১২ অক্টোবর শুরু হচ্ছে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন
Published: 9th, October 2025 GMT
দেশব্যাপী টাইফয়েড নিয়ন্ত্রণে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫ শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
তিনি জানান, মাসব্যাপী ক্যাম্পেইনে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ৫ কোটি শিশুকে বিনামূল্যে একটি করে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে। এক ডোজ টাইফয়েড টিকাই জীবন বাঁচাতে সহায়তা করবে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, “টাইফয়েড জ্বর শিশুদের জন্য এক নীরব ঘাতক। প্রতি বছর শত শত শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে, অনেকে স্থায়ী জটিলতায় ভুগছে। অথচ একটি মাত্র টিকা এই বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে পারে। তাই সরকার আগামী ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনে ৫ কোটি শিশুকে নিরাপদ ও কার্যকর টিকা বিনামূল্যে প্রদান করতে যাচ্ছে।”
দূষিত পানি, খাবার এবং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ এ রোগ বিস্তারে ভূমিকা রাখে জানিয়ে তিনি বলেন, “বিশ্বজুড়ে এই রোগের প্রকোপ বাড়ছে। Global Burden of Disease Study ২০২১ অনুযায়ী, বিশ্বে ৭০ লাখের বেশি মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হন এবং প্রায় ৯৩ হাজার মৃত্যু ঘটে। এছাড়া, বাংলাদেশে ২০২১ সালে টাইফয়েডে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৮ হাজার জনের, যার মধ্যে ৬৮ শতাংশ ছিল ১৫ বছরের নিচের শিশু।”
অধ্যাপক সায়েদুর রহমান আরো বলেন, “টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অনেক অ্যান্টিবায়োটিক এখন আর কাজ করছে না। ওষুধ প্রতিরোধী টাইফয়েড একটি বৈশ্বিক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই টিকাই এখন সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা।”
তিনি বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি (মাদ্রাসা ও ইংরেজি মাধ্যমসহ) শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বিদ্যালয়ে টিকা পাবে। স্কুলবহির্ভূত শিশুদের দেওয়া হবে কমিউনিটি পর্যায়ে ইপিআই টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে। ”
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের (যেমন পথশিশু, বেদে পল্লী, চা বাগান, যৌনপল্লী, এতিমখানা, উন্নয়ন কেন্দ্রের শিশু) জন্য থাকবে বিশেষ টিকাদান ব্যবস্থা।অন্যান্য টাইফয়েড টিকার তুলনায় এটি উন্নততর, অধিক কার্যকর ও নিরাপদ বলেও জানান তিনি।
পাকিস্তান, নেপাল, এবং ভারতের মুম্বাইতে এই টিকা সফলভাবে ব্যবহার হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “টিকা দেওয়ার পর হালকা জ্বর, ক্লান্তি, বা ইনজেকশনের স্থানে ব্যথা হতে পারে। তবে এটি অস্বাভাবিক নয় এবং দ্রুত সেরে যায়।”
অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, “টিকার কারণে বাংলাদেশ পোলিও মুক্ত হয়েছে, হাম-রুবেলা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, ধনুষ্টংকার নির্মূল হয়েছে। কিছু গোষ্ঠী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। তাই গুজবে কান না দিয়ে, টিকা সম্পর্কে তথ্য পেতে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বা রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
শিশুদের টিকা দেওয়ার আহ্বান জানিযে তিনি বলেন, “আসুন, শিশুদের সুরক্ষায় এক ডোজ টাইফয়েড টিকা নিশ্চিত করি। গড়ে তুলি একটি সুস্থ, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।”
ঢাকা/এএএম/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স য় দ র রহম ন ট ইফয় ড ট ক ক য ম প ইন
এছাড়াও পড়ুন:
ভোট গণনা শেষ, কে পাচ্ছেন সাহিত্যে নোবেল?
