শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর বরিশালের বাবুগঞ্জে মিষ্টি বিতরণ অনুষ্ঠানে খুন হওয়া ছাত্রদল নেতা রবিউল ইসলামের (৩০) মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে দাফন করা হয়েছে। স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রদলের দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে তিনি খুন হন।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের আগরপুর বিদ্যালয়ের সামনে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। জানাজায় উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। নিহত রবিউল জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি আগরপুর গ্রামের কুয়েতপ্রবাসী মিজানুর রহমানের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গতকাল সোমবার শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়কে স্বাগত জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে একটি পক্ষ গতকাল সন্ধ্যায় মিষ্টি বিতরণ করছিল। তখন ছাত্রদলের আরেক পক্ষের কয়েকজন এসে তাঁদের না জানিয়ে মিষ্টি বিতরণ করার বিষয়ে কৈফিয়ত তলব করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে সংঘর্ষ হয়।

সংঘর্ষে উভয় পক্ষের আটজন আহত হন। এ সময় রবিউল ইসলামকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর জখম করা হয়। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

উপজেলা ছাত্রদলের একটি সূত্র জানায়, মাস তিনেক আগে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। মাসখানেক পর সেই কমিটি স্থগিত করে জেলা ছাত্রদল। এর পর থেকেই ইউনিয়নে ছাত্রদলের দুটি পক্ষ আলাদা আলাদা কর্মসূচি করে আসছিল। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এক পক্ষে ছিলেন নিহত সহসভাপতি রবিউল ইসলাম এবং অপর পক্ষে ছিলেন স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাবিদ হাসান, আগরপুর কলেজের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী এমদাদুল হকসহ অন্যরা। মূলত তাঁরা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই দ্বন্দ্বে জড়ান।

উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি আতিক আল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমরা চাই, এই ঘটনায় যাঁরা প্রকৃত দোষী, তাঁদের আইনের আওতায় আনা হোক। নির্দোষ কোনো ব্যক্তিকে যাতে হয়রানি করা না হয়।’ তিনি স্বীকার করেন, ইউনিয়নে ছাত্রদলের দুটি পক্ষ আলাদা আলাদা কর্মসূচি করছিল। মূলত নেতৃত্ব ও আধিপত্যের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে।

আরও পড়ুনবরিশালে মিষ্টি বিতরণ অনুষ্ঠানে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল নেতা নিহত১৭ নভেম্বর ২০২৫

বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সুলতান আহমেদ খান সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অনাহূত কাউকে হয়রানি করার জন্য মামলায় না জড়ানোর পক্ষে। আমরা পুলিশ প্রশাসনের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যপ্রমাণ ও অন্যান্য সবকিছু যাচাই করে যাঁরা জড়িত, তাঁদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এ জন্য সব ধরনের সহযোগিতা আমরা করতে প্রস্তুত।’

বাবুগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) পলাশ সরকার বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবে পরিবার মামলা করবে বলে বলে জানিয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ছ ত রদল ছ ত রদল র দ বন দ ব বর শ ল উপজ ল ব তরণ

এছাড়াও পড়ুন:

নেত্রকোনায় সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

নেত্রকোনায় সাংবাদিক লুৎফুজ্জামান আলিফের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় জেলা প্রেসক্লাবের সামনে নেত্রকোনা সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

জেলা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ও চ্যানেল আইয়ের প্রতিনিধি জাহিদ হাসানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী, জেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সাধারণ সম্পাদক নাজমুস শাহাদৎ, জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের জেলা কমিটির সভাপতি পারভেজ, হামলার শিকার লুৎফুজ্জামান আলিফ প্রমুখ।

লুৎফুজ্জামান আলিফ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল রূপসী বাংলার নেত্রকোনা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১০ নভেম্বর দুপুরে লুৎফুজ্জামান আলিফ ও তাঁর সহকর্মী শাহজাহান শেখ জেলার দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদী পার হয়ে একটি ভাড়া মোটরসাইকেলে নদীর তেরিবাজার ঘাটে নামেন। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে করে চারজন ব্যক্তি সেখানে যান। তাঁদের মধ্যে দুজন চাপাতি হাতে লুৎফুজ্জামানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। সঙ্গে থাকা শাহজাহান শেখ বাধা দিতে গেলে তাঁকেও কোপানোর চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয় লোকজন লুৎফুজ্জামানকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি পরে ঢাকায় চিকিৎসা শেষে গতকাল বাড়ি ফেরেন।

এ ঘটনায় লুৎফুজ্জামান বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় মামলা করেছেন। এতে দুর্গাপুর পৌরশহরের পশ্চিম মোক্তারপাড়া এলাকার ইমরান ইসলাম ওরফে ইমন (২৩) ও পুলিশ মোড় এলাকার মো. সৌরভের (২৩) নামোল্লেখ করে এবং আরও চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বরিশালে মিষ্টি বিতরণ অনুষ্ঠানে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল নেতা নিহত
  • নেত্রকোনায় সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন