম্নমানের জন্য বর্তমান বাজার পরিস্থিতিকে দায়ী করছেন ক্যানটিন ব্যবস্থাপকেরা। জহুরুল হক হল ক্যানটিনের ব্যবস্থাপক মো. মঈনুদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘খাবারের মান উন্নত করার জন্য যদি শিক্ষার্থীরা বলেন, তাহলে আমাদের দাম বাড়াতে হবে। কারণ, বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম যতটা বেড়েছে, আমাদের খাবারের মূল্যের সঙ্গে সেটি মেলানো যাচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘স্টাফদের বেতন, অন্যান্য খরচ—সবদিক ম্যানেজ করা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে।’

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি হলের ক্যানটিনে গিয়ে দেখা যায়, অস্বাস্থ্যকর ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে খাবার প্রস্তুত করা হচ্ছে। খোলা জায়গায় রাখা খাবারগুলোতে বারবার মাছি বসছে। সেই খাবারগুলোই আবার শিক্ষার্থীদের পরিবেশন করা হচ্ছে। ক্যানটিন, ক্যাফেটেরিয়া বা দোকানগুলোতে যারা কাজ করে, তাদের অনেকেই শিশু। স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে তাদের তেমন ধারণা নেই।

কয়েকটি হলের খাবারের দাম বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ভাত ১০ টাকা, মুরগি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, মাছ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, সবজি ৫ থেকে ১০ টাকা। সে হিসাবে একজনের খাবারে খরচ পড়ে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। বেশির ভাগ ক্যানটিনেই খুবই পাতলা ও নামমাত্র ডাল দেওয়া হয়। অন্যান্য খাবারের রান্নার মানও খারাপ।

পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক খালেদা ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, খাবারের সঠিক স্বাদ না পাওয়ার ক্ষেত্রে রান্নার পদ্ধতি বড় একটা বড় ভূমিকা পালন করে। আর খাবারে পর্যাপ্ত মসলা ব্যবহার না করার কারণে হলের খাবারগুলোর অবস্থা কিছুটা নিম্নমানের হয় বলেও জানান তিনি।

খাবারে কাঁকড়া পাওয়ার পর ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাইদ মুন্সি। পরে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রশাসনিক ব্যাপক পরিবর্তনসহ হলেও ছাত্রদের মৌলিক বিষয়গুলোর পরিবর্তন এখনো হয়নি। খাবারে মশা-মাছি, পোকামাকড় পাওয়া নিত্যদিনের ঘটনা। এসব কারোরই অজানা নয়। তারপরও দেখেও না দেখার ভান করে থাকে।

এই শিক্ষার্থী বলেন, খাবার ছাত্রদের বাজেটের মধ্যে রাখার ছুতোয় প্রতিনিয়ত নিম্নমানের খাবার খেতে হচ্ছে। অথচ প্রশাসন চাইলেই কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে। তিনি বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী বুয়েটের (বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) ক্যানটিনগুলোতেও তুলনামূলক মানসম্মত খাবার দেওয়া হয়। তাতে দাম কিছুটা বাড়লেও আমরা চালিয়ে নিতে পারব।’

ভর্তুকির পরামর্শ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোটাদাগে শিক্ষার্থীদের খাবারের জন্য দুই ধরনের ব্যবস্থা আছে। একটি ডাইনিং বা মেস, অন্যটি ক্যানটিন বা ক্যাফেটেরিয়া। হল প্রশাসন নির্ধারিত স্থানে শিক্ষার্থীদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয় ডাইনিং বা মেস। সেখানে শিক্ষার্থীরাই বাজার করেন ও হিসাব রাখেন। ইজারা বা ভাড়া নেওয়া ব্যবসায়ীদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয় ক্যানটিন। হলের ক্যানটিন-ক্যাফেটেরিয়াগুলো ছাড়াও হল ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে থাকা খাবারের দোকানগুলোও এর অন্তর্ভুক্ত।

ডাইনিং বা মেসে খাবারের দাম তুলনামূলক কম, মানও ভালো। অন্যদিকে ডাইনিংয়ের চেয়ে ক্যানটিনের খাবারের দাম দেড় থেকে দুই গুণ বেশি হলেও মান খারাপ। শিক্ষার্থীদের পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনাও নেই। অন্যদিকে খাবারের মান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো গবেষণা নেই। খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসনের কোনো ভর্তুকিও নেই।

