লতা মঙ্গেশকর বলেছিলেন, ‘আমার দেখা সেরা শিক্ষিত কম্পোজার’
Published: 19th, November 2025 GMT
আমরা চার বন্ধু—তাপস, টিপু, বিপুল আর আমি; কলকাতা শহরের হৃদয়ের দিকে হাঁটছিলাম। বছর তখন ১৯৮৯। আমরা তখন ২৩–২৪ বছরের তরুণ, স্বপ্নের উত্তাপে টগবগে। জীবনের প্রথম বিদেশযাত্রা, প্রথম কলকাতা সফর, আবার প্রথমবার দেখা হতে চলেছে এমন এক কিংবদন্তির সঙ্গে, যাঁর নাম শুনলেই এক সংগীত মহাবিশ্বের দরজা খুলে যায়।
অসংখ্য পরিকল্পনার মধ্যে অন্যতম ছিল—পূর্ববর্তী বছর (১৯৮৮) সপরিবার বাংলাদেশে আসা অন্তরা চৌধুরী আর তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করা। তাপসের এক অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল—যাকে সে চাইত, তাকেই মন দিয়ে ফেলতে পারত। অন্তরাও বাংলাদেশ সফরের দিনগুলোতে আমাদের বন্ধু হয়ে গিয়েছিল।
গান, গণসংগীত, আইপিটিএ, আন্দোলনের সুর—এসব শুনতে শুনতেই আমাদের কৈশোর-যৌবন কেটেছে। আর সেই সুরের কারিগরকে সামনে থেকে দেখা, এ যেন জীবনের অমোঘ এক মহালগ্ন।
প্রথম বিদেশযাত্রার উত্তেজনা আর সেই মাহেন্দ্রক্ষণ
সেবার কলকাতায় পৌঁছে আমরা থেমে থাকিনি। প্রথমেই ফোন করলাম সলিল চৌধুরীর বাসায়। অন্তরা চৌধুরী ছিলেন সেতুবন্ধ। সময় নির্ধারিত হলো। এরপরই শুরু হলো দুরু দুরু বুকের কাঁপন।
কলকাতার এক অভিজাত এলাকা ‘আকাশ দ্বীপ’-এর লিফট বেয়ে আমরা উঠে গেলাম ১০/১২ তলার দিকে। শব্দহীন লিফটও যেন কাঁপছিল আমাদের হৃৎস্পন্দনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। কলিং বেল টিপতেই দরজা খুলে গেল। সামনে দাঁড়িয়ে অন্তরা আর সঞ্চারী। যেন বহুদিনের চেনা কেউ।
মুহূর্তেই ঢুকে এলেন সংগীতের বরপুত্র—সলিল চৌধুরী। আমরা স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে। তাঁর হাসিমুখ, কোমল চোখের দৃষ্টি, অথচ গভীরে এক বুদ্ধিজ্যোতির দীপ্তি। আমাদের অভ্যর্থনা করে তিনি নিয়ে গেলেন ড্রয়িংরুমে, যেখানে নরম উঁচু ফরাশ পাতা, ছোট গোল বালিশ, যেন শিল্পীর গানের মতোই পরিচ্ছন্ন, পরিমিতি।
আমাদের বলা হয়েছিল—তিনি এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় দেবেন। এই দেড় ঘণ্টা পরিণত হলো জীবনের সেরা কিছু মুহূর্তে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে বড় পরিবর্তন, এআইসহ যুক্ত হয়েছে নানা সুবিধা
ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে মেটা। প্ল্যাটফর্মটিকে আরও ব্যবহারবান্ধব করতে কোলাবোরেশন বায়িং বা কেনাকাটা, নতুন সোশ্যাল ফিচার, উন্নত চেকআউট–সুবিধা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) নানা সুবিধা যুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
নতুন সংযোজনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো কালেকশনস নামের ফিচার। এতে ব্যবহারকারীরা পছন্দের পণ্যের আলাদা তালিকা তৈরি করতে পারবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী তালিকাটি পাবলিক বা ব্যক্তিগতভাবে নির্ধারণ করা যাবে। তালিকা সংরক্ষণের পর এতে বন্ধু যোগ করার সুযোগও থাকছে। ব্যবহারকারীরা চাইলে ফিড, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে সংগ্রহের হালনাগাদ তথ্য শেয়ার করতে পারবেন।
