প্রাক্তন স্ত্রী দেবশ্রীর সঙ্গে প্রসেনজিৎ জুটি, সঙ্গী ঋতুপর্ণা
Published: 19th, November 2025 GMT
ভারতীয় বাংলা সিনেমার তারকা জুটি প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি ও দেবশ্রী রায়। পর্দায় এ জুটির রোমান্স দেখে মুগ্ধ হয়েছেন অসংখ্য ভক্ত। রুপালি পর্দার রোমান্স ব্যক্তিগত জীবনেও গড়ায়। ভালোবেসে দেবশ্রী রায়কে বিয়ে করেন প্রসেনজিৎ। কিন্তু কয়েক বছর পরই এ বিয়ে ভেঙে যায়। তারপর দুজনের পথ আলাদা হয়ে যায়।
সংসার ভাঙার পাশাপাশি দর্শক হারান রুপালি পর্দার জনপ্রিয় এই জুটিকে। এরপর আর কোনো সিনেমায় একসঙ্গে দেখা যায়নি তাদের। কয়েক মাস আগে দূরত্ব কমিয়ে দেবশ্রীর সঙ্গে সিনেমা করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন প্রসেনজিৎ।
আরো পড়ুন:
মুখোমুখি জিতু-দিতিপ্রিয়া, রুদ্ধদ্বার বৈঠকে সংকট কী কাটল?
গায়িকা থেকে সর্বকনিষ্ঠ বিধায়ক, মৈথিলীকে কতটা জানেন?
এবার টলিপাড়ার সুপারস্টার আনন্দের খবর দিয়ে বললেন, “খুব শিগগির কিছু ঘটতে চলেছে। আমাদের অতি পরিচিত দুই পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখার্জি ও নন্দিতা রায় ‘প্রাক্তন টু’ করতে চান। আমাকে দেবশ্রী রায় এবং ঋতুকে নিয়ে।”
এর আগে ‘আমি যখন হেমা মালিনী’ সিনেমার প্রচারে চিরঞ্জিত চক্রবর্তী বলেছিলেন—“দেব-শুভশ্রী জুটির পর আমি চাই আবার প্রসেনজিৎ-দেবশ্রী জুটি ফিরুক, এই জুটিটা ফেরার অত্যন্ত প্রয়োজন।” ‘দেবী চৌধুরানী’ সিনেমার প্রচারে চিরঞ্জিতের এই বক্তব্য প্রসেনজিৎকে জানানো হয়।
এ বিষয়ে প্রসেনজিৎ বলেছিলেন, “আমি তো চাই দীপকদা একটা স্ক্রিপ্ট লিখুক আমাদের জন্য, আমার বহুদিনের ইচ্ছা ছিল এবং আমি অনেকবার দীপকদাকে বলেছি যে, আমি তোমার পরিচালনায় একটা কাজ করতে চাই। দীপকদা, আমাদের জন্য যদি পরিচালনা করেন তাহলে অবশ্যই আমি সিনেমা করতে চাই। আর আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে দেবশ্রীর সঙ্গে আবারো একটা পরিণত প্রেমের সিনেমা করতে চাই।”
তাহলে কী পুরোনো তিক্ততা ভুলে গেছেন প্রসেনজিৎ? জবাবে এই নায়ক বলেছিলেন, “আমার কারো সঙ্গে কোনো তিক্ততা নেই। যে আমার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলবে, আমি সব সময় তাদের জন্য আছি। আর কোনো তিক্ততা নিয়ে বাঁচতে চাই না, যে কটা দিন আছি সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক নিয়েই থাকতে চাই।”
এক সময় দেবশ্রীকে নিয়ে কথা বলতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ বোধ করতেন না প্রসেনজিৎ। তবে অভিমান ভুলে কাজের ক্ষেত্রে আবার এক হওয়ার কথা বললেন তিনি। বর্তমানকে ভালোবেসে যেমন এগিয়ে যান, ঠিক তেমনই কি অতীতকেও আঁকড়ে বাঁচেন?