শিক্ষার্থীরা মনে করেন, প্রশাসন ভর্তুকি দিলে খাবারের মান বাড়ানো সম্ভব। পাশাপাশি তদারকি বাড়ালে খাবার পরিবেশনের পরিবেশও ভালো হবে বলে জানান তাঁরা। শিক্ষার্থী তানভীর হাসান বলেন, তদারকির জন্য ক্যানটিনগুলোতে সিসি ক্যামেরা লাগানো যেতে পারে। এ ছাড়া ভর্তুকি রাখা গেলে হলের খাবার সমস্যারও কিছুটা সমাধান হবে।

ছাত্রীদের পাঁচটি হলে খাবারের মানের একই অবস্থা। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থী আনিকা তামজীদ প্রথম আলোকে বলেন, ক্যানটিনে প্রতিদিন প্রায় একই ধরনের খাবার রান্না হয়। এতে খাবারে অনীহা চলে আসে। অনেক সময় রান্না না করার কারণ হিসেবে গ্যাস না থাকার অজুহাত দেওয়া হয়।

আনিকা তামজীদ বলেন, এই খাবার খেয়ে দিনের পর দিন টিকে থাকা দায়। একজন শিক্ষার্থীর প্রতি বেলার ক্যালরি চাহিদা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত খাবার মেনু তৈরি করা। ডাকসু প্রতিনিধিদের এ বিষয়ে কাজ করা প্রয়োজন।

সম্প্রতি সূর্য সেন হলের একটি দোকান থেকে টেস্টিং সল্ট (এমএসজি) পাওয়ার পর দোকানিকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করে আলোচনায় আসেন হল সংসদের নবনির্বাচিত সহসভাপতি (ভিপি) আজিজুল হক। অবশ্য হল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এটি হল সংসদের ভিপির এখতিয়ারে নেই।

আজিজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘হল সংসদ নির্বাচনের পর সূর্য সেন হল ক্যাফেটেরিয়ার অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে কথা বলতেই কিছু সুশীলের রোষানলে পড়েছিলাম। অথচ দুদিন না যেতেই একই ক্যাফেটেরিয়াতে জিয়া হলের এক শিক্ষার্থী খাবারের মধ্যে অপরিষ্কার কাঁকড়া পেয়ে বমি করেছে।’

আজিজুল হক বলেন, ‘আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, ৪২ বছর ধরে শিক্ষার্থীদের অখাদ্য খাইয়ে শোষণ করা ক্যাফেটেরিয়ার মালিককে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। খাবারের মান ও পরিচ্ছন্নতা নিয়ে কারও সঙ্গে কোনো আপস হবে না।’

সূর্য সেন হল ক্যানটিনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম এখন অনেক বেশি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ভর্তুকি দেওয়া হয় না। ভর্তুকির ব্যবস্থা করলে খাবারের মান আরও ভালো হতো।

আরও পড়ুনদোকানিকে হল ভিপির তিন হাজার টাকা জরিমানা, প্রক্টর বললেন, এটা তাঁর এখতিয়ারে নেই১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫অনাবাসিক ছাত্রীদের ভোগান্তি আরও বেশি

আজিমপুরের একটি ছাত্রী মেসে থাকেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী সুমাইয়া ছানোয়ার সাদিয়া। ক্লাসের জন্য কোনো কোনো দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ক্যাম্পাসে থাকতে হয়। সে ক্ষেত্রে তাঁকে দুপুরের খাবার খেতে পড়তে বিপাকে।

সুমাইয়া প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণত সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে যাঁরা ক্লাস করেন, তাঁদের জন্য সবচেয়ে কাছের বিকল্প হলো কফি হাট, সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে অথবা হাকিম চত্বরের দোকানগুলোতে খাবার খাওয়া। কফি হাটে খাবারের দাম একটু বেশি। সব সময় খাওয়াও যায় না। আর সেন্ট্রাল লাইব্রেরি বা হাকিম চত্বরের দোকানে খিচুড়ি, ফ্রায়েড রাইস ও অন্যান্য যেসব ভাজাপোড়া পাওয়া যায়, সেগুলো প্রতিদিন খাওয়ার মতো নয়।

