একদিন ক্রিকেট খেলতে গিয়ে বাঁ কনুই ডিজলোকেটেড (জয়েন্ট নড়ে যাওয়া) হয়ে গেল। আমাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া দরকার; কিন্তু নিয়ে যাওয়ার মতো কেউ নেই। আব্বা গেছেন পদ্মার চরে কাজ করতে। অনেক খুঁজেও কাউকে পাওয়া গেল না। নিরুপায় হয়ে মা–ই আমাকে কোলে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ছুটলেন হাসপাতালের দিকে। বাড়ি থেকে বেশ দূরেই উপজেলা সদর। আমাদের মা-ছেলের খুব অসহায় লাগছিল। হাসপাতালে গিয়ে মা একে-ওকে জিজ্ঞাসা করে অনেকক্ষণ পরে একজন চিকিৎসকের কাছে আমাকে নিয়ে যেতে পারলেন। চিকিৎসা হলো।

আমি তখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি। সেদিন মনে হয়েছিল, বড় হয়ে আমি চিকিৎসকই হব। অসহায়দের সাধ্যমতো সেবা করার চেষ্টা করব।

সে বছরই জীবনে আরেকটি শিক্ষা পাই। পিইসির (প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা) আগে মডেল টেস্ট দিতে হয়। সেই পরীক্ষা দিতে হয় নিজেদের স্কুল ছেড়ে উপজেলার অন্য কোনো স্কুলে। আমাদের পরীক্ষা পড়েছিল মীরগঞ্জে। এ জন্য সব বন্ধু নতুন জামা কেনে। পরীক্ষার দিন তারা নতুন জামা গায়ে দিয়ে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিল। আমার কোনো ভালো জামা ছিল না। তাদের দেখে আমিও জিদ করি, নতুন জামা ছাড়া পরীক্ষা দিতে যাব না। যাব না মানে যাবই না—ঘরে বসে কাঁদছিলাম। শেষমেশ আমার বড় ভাই জোর করে আমাকে ধরে নিয়ে পরীক্ষার হলে বসিয়ে দিয়ে আসেন। তখন পরীক্ষার ৪০ মিনিট পার হয়ে গেছে।

ক্লাসে আমি ফার্স্ট বয়; কিন্তু সেই পরীক্ষায় আমি তৃতীয় হয়ে গেলাম। ভীষণ মন খারাপ হলো। আস্তে আস্তে বুঝতে শিখলাম, যখন-তখন নতুন জামা কিনে দেওয়ার সামর্থ্য আমার পরিবারের নেই। মা বোঝালেন, নতুন জামা কিনতে হলে ভালো করে পড়াশোনা করতে হবে।

বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে ইন্টার্নশিপ শুরু করছেন অর্ণব হাসান.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নত ন জ ম পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

নেত্রকোণায় চালককে হত্যা করে মোটরসাইকেল ছিনতাই

নেত্রকোণার আটপাড়ায় সোহাগ চৌধুরী (৪৫) নামে এক চালককে হত্যা করে তার মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার সুখাইর ইউনিয়নের বাউসা হাওরে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। সোহাগ মোটরসাইকেলে ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করতেন। 

বুধবার (১৯ নভেম্বর) আটপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশরাফুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

আরো পড়ুন:

পিঁড়ির আঘাতে স্বামীর মৃত্যু, স্ত্রী আটক

‘আউট’ লিখে ভিডিও দেওয়া ছাত্রদল কর্মীকে আসামি করে মামলা 

নিহত সোহাগ জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার মেন্দীপুর গ্রামের মৃত মতিউর রহমান চৌধুরীর ছেলে। তার এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ ছয় সদস্যের সংসার চালাতেন সোহাগ। মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন। রাতে মদন থেকে যাত্রী নিয়ে মোহনগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। আটপাড়া উপজেলার বাউসা হাওরে তাকে হত্যা করে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠায়।

আটপাড়া থানার ওসি মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, “লাশ উদ্ধার করে আজ বুধবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তের পাশাপাশি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা করা হচ্ছে।”

 

ঢাকা/ইবাদ/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