রাজধানীর দারুস সালামে ৬টি ককটেল উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করল পুলিশ
Published: 18th, November 2025 GMT
রাজধানীর দারুস সালাম এলাকা থেকে ছয়টি ককটেল উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দারুস সালাম থানা এলাকার একটি বাসা থেকে ছয়টি ককটেল উদ্ধার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের বোম্ব ডিসপোজাল বিভাগ।
পরে জননিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বেলা আড়াইটার দিকে দারুস সালামের গোলারটেক মাঠে ককটেলগুলো নিরাপদে নিষ্ক্রিয় করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ককট ল
এছাড়াও পড়ুন:
লালদিয়ার পর এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে নিউমুরিং টার্মিনাল
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বা এনসিটি বিদেশি কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিচ্ছে সরকার। আগামী ডিসেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোম্পানি ডিপিওয়ার্ল্ডের সঙ্গে চুক্তির জন্য কাজ এগিয়ে নিচ্ছে।
এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ১৬ নভেম্বর প্রকল্পের দরপত্র মূল্যায়নের জন্য ৭ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে এই কমিটির অনুমোদনের জন্য চিঠি দেন বন্দরসচিব মো. ওমর ফারুক। প্রস্তাবিত কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে বন্দর পর্ষদের সদস্য অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব আলম তালুকদারকে।
গত সোমবার লালদিয়ার চরে টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য ঢাকার একটি হোটেলে ডেনমার্কের মায়ের্সক গ্রুপের এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে চুক্তি করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য ডেনমার্কের কোম্পানির সঙ্গে ৩৩ বছরের জন্য কনসেশন চুক্তি হয়। একই দিন বিকেলে বুড়িগঙ্গার তীরে পানগাঁও নৌ টার্মিনাল ২২ বছর পরিচালনার জন্য সুইজারল্যান্ডের মেডলগ এসএ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয় বন্দরের।
এদিকে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি–সম্পর্কিত প্রক্রিয়ার প্রশ্নে রুল শুনানি আজ বুধবার হওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন চলতি বছর রিট করেন।
আদালতে বিচার চলমান অবস্থায় বন্দর কর্তৃপক্ষ নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানান রিট আবেদনকারীর আইনজীবী। রিটকারীর আইনজীবী মো. আনোয়ার হোসেন মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘রিট শুনানির জন্য অপেক্ষামাণ। আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় কার্যক্রম গ্রহণ আদালত অবমাননার শামিল।’
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের বৃহৎ এই টার্মিনাল নির্মিত হয় ২০০৭ সালে। টার্মিনালটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে বন্দর কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে মোট ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের সিংহভাগ এই টার্মিনাল দিয়ে পরিবহন হয়। বর্তমানে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনা করছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়ার আগপর্যন্ত চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড এই টার্মিনালটি পরিচালনা করার কথা রয়েছে।
‘লাভজনক টার্মিনালগুলো বিদেশিদের দেওয়া যাবে না’নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ও চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনালসহ (সিসিটি) চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা বিদেশি কোম্পানির কাছে না দেওয়ার দাবিতে মশালমিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছে বন্দর রক্ষা পরিষদ। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরের বড়পোল এলাকায় পোর্ট কানেকটিং সড়কে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এ সময় সাময়িকভাবে যান চলাচল ব্যাহত হয়।
মিছিল–পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মারুফ। বন্দর রক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক আবু সাইদ হারুনের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন শ্রমিক নেতা মো. হুমায়ুন কবীর। বক্তব্য দেন বন্দরের সাবেক সিবিএ নেতা মোজাহের হোসেন, মো. আবুল কালাম প্রমুখ।
আরও পড়ুনচট্টগ্রাম বন্দরের দুই টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্বে বিদেশিরা১৭ নভেম্বর ২০২৫সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মারুফ বলেন, বন্দর উন্নয়নের নাম করে বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত হচ্ছে। দুই দিন আগের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বন্দর আগের চেয়ে ২১ ভাগ বেশি আয় করেছে। যদি দক্ষতা বাড়াতে হয় তাহলে বিদেশি ট্রেইনার আনা যায়। দক্ষতার নামে এ দেশের বন্দর ইজারা দেওয়ার অধিকার নেই। সিসিটি, এনসিটির মতো লাভজনক টার্মিনালগুলো বিদেশিদের দেওয়া যাবে না।
প্রধান বক্তা মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি টার্মিনাল থেকে বর্তমানে প্রতি একক কনটেইনারে বন্দর প্রায় ১৬৫ ডলার আয় করে। যার মধ্যে অপারেটর খরচ ও অন্যান্য ব্যয় বাদে আয় থাকে প্রায় ১১৫ ডলার। যদি ডিপি ওয়ার্ল্ড টার্মিনালটি পরিচালনা করে এবং বাংলাদেশকে মাত্র ৫০ ডলার দেয়, তাহলে প্রতি এককে তারা দেশে থেকে নিয়ে যাবে প্রায় ৬৫ ডলার। ট্যারিফ বাড়ালে এ পরিমাণ আরও প্রায় দ্বিগুণ হতে পারে, যা দেশের ডলার সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন মহানগর শ্রমিক দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আজিম, বিভাগীয় শ্রমিক দলের যুগ্ম সম্পাদক গাজী আইয়ুব, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু বকর ছিদ্দিকি, বন্দর শ্রমিক দলনেতা শেখ ছানুয়ার মিয়া, আকতার হোসেন, মোস্তফা চৌধুরী, মো. নাছির উদ্দিন, মোশারফ হোসেন, দিদারুল আলম, আনোয়ার হোসেন, গোলাম ছরোয়ার, মিনহাজ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।