এই শিক্ষার্থী বলেন, কখনো যদি ভাত খেতে ইচ্ছা করে, অনাবাসিক মেয়েদের যেতে হয় চারুকলা, আইবিএ (ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট) ক্যানটিন, এফবিএস ক্যানটিন অথবা আইইআর (শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট) ক্যানটিনে। তিনি বলেন, ছেলেরা সাধারণত যেকোনো হলে যেতে পারেন। কিন্তু অনাবাসিক মেয়েরা নিজেদের হলেই সর্বোচ্চ গেস্টরুম (অতিথি কক্ষ) পর্যন্ত যেতে পারেন। অনেক সময় খাবার খেতে বেশি দূরে যাওয়াও যায় না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্যানেলগুলো শিক্ষার্থীদের খাবারের সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এ বিষয়ে ডাকসুর নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এস এম ফরহাদ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা দ্রুতই এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটা ভালো সমাধান আসবে বলে তিনি আশা করেন।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘হলের খাবারের মান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাজ করেছে ও করছে। কিছু ঘাটতি হয়তো ছিল। তবে এখন ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিরা নির্বাচিত হয়েছেন। প্রশাসন ও ছাত্র সংসদ উভয়ের প্রচেষ্টায় আশা করি এ সমস্যার সমাধান করা যাবে।’

আরও পড়ুনশিক্ষার্থীরা কী খাচ্ছেন, নজর নেই কারও২৬ জানুয়ারি ২০২২

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স র য স ন হল প রথম আল ক হল র খ ব র র ব যবস থ র জন য ভর ত ক হল ক য র পর স ন র পর আম দ র অবস থ সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

অভিবাসন বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল নেদারল্যান্ডস, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ

অভিবাসন ইস্যুকে কেন্দ্র করে অস্থির হয়ে উঠেছে নেদারল্যান্ডস। রাজধানী দ্য হেগে হাজারো বিক্ষোভকারী রাস্তায় নামেন অভিবাসনবিরোধী দাবিতে। এসময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর পাথর ও বোতল নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও পানিকামান ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দ্য হেগে অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন এবং পাথর-বোতল ছোড়েন। এ ঘটনায় অন্তত ৩০ জনকে আটক করা হয় এবং দুই পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। অভিবাসন নীতি কঠোর করার দাবিতে ডানপন্থি কর্মীদের নেতৃত্বে এই বিক্ষোভ আয়োজন করা হয়েছিল।

আরো পড়ুন:

ভূমধ্যসাগরে নৌযানে অগ্নিকাণ্ড, ৫০ শরণার্থীর মৃত্যু

মালদ্বীপে অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে অভিযান, আটক ৭ জন

নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কোফ বিক্ষোভে ঘটে যাওয়া সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “নির্লজ্জ সহিংসতার এমন দৃশ্য একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

নেদারল্যান্ডসের পূর্ববর্তী নির্বাচনে জয়ী এবং গত ২৯ অক্টোবরের ভোটের আগে জনমত জরিপে নেতৃত্ব ধরে রাখা ডানপন্থি নেতা গির্ট ওয়াইল্ডার্সকে বিক্ষোভে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি এতে যোগ দেননি। উইল্ডার্স এই সহিংসতাকে ‘মূর্খদের কাজ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

 

বিক্ষোভটি আয়োজন করেছিলেন এক ডানপন্থি কর্মী, যিনি অভিবাসন নীতি কঠোর করার ও আশ্রয়প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। বিক্ষোভকারীরা ডাচ পতাকা ও উগ্র-ডানপন্থি সংগঠনের পতাকা হাতে নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এসময় বাম দলের প্রধান কার্যালয়েও হামলা চালানো হয়।

প্রসঙ্গত, উইল্ডার্স তার কট্টর-ডানপন্থি পিভিভি দলকে শাসক জোট থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার পর গত জুনে নেদারল্যান্ডস সরকার ভেঙে পড়ে। অভিবাসন ইস্যুতেই এ বিরোধ সৃষ্টি হয়। উইল্ডার্স অতিরিক্ত ১০টি আশ্রয়বিরোধী ব্যবস্থা চাপিয়ে দিতে চেয়েছিলেন- যার মধ্যে আশ্রয়ের আবেদন স্থগিত রাখা, নতুন রিসেপশন সেন্টার তৈরি বন্ধ করা এবং পরিবার পুনর্মিলন সীমিত করাও ছিল।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