রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে। পরীক্ষা ২০২৬ সালের ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি উপ-কমিটির মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.

সালেহ্ হাসান নকীব।

আরো পড়ুন:

ফ্লোটিলায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন

রাকসু: নির্বাচনী প্রচারের সময় বাড়ল ১০ দিন

জনসংযোগ প্রশাসক আখতার হোসেন মজুমদার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এবারের ভর্তি পরীক্ষা ‘সি’ ইউনিট (বিজ্ঞান) দিয়ে শুরু হবে। ১৬ জানুয়ারি ‘সি’ ইউনিট (বিজ্ঞান), ১৭ জানুয়ারি ‘এ’ ইউনিট (মানবিক) এবং ২৪ জানুয়ারি ‘বি’ ইউনিটের (বাণিজ্য) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

এ বছরে সিলেকশন থাকবে না। দুই শিফটে পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রথম শিফটের পরীক্ষা সকাল ১১টা থেকে ১২টা এবং দ্বিতীয় শিফটের পরীক্ষা বিকাল ৩টা থেকে ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে।

গতবারের মতো এবারের ভর্তি পরীক্ষাও রাজশাহী, ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রংপুর ও বরিশাল বিভাগে অবস্থিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ বব দ য ল ব শ বব দ য র ভর ত পর ক ষ ইউন ট

এছাড়াও পড়ুন:

নেতানিয়াহুর গাজা দখলের পথে সামান্য বাধা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত সোমবার যে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তার পুরো পটভূমি বিশ্লেষণ করা ছাড়া বোঝা সম্ভব নয়। সেখানে তাঁরা গাজায় গণহত্যা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ২০ দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।

নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের এক সম্মেলনের এক সপ্তাহ পর এ ঘোষণা এসেছে। সেই সম্মেলনে ফ্রান্স ও সৌদি আরবের উদ্যোগে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব ওঠে। একই সময় ইসরায়েলকে ঘিরে আন্তর্জাতিক সমালোচনা ও বর্জনের ঢেউও তীব্র হয়।

এতে ইসরায়েলের ভেতরেও যুদ্ধবিরোধী সমালোচনা বাড়তে শুরু করেছে। কারণ, তারা এখন শুধু সাংস্কৃতিক নয়, অর্থনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ভয় পাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন গাজায় গণহত্যার কারণে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি স্থগিত করার কথা ভাবছে। এটি সেই ভয়কে আরও জোরদার করেছে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রস্তাবটি নেতানিয়াহু বহু মাস আগেই গ্রহণ করতে পারতেন। তাতে হাজার হাজার নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নিহত হতো না, বরং আরও জীবিত বন্দী মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনাও থাকত। কিন্তু তিনি তা করেননি। কারণ, তাঁর লক্ষ্য সব সময় একটাই থেকেছে—গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করা।

এ অবস্থায় নেতানিয়াহু এখন বড় এক সংকটে আছেন। একদিকে তিনি একজন নিও–লিবারেল রাজনীতিক হিসেবে জানেন, ইসরায়েল পশ্চিমা শক্তি ও মুক্তবাজারের ওপর নির্ভরশীল। তাই আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া কতটা ক্ষতিকর, তা তিনি ভালোভাবেই বোঝেন।

অন্যদিকে নেতানিয়াহুর সামনে এসেছে ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে উচ্ছেদ করার এক ‘ঐতিহাসিক সুযোগ’। জায়নবাদী স্বপ্ন বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ইসরায়েলের দক্ষিণপন্থী সমাজের মধ্যে এখন এই ‘সুযোগ’ নেওয়ার বিষয়ে ব্যাপক সমর্থন আছে।

ফলে নেতানিয়াহুর সামনে এখন কঠিন দ্বিধা। তিনি পশ্চিমের সঙ্গে সমঝোতা করে আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকতা ধরে রাখবেন, নাকি দেশের ভেতরের শক্ত পৃষ্ঠপোষক-শিবিরকে সন্তুষ্ট করার জন্য সেই উচ্ছেদমুখী নীতিকে এগিয়ে নেবেন? তিনি দুদিকেই সমানভাবে আগ্রহ ও চাপে আছেন। তাই তাঁকে খুব সাবধানে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। তবে সব মিলিয়ে বিবেচনা করলে দেখা যাবে, ট্রাম্পের ‘২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা’ বাস্তবে নেতানিয়াহুর দীর্ঘদিনের লক্ষ্য, অর্থাৎ গাজাকে ফিলিস্তিনিশূন্য করার পথে খুব বড় কোনো বাধা হবে না।

