সলিল চৌধুরীর ১০০ বছর, সুরের জাদুকরকে কতটা চেনেন
Published: 19th, November 2025 GMT
সলিল চৌধুরীর গান মানে যেন শুধু কোনো একটা গান নয়, একসঙ্গে অনেক গানের ঠাসবুনটে তৈরি এক অপূর্ব বিশাল সমাবেশ। যেন একটি বিরাট রঙিন কার্পেট, যা বাইরে থেকে দেখে একক মনে হলেও তার মধ্যে থাকে অসংখ্য রঙিন সুতার সূক্ষ্ম নকশা।
প্রকৃতির সুর
পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার চিংড়িপোটা গ্রামে জন্মেছিলেন সলিল চৌধুরী। শৈশবের অধিকাংশ সময় কেটেছে আসামের চা–বাগানে। সেখানে তাঁর বাবা জ্ঞানেন্দ্রনাথ চৌধুরী চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতেন; নিজেও সংগীতের প্রতি গভীর অনুরাগী ছিলেন। ছোটবেলায়, চার-পাঁচ বছর বয়সে চা–শ্রমিকদের গান, গ্রামীণ সংগীত এবং আসামি লোকগান দ্বারা তিনি গভীরভাবে প্রভাবিত হন। অন্যদিকে বাবার সংগ্রহের বাখ, বিটোফেন ও মোজার্টের গ্রামোফোন রেকর্ড তাঁকে পাশ্চাত্য ক্ল্যাসিক্যাল সংগীতের প্রতিও আগ্রহী করে তোলে। পাশাপাশি প্রকৃতির রহস্যময় সুর, বনের পাতার মর্মর শব্দ আর পাখির ডাক শুনতে শুনতে বড় হয়েছেন তিনি।
সিনেমার সলিল
পঞ্চাশের দশকে বাঙালি শ্রোতা যখন সলিল চৌধুরীকে চিনে ফেলেছেন, তখন তিনি পাড়ি দিলেন মুম্বাই। সলিল চৌধুরীর লেখা ‘রিক্সাওয়ালা’ গল্প অবলম্বনে পরিচালক বিমল রায় তৈরি করেছেন ‘দো বিঘা জমিন’। ছবির চিত্রনাট্যকার সলিল চৌধুরী পেলেন সুরকার হিসেবেও দায়িত্ব। গীতিকার শৈলেন্দ্রর কথায় সুর দিলেন সলিল। আসমুদ্র হিমাচল সেই সুর মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ল, ‘ধরতি কহে পুকারকে,/ বীজ বিছালে প্যার কে, /মৌসম বিতা যায়, মৌসম বিতা যায়.
এরপর ‘মধুমতী’ সিনেমার গানগুলোতে ‘আজা রে পরদেশী’, ‘চড় গয়ি পাপি বিছুয়া’, ‘দিল তড়প তড়প কে কহে রহা হ্যায়’, ‘ঘড়ি ঘড়ি মেরা দিল ধড়কে’, ‘সুহানা সফর ঔর ইয়ে মৌসম হাসিন’ আলোচিত হয়। এরপর হিন্দি ছবির গানে সলিল চৌধুরীকে থামানো যায়নি। ‘আনন্দ’, ‘ছায়া', ‘পরখ’, ‘মেরে আপনে’ ইত্যাদি ছবিতে জনপ্রিয় হয়েছিল সলিল চৌধুরীর সুর।
পরে তিনি পশ্চিমা সংগীত ও ফিউশন করে সৃষ্টিকে প্রসারিত করেছিলেন; কিন্তু বাঙালি লোকসংগীতের যোগ বজায় রেখেছিলেন আজীবন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৭৫টি হিন্দি সিনেমা ছাড়াও সুরারোপ করেছেন ৪১টি বাংলা সিনেমায়।সলিল চৌধুরী। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাতে এক ঘণ্টার ব্যবধানে সাভার-ধামরাইয়ে দুই বাসে আগুন
ঢাকার ধামরাই ও সাভার উপজেলায় রাতে প্রায় এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
রোববার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১০টার দিকে দুটি মোটরসাইকেলে তিনজন ব্যক্তি এসে ডি–লিংক পরিবহনের পার্ক করা একটি বাসের পেছনের জানালা ভেঙে ভেতরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত সেখান থেকে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন পানি ও বালু ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। আগুনে বাসের ভেতরের অধিকাংশ আসন পুড়ে গেছে।
নৈশপ্রহরী ফারুক বলেন, তিনজন এসে প্রথমে বাসে ইট মারে। পরে গানপাউডার দিয়ে আগুন লাগিয়ে দ্রুত চলে যায়। এরপর উপজেলা সড়কের দিকে পালিয়ে যায়।
ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন অফিসার মো. সোহেল রানা জানান, রাত ১০টা ১৫ মিনিটে সংবাদ পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বাসের ভেতরে পেছন দিক থেকে আগুন লাগানো হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এতে গানপাউডার ব্যবহার করা হয়েছে।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, পার্ক করা বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তে কাজ চলছে।
এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর সাভারের বিরুলিয়া বেড়িবাঁধসংলগ্ন বটতলা এলাকায় অন্য একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সাভার মডেল থানার পুলিশ জানায়, রাত সাড়ে আটটার দিকে আলিফ পরিবহনের বাসটি পার্ক করে বাড়িতে খাবার খেতে যান মালিক আমজাদ হোসেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নেভান।
আমজাদ হোসেন বলেন, পুরো বাসটাই পুড়ে গেছে। এতে অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সাভার মডেল থানার বিরুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল ওয়াহাব বলেন, বাসের মালিক নিজেই চালক। ঋণ করে বাসটি কেনা হয়েছিল। রাতে বাসটি রেখে তিনি খাবার খেতে যান। পার্ক করা বাসে কে বা কারা আগুন দিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।