১৯৬০-এর দশক থেকেই পুরুষদের জন্য একটি বিশেষ দিবস প্রচলন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এরপর ১৯৬৯ সালে নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে ২৩ ফেব্রুয়ারিকে পুরুষ দিবস হিসেবে পালনের আগ্রহের কথা উল্লেখ করা হয়। কিন্তু ১৯২২ সাল থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নে ২৩ ফেব্রুয়ারি দিনটি ‘রেড আর্মি অ্যান্ড নেভি ডে’ হিসেবে পালিত হতো। যা মূলত পুরুষদের বীরত্ব ও ত্যাগের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য উদযাপিত হতো। এ জন্য দিনটি গৃহীত হয়নি।
১৯ নভেম্বর, আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস প্রথম প্রতিষ্ঠা করেন ড.
আরো পড়ুন:
হার্মিস: ভাইয়ের গরু চুরি করে বীণা উপহার দিয়েছিলেন
কণ্ঠস্বর ভালো রাখার জন্য যেসব অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন
প্রতি বছর এই দিনে পুরুষ এবং ছেলেদের স্বাস্থ্য, লিঙ্গ সমতা, ইতিবাচক পুরুষ ভূমিকা এবং সমাজে পুরুষদের অবদানকে তুলে ধরা হয়।
এই দিবসের লক্ষ্য হলো পুরুষদের মুখোমুখি হওয়া নানা সমস্যা, যেমন আত্মহত্যা, সহিংসতা এবং মানসিক চাপ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করার সুযোগ তৈরি করা। আরও কিছু উদ্দেশ্য রয়েছে—
ইতিবাচক রোল মডেল তুলে ধরা
শুধুমাত্র বিখ্যাত ব্যক্তিরা নন, বরং প্রতিদিনের সাধারণ পুরুষদের ইতিবাচক অবদানকে সমাজে তুলে ধরা।
স্বাস্থ্য ও সুস্থতা
পুরুষ ও ছেলে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা।
লিঙ্গ সমতা প্রতিষ্ঠা
লিঙ্গভিত্তিক সমতা উন্নীত করা এবং নারী-পুরুষের আলোচনায় ভারসাম্য আনা।
বৈষম্য দূর করা
পুরুষদের প্রতি বিদ্যমান বৈষম্যগুলো সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া
পরিবার, সমাজ এবং সম্প্রদায়ে পুরুষদের ইতিবাচক অবদানকে উদযাপন ও স্বীকৃতি দেওয়া।
ঢাকা/লিপি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সমাজ পুরুষকে শিখিয়েছে ‘কান্না করা যাবে না’
শুরুতেই হাওয়ার্ড কান্ট্রি জেনারেল হসপিটালের সাইকিয়াট্রি বিভাগের প্রধান অ্যান্ড্রু অ্যাঞ্জেলিনোর মন্তব্য ধরে এগোনো যাক। তিনি বলেছেন, ‘‘নারীরা সাধারণত ডিপ্রেশনে থাকলে কাঁদেন। অন্যদিকে পুরুষরা রাগ করের। কেননা আমরা সমাজ ছেলেদের শিখিয়েছে, কান্না করা যাবে না।’’
এই যে পুরুষ কাঁদতে পারেন না, তাহলে রাগলে তিনি কী করেন? অ্যান্ড্রু বলছেন, ‘‘পুরুষ কাঁদতে পারেন না, তাই কাঁদার বদলে তারা রেগে যান। রাগ প্রকাশে তারা বিভিন্ন আক্রমণাত্মক পদ্ধতিও প্রয়োগ করেন।’’
আরো পড়ুন:
আজ আন্তর্জাতিক ‘পুরুষ দিবস’
হার্মিস: ভাইয়ের গরু চুরি করে বীণা উপহার দিয়েছিলেন
কান্না মানুষের আবেগ প্রকাশের ভাষা। তাহলে পুরুষ কাঁদতে পারবেন না কেন? পরিসংখ্যান দেখা গেছে যে নারীরা প্রতি মাসে পাঁচবার কাঁদেন। আর পুরুষেরা কাঁদের একবার, তাও লুকিয়ে কাঁদেন। তাদের কান্নাকে মোটেও ভালোভাবে নেওয়া হয় না। এই পার্থক্যটা সামাজিক ও লৈঙ্গিক কারণে হয়ে থাকে।
আমাদের সমাজের পুরুষেরা পরিবারের বাড়তি প্রত্যাশার চাপ বহন করতে করতে কখন ক্লান্ত হয়ে পড়েন— আমরা অনেক সময় বুঝতেও পারি না। অথচ তারা বাড়তি প্রত্যাশা পূরণ করতে গিয়ে হতাশায় ডুবে যান। অতিরিক্ত ডিপ্রেশন থেকে পুরুষ বিরক্ত প্রকাশ, হঠাৎ রেগে যাওয়া, নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারানোর মতো কাজগুলো করে থাকেন। অনেক সময় অতিরিক্ত ঝুঁকিগ্রহণ করার মাধ্যমেও মেল ডিপ্রেশনের প্রকাশ করেন তারা।
মনোবিদরা বলেন, ‘‘পুরুষদের ডিপ্রেশন বিষয়ে কথা বলার পরিবর্তে মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়ার আশঙ্কা বেশি থাকে’’।
এদিকে পুরুষদের মধ্যে মানসিক সুস্থতা নিয়ে সচেতনতাও বেশ কম। তাদের কাছে আবেগ প্রকাশ মানেই সমাজের কাছে, পরিবারের কাছে ছোট হয়ে যাওয়া। পুরুষদের নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠা উচিত। নিজের আবেগ প্রকাশে ট্যাবু থেকে বের হওয়া উচিত।
ঢাকা/লিপি