নেতানিয়াহু জানেন, তাঁর দক্ষিণপন্থী সরকারের স্বপ্ন হলো গাজার সব ফিলিস্তিনিকে তাড়িয়ে দেওয়া এবং এর মাধ্যমে পশ্চিম তীর থেকেও তাদের উচ্ছেদের নজির তৈরি করা। একই সঙ্গে তিনি বুঝতে পারেন, গাজার গণহত্যা নিয়ে ট্রাম্প দেশ-বিদেশে চাপের মুখে আছেন, তাই তাঁকেও কিছু ‘রাজনৈতিক ফলাফল’ দিতে হবে।

এই সপ্তাহে যে ‘২০ দফা পরিকল্পনা’ প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে নতুন কিছু নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক আলোচক ব্রেট ম্যাকগার্কের মতে, এটি মূলত গত জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপের অনুলিপি, যেটি মার্চে ইসরায়েল নিজেই ভেঙে দিয়েছিল।

পার্থক্য শুধু এই যে এবার সেটিকে আরব ও মুসলিম দেশগুলোর সমর্থন দিয়ে মোড়ানো হয়েছে। কিন্তু আরবদের সেই সমর্থন ছিল শর্তসাপেক্ষ। অর্থাৎ শুধু তখনই তারা রাজি, যদি শেষ পর্যন্ত একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়।

ট্রাম্প এবং সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার যে গাজা প্রশাসনের পরিকল্পনা দিয়েছেন, সেটি নাকি অস্থায়ী ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে গাজাকে ধীরে ধীরে পশ্চিম তীরের সঙ্গে একীভূত করার কথা বলা হয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ট্রাম্প যে পরিকল্পনা সাধারণভাবে দেখিয়েছেন, সেটি আগেই আরব ও মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে যে খসড়া আলোচনা করা হয়েছিল, তার সঙ্গে মেলে না। অর্থাৎ পরিকল্পনার প্রকৃত খসড়া এবং ট্রাম্প যা প্রদর্শন করেছেন, দুটির মধ্যে পার্থক্য আছে।

অন্যদিকে ইসরায়েলি জনগণের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নেতানিয়াহু ইচ্ছাকৃতভাবে এ তথ্য গোপন করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, গাজায় না হামাস, না ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ—কেউই শাসন করতে পারবে না।

আগামী বছর ইসরায়েলে নির্বাচন। তাই নেতানিয়াহু এখন সময়কে নিজের অনুকূলে নিতেই ব্যস্ত। এ জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি রাখার জন্য সবকিছু করতে রাজি। এমনকি গত মাসে দোহায় ইসরায়েলি হামলার পর ট্রাম্পের কথামতো তিনি কাতারের প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন, যদিও তাঁর ভোটাররা এটিকে দুর্বলতা হিসেবে দেখছেন।

নেতানিয়াহু বুঝতে পেরেছেন, এখন ইসরায়েলসহ বৈশ্বিক দক্ষিণপন্থীরা মূলধারার সংবাদমাধ্যম নয়, বরং বিকল্প প্ল্যাটফর্ম থেকে খবর নেয়। সেখানে তাঁর অযৌক্তিক বক্তব্যের প্রতিবাদ করার মতো সাংবাদিক কেউ থাকেন না।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রস্তাবটি নেতানিয়াহু বহু মাস আগেই গ্রহণ করতে পারতেন। তাতে হাজার হাজার নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নিহত হতো না, বরং আরও জীবিত বন্দী মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনাও থাকত। কিন্তু তিনি তা করেননি। কারণ, তাঁর লক্ষ্য সব সময় একটাই থেকেছে—গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করা।

আবেদ আবু শাহাদা ফিলিস্তিনি রাজনীতিক

মিডল ইস্ট আই থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনূদিত

সম্পর্কিত নিবন্ধ