নোবেল পুরস্কার নিয়ে ‘বাজি’ বা ‘পোলিং’ হয়ে আসছে দীর্ঘদিন থেকেই। মূলত সম্ভাব্য বিজয়ীদের নিয়ে জুয়া খেলা বা বাজি ধরা, যা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রচারিত হয়। কে কী কারণে এ পুরস্কার পেতে পারেন, এসব নিয়ে চলে হিসাব–নিকাশ। এ বছরও সাহিত্যে কে নোবেল পুরস্কার পেতে পারেন, এ নিয়ে চলছে অঙ্ক কষাকষি। পোলিংও করছে অনেক ওয়েবসাইট। দেখা যায়, কোনো বছর কোনো প্রতিষ্ঠানের জরিপের ফলাফল মিলে যায়। কোনো বছর আবার মেলে না।
এ বছর এমন কয়েকটি ওয়েবসাইট সম্ভাব্য পুরস্কারপ্রাপ্তের ছোট তালিকা প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে THE BERLINER একটি। এখানে ম্যাথিল্ড মন্টপেটিটের একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর লেখায় বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে। তিনি জানান, চার বছর ধরে তাঁর বুক ক্লাব প্রতিবছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার কে জিতবেন, তা অনুমান করার জন্য একটি পুল পরিচালনা করছে। গত তিনবারই তাঁর অনুমান সত্য হয়েছে। ম্যাথিল্ড মন্টপেটিট বলেন, ‘আমরা সাধারণত সবাই পাঁচজন লেখকের নাম পাই এবং বিজয়ী হন একজনই। আমরা এটিকে গুরুত্বসহকারে নিই। তবে সাহিত্য এত গুরুত্বপূর্ণ যে কে সন্ত হচ্ছেন, তা নিয়ে মাথা ঘামানো কখনোই উচিত নয়।’
২০১৯ সালে পিটার হান্ডকে তো ২০২০ সালে লুইস গ্লুক। পরের বছর ২০২১ সালে আবদুলরাজাক গুরনাহ, ২০২২ সালে অ্যানি আর্নো। মানে একবার পুরুষ সাহিত্যিক তো অন্যবার নারী সাহিত্যিক। কোরিয়ার হান কাং গত বছর জিতেছিলেন, তাই এ বছরের বিজয়ী হবেন একজন পুরুষ।সাত বছর ধরে, ধরেন ২০১৮ সালে, যখন পোলিশ ঔপন্যাসিক ওলগা টোকারচুক জিতেছিলেন, তখন থেকে দেখা যাচ্ছে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পাচ্ছেন এ বছর একজন পুরুষ লেখক তো পরের বছর নারী লেখক।
২০১৯ সালে পিটার হান্ডকে তো ২০২০ সালে লুইস গ্লুক। পরের বছর ২০২১ সালে আবদুলরাজাক গুরনাহ, ২০২২ সালে অ্যানি আর্নো। মানে একবার পুরুষ সাহিত্যিক তো অন্যবার নারী সাহিত্যিক। কোরিয়ার হান কাং গত বছর জিতেছিলেন, তাই এ বছরের বিজয়ী হবেন একজন পুরুষ। এদিক বিবেচনা করলে যেন নোবেল কমিটি সাহিত্যের ব্যাপারে বসেই আছে নারী-পুরুষের লিঙ্গবৈষম্য কমানোর জন্য। এবারের পুরুষ লেখক তবে কে? এ বিষয়ে ম্যাথিল্ড মন্টপেটিট প্রাথমিকভাবে অনুমান করছেন, বিজয়ী লেখক হতে পারেন ভারতীয় অমিতাভ ঘোষ। ১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল বিজয়ী হওয়ার পর আর কোনো ভারতীয় এ পুরস্কার পাননি। তিনি মজা করে বলছেন, অরুন্ধতী রায় ও সালমান রুশদি হতে যাচ্ছেন না, দুঃখিত। কারণ, একজন অ্যাকটিভিস্ট, অন্যজন বেশি খ্যাত।
ম্যাথিল্ড মন্টপেটিট