Risingbd:
2025-11-19@05:18:14 GMT

মরণফাঁদের নাম বগির খাল ব্রিজ 

Published: 19th, November 2025 GMT

মরণফাঁদের নাম বগির খাল ব্রিজ 

নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলার লুনেশ্বর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে অবস্থিত বগির খাল ব্রিজটি এখন মানুষের কাছে আতংকের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটির দুই পাশ ভেঙে যাওয়ায় এটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ব্রিজটির অবস্থা এতটাই খারাপ যে ছোট একটি ভুল ডেকে আনছে বড় বিপদ।

উপজেলার খিলা গ্রাম থেকে অতিতপুর হয়ে মোহনগঞ্জ যাওয়ার অন্যতম প্রধান সড়ক হওয়ায় প্রতিদিন এই পথ দিয়ে প্রায় দুই হাজার মানুষ চলাচল করেন। অটোরিকশা ও পিকআপ ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন এই পথে চলাচল করে। বর্তমানে ব্রিজটি নীরব আতংক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আরো পড়ুন:

পদ্মা সেতু ও এক্সপ্রেসওয়েতে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা

‘পদ্মা বাঁচাও’ গণসামবেশে ১৫ নভেম্বর, যোগ দেবেন ফখরুল

এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত বছর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের (ডিডিএম) টিআর প্রকল্পের আওতায় ব্রিজটি সংস্কারের জন্য ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেই টাকা দিয়ে অপরিকল্পিত কাজ করার কারণে সমস্যা আরো তীব্র হয়েছে। পূর্ণ গাইড ওয়াল নির্মাণ না হওয়া এবং অমনোযোগী কাজের কারণে এই বছরের বর্ষায় ব্রিজের রাস্তায় ভাঙন আরো বেড়েছে।

বামুন্দি গ্রামের অটোরিকশা চালক নুরুল আমিন বলেন, ‘‘আমাদের এই ব্রিজটা আগেই ভালো ছিল। নতুন করে কাজ করার পর আমাদের দুর্দশা আরো বেড়েছে। রাস্তায় ভাঙন বেড়েছে। এই অবস্থায় যাতায়াত করা অনেকটাই বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। ব্রিজটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ছোট একটি ভুল বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনছে।” 

খিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোসাবির বলেন, ‘‘আমাদের এই ব্রিজের অবস্থা এখন খুবই খারাপ। প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। আমাদের দাবি, সরকার যেন এখানে নতুন করে ব্রিজ নির্মাণ করে।”

লুনেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শেখ আবেদ আলী বলেন, ‘‘আমরা এলজিইডিকে জানিয়েছি। আশা করি, তারা এই সমস্যা দ্রুত সমাধানে কাজ করবে। টিআর প্রকল্পের ৫ লাখ টাকায় কাজ হয়েছে। আমি নিজে আরো ১২ হাজার টাকা খরচ করেছি। অতিরিক্ত বৃষ্টি সমস্যা সমাধানে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’

এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী আল মুতাসিম বিল্লাহ বলেন, ‘‘সমস্যার সমাধানে বড় বাজেটের প্রয়োজন। আমরা এ ব্যাপারে সদর দপ্তরে প্রাক্কলন প্রেরণ করেছি। বাজেট পেলে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো.

শাহ্‌ নূর রহমান বলেন, “ব্রিজটিকে চলাচলের উপযোগী করতে প্রাথমিক সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা ইতোমধ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। স্থায়ী সমাধানের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।”  

ঢাকা/ইবাদ/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব র জট আম দ র উপজ ল অবস থ সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধ সড়ক যেন মরণফাঁদ

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ৬৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সড়কটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অনেক গর্ত। এসব গর্তের পাশ দিয়ে প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন পথচারী ও যানবাহন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের দাবি জানানো হলেও সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধের দুই পাশে জায়গায় জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও সড়কের পিচ উঠে গেছে, কোথাও আবার গর্তের গভীরতা এত বেশি যে, ছোট যানবাহন উল্টে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে দুর্ঘটনায় কলেজছাত্রের মৃত্যু, ট্রাকে আগুন

সিলেটে বাস-প্রাইভেটকার সংঘর্ষ, বাবা-মেয়ে নিহত

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের হলেও, এর ওপরে নির্মিত পাকা সড়কটি সওজ বিভাগের আওতাধীন। এ সড়কটি ব্যবহার করে মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও ঢাকা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর যানবাহন চলাচল করে।

স্থানীয় অটোরিকশা চালক রোবেল হোসেন বলেন, ‍“নির্মাণের দুই-তিন বছর যেতে না যেতেই সড়কের দুই পাশে অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখন প্রতিদিন গাড়ি চালাতে হচ্ছে ঝুঁকি নিয়ে। একটু অসাবধান হলেই ঘটবে দুর্ঘটনা।”

মোটরসাইকেল চালক আনোয়ার হোসেন বলেন, “দিনে কোনোভাবে পার হওয়া যায়, কিন্তু রাতের পরিস্থিতি থাকে ভয়ঙ্কর। কারণ, অনেক সময় দূর থেকে গর্ত দেখা যায় না। এই সড়কে খুব ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়।” 

পিকআপ ভ্যানের চালক আব্দুর রহমান বলেন, “কয়েক বছর না যেতেই রাস্তা গর্তে ভরে গেছে। রাতের বেলায় গর্তগুলো বোঝা যায় না, তাই সব সময় আতঙ্ক নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়।”

কলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বলেন, “বেড়িবাঁধ সড়কটি এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি। এখন গর্তের কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দ্রুত মেরামতের জন্য আমরা একাধিকবার জানিয়েছি।”

মতলব উত্তর প্রেস ক্লাবের সভাপতি বোরহান উদ্দিন ডালিম বলেন, “এই বেড়িবাঁধ শুধু মতলব নয়, পুরো অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের প্রধান সড়ক। তাই সওজ বিভাগের উদাসীনতা জনজীবনে ঝুঁকি তৈরি করছে। বর্ষার আগেই এই সড়কটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার জরুরি।”

চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অতিবৃষ্টির কারণে গর্ত তৈরি হয়েছে। আমরা সড়কটি মেরামতের ব্যবস্থা নিয়েছি।”

উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, মতলব ব্রিজ থেকে বেড়িবাঁধের পূর্ব অংশে সংস্কার কাজের জন্য টেন্ডার করা হয়েছে। পশ্চিম অংশ এখনও ঠিকাদারের দায়িত্বে আছে, তাদেরকেও মেরামতের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (চঃ দাঃ) সেলিম শাহেদ বলেন, “বেড়িবাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের হলেও এর ওপরে থাকা পাকা সড়ক সওজ বিভাগের দায়িত্বে। বেড়িবাঁধের যদি কোথাও ক্ষতি হয়, আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেই; সড়ক সংস্কার কাজ সওজ বিভাগকেই করতে হয়।”

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, “বেড়িবাঁধ সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত দেখা গেছে, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।”

ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধ সড়ক যেন মরণফাঁদ