ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত অবস্থায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দগ্ধ এক তরুণী ছয় দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা গেছেন। তাঁর নাম মীম (২২)। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

১২ নভেম্বর দিবাগত রাত একটার দিকে ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাঐখোলা এলাকায় চলন্ত অবস্থায় যাত্রীবাহী ওই বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তখন পুলিশ জানিয়েছিল, এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।

আজ মঙ্গলবার রাতে টাঙ্গাইলের বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালালউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর তাঁরা জানতেন না কেউ আহত হয়েছেন। ঘটনার পরপর সব যাত্রী চলে যান। দুই দিন পর জানতে পারেন মীম নামের একজন আহত হয়েছেন। তিনি পাবনার বেড়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রথমে চিকিৎসা নেন। পরে ঢাকায় জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নেন।

আগুনের ঘটনায় ১৩ নভেম্বর গোড়াই হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

নিহত মীমের স্বামী মোহাম্মদ আলী জানান, তাঁরা ঢাকার তুরাগ এলাকায় থাকেন। মীমের দাদার মৃত্যুর খবর পেয়ে ১২ নভেম্বর রাতে তাঁরা পাবনার বেড়া উপজেলায় যাচ্ছিলেন। তাঁদের বাস টাঙ্গাইলের বাসাইল এলাকায় আসার পর বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুনে তিনি সামান্য দগ্ধ হলেও মীমের শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রথমে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মীমকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।

আরও পড়ুনটাঙ্গাইলে গভীর রাতে যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে আগুন১৩ নভেম্বর ২০২৫

শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মারুফা লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেলের মর্গে পাঠান। বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনেরা মৃতদেহ গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে নিয়ে যান। মীমের বাড়ি পাবনার বেড়া উপজেলার চর প্যাচাকোলা গ্রামে।

মীমের চাচা সাইদুল ইসলাম বলেন, গত তিন মাস আগে মীমের বিয়ে হয়। তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে ডিপ্লোমা কোর্স করছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ য় উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, ভোট ২৯ ডিসেম্বর

আন্দোলনের মুখে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার রাত ৯টার ব্রাকসুর এ তফসিল ঘোষণা করা হয়।

তফসিল ঘোষণার আগে ব্রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ্জামান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ব্রাকসু প্রত্যেকের আবেগের জায়গা। আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে, শিক্ষার্থীরা এই রোডম্যাপ মেনে নেবে ও সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করবে। আমরা চেষ্টা করেছি কম সময়ে এটা করতে। কিন্তু কিছু প্রক্রিয়া মানতে কিছু সময় লাগে। নির্বাচনটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে যা যা করার দরকার, আমরা সেই ধারাতে আছি।’

তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে ২ ও ৩ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ ৬ ডিসেম্বর। মনোনয়ন প্রত্যাহারের তারিখ ৯ ডিসেম্বর। ১০ ডিসেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট করা হবে। ২৯ ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে।

এর আগে ‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপের দাবিতে মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন একদল শিক্ষার্থী।

এদিকে ২৯ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের তারিখ ঘোষণা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল স্বাগত জানালেও প্রত্যাখান করেছেন ইসলামি ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কয়েকজন সমন্বয়ক। তাঁরা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা মো. তুহিন রানা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আট হাজার শিক্ষার্থীর একেক রকম মতামত। নির্বাচন কমিশন যা যৌক্তিক মনে করেছে, তা ঘোষণা করেছে। আমরা সাধুবাদ জানাই।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আব্দুর রাকিব মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘শহীদ আবু সাঈদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত ছিল শিক্ষার্থীদের চাওয়া-পাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়া। আজকে যে তফসিল দেওয়া হয়েছে, তাতে আমরা মনে করছি, ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়। কারণ, শীতকালীন ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। আমাদের প্রত্যাশা, ভোটের তারিখ পরিবর্তন করে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ভোট দিতে হবে।’

জাতীয় ছাত্রশক্তির রংপুর মহানগর কমিটির সদস্যসচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাজিম উল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘বহুল প্রতীক্ষিত ব্রাকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা হলো। কিন্তু তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যড়যন্ত্রের মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে পিছিয়ে দিয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থী এই রোডম্যাপ প্রত্যাখ্যান করেছে।’

এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ্জামান বলেন, ‘১৬ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শীতকালীন অবকাশ আছে। শীতকালীন অবকাশের সময় পুনর্নির্ধারণের জন্য উপাচার্যের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে, এই ছুটি যেন জানুয়ারি বা অন্য সময়ে দেওয়া হয়। আশা করব, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শীতকালীন ছুটি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পর দেবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