এ প্রশ্নের জবাবে প্রসেনজিৎ বলেছিলেন, “নিজের অতীতকে কখনো উপেক্ষা করা যায় না। মাঝেমাঝেই আমি আমার অতীতে ফিরে যাই; সেই সময়গুলোর জন্যই আজকের আমি। অতীত আমাকে অনেক ভালোবাসা, রাগ-দুঃখ-ক্ষোভ দিয়েছে। আমার ক্ষেত্রে যেটা অল্প কিন্তু তবু আছে সেটা হলো—ঘৃণা। সেটাও পেয়েছি, তবে অতীত যেমনই হোক না কেন, তাকে কখনো ফেলে দেওয়া যায় না। আমরা সবাই মাঝে মাঝে অতীতে ফিরে যাই।”
সময়ের সঙ্গে অনেক কিছু বদলে গেছে। বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতেও দ্বিধাবোধ করেন না প্রসেনজিৎ। তার ভাষায়—“এই বদলগুলোকে মেনে না নিলে আমাকে পিছিয়ে পড়তে হবে। আমি প্রচুর বদল দেখেছি, তবে যেই সময় যেটা এসেছে, তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছি, এটাই তো করা উচিত। না হলে বর্তমান প্রজন্ম থেকে দূরে সরে যেতে হবে।”
দেবশ্রী-প্রসেনজিৎ অনেক ছোটবেলা থেকে একে অপরকে চিনতেন। ১৯৯২ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়েন দেবশ্রী-প্রসেনজিৎ। ১৯৯৫ সালে এ সংসার ভেঙে যায়। ১৯৯৭ সালে অপর্ণা গুহ ঠাকুরতার সঙ্গে ঘর বাঁধেন প্রসেনেজিৎ। কিন্তু এই বিয়েও ভেঙে যায়। বর্তমানে অর্পিতাকে বিয়ে করে সুখে সংসার করছেন এই নায়ক।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ন প রস ন বল ছ ল ন দ র জন র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
অনেক অগ্রগতি, তবে কিছু জটিলতাও আছে
সংশোধিত শ্রম আইনে অনেক অগ্রগতি আছে। শ্রমিকের সংজ্ঞা পরিবর্তন করে পরিধি বাড়ানো হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শ্রমিকের সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এত দিন মধ্যম সারির কর্মীদের কোনো সুরক্ষা ছিল না। এ ছাড়া সংশোধিত আইনে গৃহশ্রমিকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যদিও তাঁদের পরিপূর্ণ সুরক্ষা দেওয়া হয়নি। তবে ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগ পাবেন তাঁরা।
এ ছাড়া ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন আবেদন সহজ করা হয়েছে। কত জন শ্রমিকের সম্মতি লাগবে, সেটি সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। দর–কষাকষিতে ফেডারেশনগুলোর ভূমিকা আরও স্পষ্ট করা হয়েছে। শ্রমিকদের জন্য ভবিষ্য তহবিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একটি জাতীয় সামাজিক সংলাপ ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি কর্তৃপক্ষ করার কথা বলা হয়েছে। এগুলো ইতিবাচক অগ্রগতি।
সংশোধনের পর কিছু ঘাটতি ও জটিলতা রয়ে গেছে। যেমন গৃহশ্রমিককে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকেরা এখনো আইনি সুরক্ষার বাইরে রয়ে গেছেন। ব্যক্তিগত গাড়িচালক, আউটসোর্সিংকর্মী, দৈনিক ভিত্তিক কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা ও দর–কষাকষির জন্য সংগঠন করার অধিকার দেওয়া এখন সময়ের দাবি হয়ে পড়েছে।
এখন থেকে ন্যূনতম ২০ জন শ্রমিকের সম্মতিতে ইউনিয়ন নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা যাবে। এটি বড় কারখানাগুলোতে সুফল দিলেও ছোট কারখানার ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি করবে। কোনো কারখানায় ৫০ জন শ্রমিক থাকলে কমপক্ষে ২০ জন, অর্থাৎ ৪০ শতাংশ শ্রমিকের সম্মতি লাগবে। কারখানার মোট শ্রমিক সংখ্যা ৩০ হলে ৬০ শতাংশ শ্রমিকের সম্মতি লাগবে। যেহেতু দেশের অধিকাংশ কারখানা ছোট, সে কারণে এই জটিলতায় শ্রমিকের সুরক্ষা বিঘ্নিত হবে।
একটি কারখানায় পাঁচটি ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগ প্রতিষ্ঠানে সমস্যা সৃষ্ট করবে না যদি সেখানে সংগঠন করার উপযুক্ত পরিবেশ থাকে। একটি ইউনিয়ন যদি কার্যকর হয়, তাহলে আর ইউনিয়ন হবে না। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। কেউ যেন ইউনিয়ন করার প্রতিযোগিতায় না নামে, সেটি তদারকি করতে হবে।
জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের কোনো নির্দেশনা সংশোধিত শ্রম আইনে নেই। এটা বর্তমান প্রেক্ষাপটে খুবই প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তায় আরও কড়াকড়ি দরকার ছিল। সব মিলিয়ে বললে, আমরা এক ধাপ এগিয়েছি। আরও এগোতে হবে। তার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
সৈয়দ সুলতান উদ্দীন আহমেদ, সাবেক শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান