পদ স্থগিত হওয়া আলোচিত বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের নির্বাচনী আসনে (কিশোরগঞ্জ-৪) দলের মনোনয়ন চান আরেক ফজলুর রহমান। শনিবার দুপুরে জেলা শহরের পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে মো. ফজলুর রহমান শিকদার এ ঘোষণা দেন।

ফজলুর রহমান শিকদার জেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও মিঠামইন উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ছিলেন।

দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাওর-অধ্যুষিত ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলা নিয়ে কিশোরগঞ্জ-৪ আসন গঠিত। এ আসনে ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে সাবেক রাষ্ট্রপতি মো.

আবদুল হামিদ সংসদ সদস্য হন। তিনি রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে তাঁর বড় ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ (তৌফিক) আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হন। এ ছাড়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ইমদাদুল হক, ১৯৭৯ সালে বিএনপি থেকে ফরহাদ আহমেদ ও ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টি থেকে আবদুল লতিফ ভূঁইয়া সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।

পদ স্থগিত হওয়া নেতা ফজলুর রহমান এ আসনে ১৯৯৬ সালে স্বতন্ত্র হিসেবে, ২০০১ সালে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ থেকে এবং ২০০৮ ও ২০১৮ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচন করে পরাজিত হন। সম্প্রতি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ফজলুর রহমানের প্রাথমিক সদস্য পদসহ দলীয় সব ধরনের পদ তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। এ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্য নেতারা এত দিন নীরব থাকলেও তাঁর পদ স্থগিতের পর প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছেন। আসনটিতে বিএনপি থেকে প্রায় ১০ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

আজ সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে ফজলুর রহমান শিকদার পদ স্থগিত ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরেন। বিএনপির এই মনোনয়নপ্রত্যাশী বলেন, বিগত বছরগুলোতে বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের কারণে তিনিসহ দলের অনেক ত্যাগী নেতা মূল্যায়ন পাননি। কার্যত তাঁদের নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা চাইলেও দলে ভূমিকা রাখতে পারেননি। এই আসনে (কিশোরগঞ্জ-৪) দলের অবস্থা নড়বড়ে হওয়ায় দলীয় অবস্থান শক্ত করতে তিনি প্রার্থী হয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। পদ স্থগিত ফজলুর রহমানের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, ফজলুর রহমান বিএনপিতে যোগ দেওয়ার পর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হন। এরপর একসময় যাঁরা বিএনপির দুর্দিনে দলকে ধরে রেখেছিলেন, তাঁদের অনেককে কোণঠাসা করে দেন তিনি। এমনকি তাঁর পছন্দ না হওয়ায় অনেককে জেলা বিএনপির কোনো পদ-পদবিতে রাখা হয়নি। তিনি স্বৈরতান্ত্রিকভাবে দল চালিয়েছেন।

হাবিবুর রহমান আরও বলেন, ‘ফজলুর রহমান বিএনপিতে যোগদানের পর আমাদের যে অপমান-তিরস্কার করা হয়েছে, সে জন্য তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা চাই, বিএনপির আদর্শ ও উদ্দেশ্যকে ধারণ করে সর্বজনগৃহীত এমন কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হোক, যাঁর দ্বারা হাওরবাসীর কল্যাণ হবে। এ ছাড়া আজ যিনি (ফজলুর রহমান শিকদার) প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন, তাঁকে স্বাগত জানাই।’

জানতে চাইলে পদ স্থগিত বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, যে কেউ প্রার্থিতা ঘোষণা করতে পারেন। এতে তাঁর কিছু যায় আসে না। তিনি তাঁর কাজ করে যাবেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফজল র রহম ন র ব এনপ র ফজল র র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

নেত্রকোণায় চালককে হত্যা করে মোটরসাইকেল ছিনতাই

নেত্রকোণার আটপাড়ায় সোহাগ চৌধুরী (৪৫) নামে এক চালককে হত্যা করে তার মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার সুখাইর ইউনিয়নের বাউসা হাওরে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। সোহাগ মোটরসাইকেলে ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করতেন। 

বুধবার (১৯ নভেম্বর) আটপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশরাফুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

আরো পড়ুন:

পিঁড়ির আঘাতে স্বামীর মৃত্যু, স্ত্রী আটক

‘আউট’ লিখে ভিডিও দেওয়া ছাত্রদল কর্মীকে আসামি করে মামলা 

নিহত সোহাগ জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার মেন্দীপুর গ্রামের মৃত মতিউর রহমান চৌধুরীর ছেলে। তার এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ ছয় সদস্যের সংসার চালাতেন সোহাগ। মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন। রাতে মদন থেকে যাত্রী নিয়ে মোহনগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। আটপাড়া উপজেলার বাউসা হাওরে তাকে হত্যা করে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠায়।

আটপাড়া থানার ওসি মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, “লাশ উদ্ধার করে আজ বুধবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তের পাশাপাশি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা করা হচ্ছে।”

 

ঢাকা/ইবাদ/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