মেটা জানায়, তারা পরীক্ষামূলকভাবে ‘কোলাবোরেটিভ বায়িং’–সুবিধা চালু করেছে। এ সুবিধায় ক্রেতারা চাইলে বিক্রেতার সঙ্গে চলমান চ্যাটে কোনো বন্ধুকে যুক্ত করতে পারবেন। এতে দরদাম, পণ্য সংগ্রহের সময় নির্ধারণ বা অন্য কোনো প্রশ্নে একসঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে। নতুন বাসার আসবাব কেনার মতো যৌথ সিদ্ধান্তে এ ফিচারের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হতে পারে।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ঘোষণা করা এসব পরিবর্তন মার্কেটপ্লেসকে আরও কার্যকর করতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি মেটার সামগ্রিক লক্ষ্য, নিজেদের সব পণ্য ও সেবায় এআই প্রযুক্তি সংযুক্ত করা। সামাজিক যোগাযোগ, অনলাইন কেনাবেচা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে একত্র করে প্ল্যাটফর্মে ব্যবহারকারীর সময় বাড়ানো ও প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান শক্তিশালী করাই মূল লক্ষ্য। নতুন যুক্ত সুবিধায় ক্রেতারা এখন চ্যাটে ‘সাজেস্টেড কোয়েশ্চন টু আস্ক’ নামের বাটন দেখতে পাবেন। সেখানে চাপ দিলে তালিকায় থাকা তথ্য ও আগের কথোপকথনের ভিত্তিতে এআই সম্ভাব্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বলে দেবে।
যানবাহনসংক্রান্ত তালিকায় যুক্ত হয়েছে এআই দিয়ে তৈরি সারসংক্ষেপ। মেটা জানায়, তরুণ ব্যবহারকারীদের অনুসন্ধানে যানবাহন অন্যতম শীর্ষ বিভাগ হওয়ায় এ ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এখন কোনো গাড়ির তালিকা খুললে ইঞ্জিনের ধরন, সুরক্ষার বৈশিষ্ট্য, গিয়ার ব্যবস্থা, আসন ও মালামাল ধারণক্ষমতা, রিভিউ ও দাম এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংক্ষেপে একসঙ্গে দেখা যাবে। মার্কেটপ্লেসে এবার থেকে পণ্যের তালিকায় সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানানোর ও মন্তব্য করার সুযোগও থাকছে। এতে পণ্যের মান সম্পর্কে অন্য ব্যবহারকারীরা ধারণা পাবেন এবং নতুন তালিকা খুঁজে পাওয়া সহজ হবে বলে মনে করে মেটা। তবে দীর্ঘদিনের সাধারণ নকশার প্ল্যাটফর্মে এ ধরনের সোশ্যাল ফিচার যোগ হওয়ায় কেউ কেউ এটিকে বাড়তি হিসেবে দেখতে পারেন। মেটা বলছে, ব্যবহারকারী যখন কোনো পণ্যে আগ্রহ দেখাবেন, প্ল্যাটফর্ম তাঁদের পছন্দ বিশ্লেষণ করে একই ধরনের আরও পণ্যের তালিকা দেখাতে শুরু করবে।
চলতি বছরের শুরুতে ইবে ও পস্মার্কের তালিকা মার্কেটপ্লেসে যুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মেটা। ফলে ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকসসহ বিভিন্ন বিভাগে পণ্যের পরিসর বেড়েছে। অংশীদারদের তালিকায় বিশেষ একটি আইকন থাকবে এবং ব্যবহারকারীরা তা স্বাভাবিকভাবেই মার্কেটপ্লেস ফিডে দেখতে পারবেন। পণ্যের বিবরণ পেজে বিক্রেতার তথ্যও জানা যাবে। আর কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ক্রেতাকে অংশীদার প্ল্যাটফর্মের সাইটে নিয়ে যাওয়া হবে। চেকআউটের প্রক্রিয়ায়ও পরিবর্তন এসেছে। এখন ক্রেতারা শুরুতেই মোট খরচ, শিপিং খরচ, করসহ প্রয়োজনীয় তথ্য দেখতে পাবেন। অর্ডারের অবস্থা পরিবর্তিত হলে তাঁরাও তাৎক্ষণিক নোটিফিকেশন পাবেন।
সূত্র: টেকক্রাঞ্চ