খাশোগি হত্যাকাণ্ডের কিছুই জানতেন না সৌদি যুবরাজ: ট্রাম্প
Published: 19th, November 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে ‘কিছুই জানতেন না’।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) তিনি ওয়াশিংটনে যুবরাজকে স্বাগত জানিয়ে এ মন্তব্য করেন। খবর বিবিসির।
আরো পড়ুন:
সৌদি আরবকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দিতে রাজি ট্রাম্প
সৌদিতে বাস-ট্যাঙ্কারের সংঘর্ষে ৪২ ভারতীয় ওমরাহযাত্রী নিহত
ট্রাম্পের বক্তব্য ২০২১ সালে প্রকাশিত মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, যুবরাজ ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেটে খাশোগিকে গ্রেপ্তার বা হত্যা করার পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছিলেন। তবে মোহাম্মদ বিন সালমান বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং দাবি করেছেন, সৌদি আরব হত্যাকাণ্ডের যথাযথ তদন্ত করেছে।
২০১৮ সালে ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেটে খাশোগিকে হত্যা ও টুকরো টুকরো করে ফেলার পর যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি সম্পর্কে অস্থিরতা তৈরি হয়। ওই ঘটনার পর যুবরাজের এটাই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে এক সাংবাদিক খাশোগি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে প্রশ্ন করলে ট্রাম্প ওই সাংবাদিককে এক হাত নেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আপনি এমন একজনের কথা বলছেন যিনি অত্যন্ত বিতর্কিত ছিলেন। আপনি যে ভদ্রলোকের কথা বলছেন, তাকে অনেকেই পছন্দ করেননি। আপনি তাকে পছন্দ করুন বা না করুন, ঘটনা ঘটেই থাকে।”
ট্রাম্প আরো বলেন, “কিন্তু তিনি (যুবরাজ) এ সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। আমাদের অতিথিদের বিব্রত করার দরকার নেই।”
এ সময় যুবরাজ বলেন, ঘটনাটি ছিল ‘বেদনাদায়ক’ ও ‘বড় ভুল’, তবে রিয়াদ এ নিয়ে সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে।
২০২১ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনে অধীনে প্রকাশিত গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, যুবরাজ ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেটে খাশোগিকে গ্রেপ্তার বা হত্যা করার পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছিলেন। ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম মেয়াদে হোয়াইট হাউজ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।
হত্যাকাণ্ডের পর কয়েকজন সৌদি কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও যুবরাজের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সেসময় সৌদি আরব গোয়েন্দা প্রতিবেদনটিকে ‘মিথ্যা, নেতিবাচক ও অগ্রহণযোগ্য’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছিল।
খাশোগির স্ত্রী হানান এলাত যুবরাজকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে হানান এলাত বলেন, “যুবরাজ বলেছেন তিনি দুঃখিত, তাই তার আমার সঙ্গে দেখা করা উচিত, ক্ষমা চাওয়া উচিত এবং আমার স্বামীকে হত্যার জন্য আমাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত।” যুক্তরাষ্ট্রে খাশোগির স্ত্রীর রাজনৈতিক আশ্রয় মঞ্জুর করা হয়, তিনি ওয়াশিংটন ডিসি এলাকায় থাকেন।
মঙ্গলবার বৈঠকে ট্রাম্প ও যুবরাজ পারমাণবিক সহযোগিতা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করেন।
যুবরাজ জানান, যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি বিনিয়োগ ৬০০ বিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার করা হবে। পাশাপাশি সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা করছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি এফ-৩৫ চুক্তির সম্ভাবনায় মধ্যপ্রাচ্যে নতুন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বর্তমানে অঞ্চলটিতে কেবল ইসরায়েলই এফ-৩৫ পরিচালনা করে। ইসরায়েল আশঙ্কা করছে, সৌদির হাতে একই ধরনের উন্নত যুদ্ধবিমান গেলে তাদের সামরিক আধিপত্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এ বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, “সৌদিদের যে মডেল দেওয়া হবে তা প্রায় ইসরায়েলের ব্যবহৃত সংস্করণের মতোই হবে। সৌদি আরব বড় মিত্র, ইসরায়েলও বড় মিত্র। আমি জানি, ইসরায়েল চাইবে আপনাদের তুলনামূলক কম সক্ষমতার বিমান দেওয়া হোক।”
ট্রাম্প আরো বলেন, “কিন্তু আমার মতে, তারা উভয়ই এমন একটি পর্যায়ে আছে যেখানে তাদের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানো উচিত।”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স দ আরব য বর জ য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র হত য ক ণ ড ইসর য় ল য বর জ এফ ৩৫
এছাড়াও পড়ুন:
খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না সৌদি যুবরাজ : ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে ‘কিছুই জানতেন না’। গতকাল মঙ্গলবার তিনি ওয়াশিংটনে যুবরাজকে স্বাগত জানিয়ে এ মন্তব্য করেন।
ট্রাম্পের বক্তব্য ২০২১ সালে প্রকাশিত মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, যুবরাজ খাশোগিকে ‘গ্রেপ্তার বা হত্যা’ করার পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছিলেন।
যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, সৌদি আরব খাশোগি হত্যাকাণ্ড ঠিকঠাক তদন্ত করেছে।
এর আগে খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে ওয়াশিংটন ও রিয়াদের সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছিল।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, খাশোগির হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে যুবরাজ কিছুই জানতেন না। আমাদের অতিথিকে বিব্রত করার দরকার নেই।
এ প্রসঙ্গে যুবরাজ বলেন, হত্যাকাণ্ডটি ‘বেদনাদায়ক’ ও ‘বড় ভুল’, তবে সৌদি আরব যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে।
২০২১ সালের মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সৌদি আরব সেটিকে নেতিবাচক, মিথ্যা ও অগ্রহণযোগ্য বলে প্রত্যাখ্যান করে। যুক্তরাষ্ট্র ওই সময় কয়েকজন সৌদি কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। তবে যুবরাজের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
গতকাল মঙ্গলবার যুবরাজের সঙ্গে সাক্ষাতে ট্রাম্প পারমাণবিক সহযোগিতা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করেন। যুবরাজ জানান, যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি বিনিয়োগ ৬০০ বিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার করা হচ্ছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কিনবে সৌদি আরব।
খাশোগির স্ত্রী হানান এলাত্র এক্স–এ যুবরাজের কাছে প্রকাশ্য ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
ইসরায়েলের উদ্বেগ সত্ত্বেও সৌদি–মার্কিন এফ–৩৫ চুক্তির ইঙ্গিত ট্রাম্পের
ট্রাম্প বলেছেন, রপ্তানি লাইসেন্স এখনো ঘোষণা করা হলেও তিনি আশা করছেন যে সৌদি আরব ও মার্কিন প্রতিরক্ষা শিল্প–জায়ান্ট লকহিড মার্টিনের মধ্যে একটি চুক্তি হবে।
মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সামরিক আধিক্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে—এমন আশঙ্কায় ইসরায়েলের কিছু কর্মকর্তার মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। মধ্যপ্রাচ্যে এখনো একমাত্র দেশ হিসেবে ইসরায়েলই এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান পরিচালনা করছে।
ট্রাম্প বলেন, সৌদিদের জন্য যে মডেলটি বিক্রি করা হবে, তা মোটামুটি ইসরায়েলের ব্যবহৃত সংস্করণের মতোই হবে। তিনি বলেন, “সৌদি আরব আমাদের বড় মিত্র, আর ইসরায়েলও বড় মিত্র। আমি জানি, ইসরায়েল চাইবে আপনাদের কম সক্ষমতার বিমান দেওয়া হোক।”