নাজওয়ান দারবিশের জন্ম জেরুজালেমে, ১৯৭৮ সালে। বিশটির বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে তাঁর কবিতা। নিউইয়র্ক রিভিউ অব বুকস তাঁকে ‘আরবি ভাষার অন্যতম প্রধান কবি’ বলে অভিহিত করেছে। স্থানিক (ফিলিস্তিনি) যেমন, তেমনই বিশ্বজনীন তাঁর কবিতা। বেদনাময় ইতিহাস, ভৌগোলিক ক্ষত ও নির্বাসনের অভিজ্ঞতাকে তিনি তুলে ধরেন রূপক ও প্রতীকাশ্রয়ী এক নতুন কাব্যভাষায়; প্রচলিত আরব কবিতার বর্ণনাভঙ্গি থেকে যা একেবারেই আলাদা। মিতভাষণের মধ্য দিয়ে তাঁর কবিতারা জাগিয়ে তোলে বহুস্তর অর্থবাচকতা ও সৌন্দর্য। তিনি শুধু ফিলিস্তিন বা আরব পরিচয়েই সন্তুষ্ট থাকতে চান না। দেশের গণ্ডি ও স্থানিকতার অর্গল ভেঙে ব্যক্তিগত আশা ও বেদনার ভাষাকে তিনি করে তোলেন সর্বজনীন আশা ও দুঃখের ভাষা। যতটা না রাজনৈতিক, তারওচেয়ে বেশি চিন্তাঘন ও মরমি তাঁর কবিতা।

মাহমুদ দারবিশের সঙ্গে তাঁর শুধুই নামের মিল। দুজনই ফিলিস্তিনের কবি। নাম ও জাতিগত পরিচয়টুকু বাদ দিলে দুজনের কাব্যভাষা পুরোপুরি আলাদা। মাহমুদ দারবিশের কবিতায় ভিটেমাটি হারানোর বেদনা, নির্বাসনের ট্র্যাজেডি আর জাতিগত সংগ্রামের অভিজ্ঞতা সরাসরি উঠে আসে। অন্যদিকে, নাজওয়ান দারবিশ নিপীড়ন ও বঞ্চনাকে তুলে ধরেন রূপকে-ইঙ্গিতে। তাঁকে বলা হয়, ‘রাজনৈতিক অস্তিত্ববাদী রূপকাশ্রয়ী কবি’। মৃত্যুকে তিনি কল্পনা করেন ‘একটি জানালার শূন্যতায় ঝুলে থাকা ছায়া’ হিসেবে; আর নির্বাসনকে ‘পায়ের নিচে ভেঙে পড়া এক সেতু’র সঙ্গে।

চিলির কবি রাউল সুরিতা বলেছিলেন, ‘কবিতা হচ্ছে হিংসার মহাগাথা… একই সঙ্গে তা ভালোবাসা-করুণারও মহাগাথা’। নাজওয়ান দারবিশের কবিতাও তারই প্রমাণ। কবিতায় ফিলিস্তিনের ব্যথা-বঞ্চনাকে তিনি এমনভাবে তুলে আনেন, যা হয়ে ওঠে সমগ্র মানবতার ব্যথা।

ফিলিস্তিনি কবি নাজওয়ান দারবিশ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ রব শ র

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালকে হস্তান্তরের জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালকে হস্তান্তরের জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় দুজনকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানিয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের দ্বিতীয় কোনো দেশ আশ্রয় দিলে তা হবে অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার শামিল। আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন অনতিবিলম্বে দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই ব্যক্তিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে।’

দুই দেশের মধ্যে থাকা প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে দুজনকে হস্তান্তর করাটা ‘ভারতের জন্য অবশ্যপালনীয় দায়িত্বও বটে’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ওই সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আত্মগোপনে চলে যান। পরে তাঁকেও ভারতে দেখা গেছে। ভারত থেকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন তিনি।

অন্তর্বর্তী সরকার এর আগেও শেখ হাসিনাকে হস্তান্তর করার জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো কিছু বলেনি ভারত সরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