শেখ রেহানার মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ, আত্মপক্ষ সমর্থন ২৩ নভেম্বর
Published: 18th, November 2025 GMT
গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে রাজউকের প্লট বরাদ্দ পেতে দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।
ঢাকার-৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. রবিউল আলমের আদালতে আজ মঙ্গলবার মামলার তদন্ত কমকর্তাকে জেরার মধ্য দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়াকে জেরা করেন খুরশীদ আলমের আইনজীবী শাহীনুর ইসলাম। খুরশীদ আলম এ মামলায় একমাত্র গ্রেপ্তার আসামি।
দুদকের প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম জানান, এ মামলায় মোট ৩২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালত ২৩ নভেম্বর আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য তারিখ ধার্য করেন।
অন্যদিকে এই আদালতে শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক (ববি) ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগে করা মামলার বিচার চলছে। রাদওয়ানের মামলায় ২৩ নভেম্বর ও আজমিনার মামলায় ২৫ নভেম্বর তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য রয়েছে।
আজ শুনানিকালে গ্রেপ্তার একমাত্র আসামি রাজউকের সদস্য খুরশীদ আলমকে কারাগারে থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তাঁর উপস্থিতিতে তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করা হয়।
গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। সেদিন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন জানিয়েছিলেন, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর সড়কের আশপাশের এলাকায় শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ, সায়মা ওয়াজেদ, শেখ রেহানা ও তাঁর ছেলে–মেয়ের নামে ১০ কাঠা করে ৬০ কাঠার ৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে আলাদা ছয়টি মামলা করে দুদক। এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অন্য মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়। সব কটি মামলায় গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকার সময় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তাঁরা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হলেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রাস্তার ৬টি প্লট তাঁদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
গত ৩১ জুলাই এই তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। এসব মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আসামি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ক ষ য গ রহণ বর দ দ তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইলে বাসে আগুনে: চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকায় তরুণীর মৃত্যু
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত অবস্থায় যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দগ্ধ এক তরুণী ছয় দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা গেছেন। তাঁর নাম মীম (২২)। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
১২ নভেম্বর দিবাগত রাত একটার দিকে ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাঐখোলা এলাকায় চলন্ত অবস্থায় যাত্রীবাহী ওই বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তখন পুলিশ জানিয়েছিল, এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
আজ মঙ্গলবার রাতে টাঙ্গাইলের বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালালউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর তাঁরা জানতেন না কেউ আহত হয়েছেন। ঘটনার পরপর সব যাত্রী চলে যান। দুই দিন পর জানতে পারেন মীম নামের একজন আহত হয়েছেন। তিনি পাবনার বেড়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রথমে চিকিৎসা নেন। পরে ঢাকায় জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নেন।
আগুনের ঘটনায় ১৩ নভেম্বর গোড়াই হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
নিহত মীমের স্বামী মোহাম্মদ আলী জানান, তাঁরা ঢাকার তুরাগ এলাকায় থাকেন। মীমের দাদার মৃত্যুর খবর পেয়ে ১২ নভেম্বর রাতে তাঁরা পাবনার বেড়া উপজেলায় যাচ্ছিলেন। তাঁদের বাস টাঙ্গাইলের বাসাইল এলাকায় আসার পর বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুনে তিনি সামান্য দগ্ধ হলেও মীমের শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রথমে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মীমকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুনটাঙ্গাইলে গভীর রাতে যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে আগুন১৩ নভেম্বর ২০২৫শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মারুফা লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেলের মর্গে পাঠান। বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনেরা মৃতদেহ গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে নিয়ে যান। মীমের বাড়ি পাবনার বেড়া উপজেলার চর প্যাচাকোলা গ্রামে।
মীমের চাচা সাইদুল ইসলাম বলেন, গত তিন মাস আগে মীমের বিয়ে হয়। তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে ডিপ্লোমা কোর্স করছিলেন।