রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, ভোট ২৯ ডিসেম্বর
Published: 18th, November 2025 GMT
আন্দোলনের মুখে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার রাত ৯টার ব্রাকসুর এ তফসিল ঘোষণা করা হয়।
তফসিল ঘোষণার আগে ব্রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ্জামান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ব্রাকসু প্রত্যেকের আবেগের জায়গা। আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে, শিক্ষার্থীরা এই রোডম্যাপ মেনে নেবে ও সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করবে। আমরা চেষ্টা করেছি কম সময়ে এটা করতে। কিন্তু কিছু প্রক্রিয়া মানতে কিছু সময় লাগে। নির্বাচনটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে যা যা করার দরকার, আমরা সেই ধারাতে আছি।’
তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে ২ ও ৩ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ ৬ ডিসেম্বর। মনোনয়ন প্রত্যাহারের তারিখ ৯ ডিসেম্বর। ১০ ডিসেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট করা হবে। ২৯ ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে।
এর আগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপের দাবিতে মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন একদল শিক্ষার্থী।
এদিকে ২৯ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের তারিখ ঘোষণা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল স্বাগত জানালেও প্রত্যাখান করেছেন ইসলামি ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কয়েকজন সমন্বয়ক। তাঁরা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা মো.
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আব্দুর রাকিব মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘শহীদ আবু সাঈদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত ছিল শিক্ষার্থীদের চাওয়া-পাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়া। আজকে যে তফসিল দেওয়া হয়েছে, তাতে আমরা মনে করছি, ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়। কারণ, শীতকালীন ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। আমাদের প্রত্যাশা, ভোটের তারিখ পরিবর্তন করে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ভোট দিতে হবে।’
জাতীয় ছাত্রশক্তির রংপুর মহানগর কমিটির সদস্যসচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাজিম উল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘বহুল প্রতীক্ষিত ব্রাকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা হলো। কিন্তু তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যড়যন্ত্রের মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে পিছিয়ে দিয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থী এই রোডম্যাপ প্রত্যাখ্যান করেছে।’
এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ্জামান বলেন, ‘১৬ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শীতকালীন অবকাশ আছে। শীতকালীন অবকাশের সময় পুনর্নির্ধারণের জন্য উপাচার্যের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে, এই ছুটি যেন জানুয়ারি বা অন্য সময়ে দেওয়া হয়। আশা করব, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শীতকালীন ছুটি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পর দেবে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
প্রার্থীদের লাগবে ডোপ টেস্ট, অনলাইনে ব্যক্তি আক্রমণ ও গুজব ছড়ালে ব্যবস্থা
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (শাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হতে ডোপ টেস্ট করাতে হবে। একই সঙ্গে ভোটার ও প্রার্থীদের নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণাত্মক ও গুজব ছড়ালে ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশনের মনিটরিং সেল।
গতকাল রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত শাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আচরণবিধির ‘মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, দাখিল ও প্রত্যাহার’ শীর্ষক অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রার্থী নিজ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগে ডোপ টেস্টের স্যাম্পল দেওয়ার পর প্রাপ্ত রসিদটি মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেবেন। নির্বাচন কমিশন কার্যালয় সব প্রার্থীর ডোপ টেস্টের প্রতিবেদন সংগ্রহ করবে। ডোপ টেস্টের ফলাফল ‘পজিটিভ’ হলে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে। প্রয়োজনে ডোপ টেস্ট রিপোর্ট সম্পর্কে নির্বাচন কমিশন গঠিত রিভিউ কমিটির চূড়ান্ত মতামত নেওয়া হবে।
অনলাইনে প্রচার-প্রচারণার নিয়ম ও তা লঙ্ঘনের বিষয়ে আচরণবিধির অনুচ্ছেদ-৫-এ বলা হয়েছে, অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালানো যাবে, তবে তা অবশ্যই আইনসিদ্ধ ইতিবাচক পদ্ধতিতে হতে হবে। দেশের প্রচলিত আইনে নিষিদ্ধ এমন কোনো কাজ অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা যাবে না।
এতে আরও বলা হয়, নির্বাচনী প্রচারণা ও প্রচারপত্রে কিংবা প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত আক্রমণ, চরিত্র হনন, গুজব, মানহানিকর আচরণ, অশালীন উক্তি, উসকানিমূলক কোনো কথা কিংবা কারও বিরুদ্ধে কোনো অসত্য তথ্য ছড়ানো, কোনো ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক দল বা সংশ্লিষ্ট কারও অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন কোনো কিছু করা যাবে না। নির্বাচন কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো প্রচারণা করা যাবে না।
এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নির্বাচনের জন্য ক্ষতিকর যেকোনো অনলাইন সাইট বা গ্রুপ বন্ধ, কনটেন্ট ডিলিট এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কমিশনের মনিটরিং সেল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে। আচরণবিধিতে এমনটাই উল্লেখ করা আছে।
আচরণবিধি লঙ্ঘনে শাস্তি কী, সে বিষয়ে উল্লেখ আছে অনুচ্ছেদ-১৮ তে। এতে বলা হয়েছে, ‘কোনো প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে কেউ বা কোনো ভোটার নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, প্রার্থিতা বাতিল অথবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা অথবা রাষ্ট্রীয়/বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী অন্য যেকোনো দণ্ডে দণ্ডিত হবে। নির্বাচনসংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।’