সাবেক সংসদ সদস্য এইচ বি এম ইকবাল ও তাঁর এক ছেলের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা অনুমোদন
Published: 9th, October 2025 GMT
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান হেফজুল বারী মোহাম্মদ ইকবাল (এইচ বি এম ইকবাল) ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শেষ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধানের ভিত্তিতে সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতা ও তাঁর বড় ছেলে ইমরান ইকবালের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।
একই সঙ্গে ইকবালের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শিল্পী ও ছোট ছেলে মঈন ইকবাল অবৈধ সম্পদ অর্জন করে থাকতে পারেন—এমন সন্দেহে তাঁদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো.
দুদক জানায়, অনুসন্ধানে ইকবালের ৬২ কোটি টাকার এবং তাঁর বড় ছেলে ইমরান ইকবালের ৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়া গেছে। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমানের নেতৃত্বে একটি দল এ অনুসন্ধান পরিচালনা করে। এইচ বি এম ইকবাল সপ্তম জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-১০ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ইকবাল, তাঁর স্ত্রী, তিন সন্তান ও জামাতার সব ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ওই সব হিসাব থেকে ২৮৭ কোটি টাকা উত্তোলনের চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয় সংস্থাটি।
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর আর্থিক খাতে সংস্কারের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন শুরু করে। সে সময় ইকবাল স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে ২০২৫ সালের ১২ জানুয়ারি প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন। দুই দিন পর তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়। তাঁর ছেলে মঈন ইকবালও ভাইস চেয়ারম্যান পদ ছাড়েন। পরে ইকবালের আরেক ছেলে ইমরান ইকবাল চেয়ারম্যান হন। তবে একই বছরের ১৯ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক ‘সুশাসনের ঘাটতি’ দেখিয়ে প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বিলুপ্ত করে। এতে ইকবাল পরিবারের নিয়ন্ত্রণও শেষ হয়।
আরও পড়ুনজব্দ হিসাব থেকে টাকা তুললেন এইচ বি এম ইকবাল, প্রিমিয়ার ব্যাংককে জরিমানা১৬ এপ্রিল ২০২৫দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইকবালের নামে মোট ২৯৮ কোটি ৭০ লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে। এর বিপরীতে দায় ১৩৯ কোটি টাকা। দায় বাদে নিট সম্পদ দাঁড়ায় প্রায় ১৬০ কোটি টাকা। ঘোষিত আয়ের তুলনায় তাঁর ৬২ কোটি টাকার সম্পদ জ্ঞাত আয়ের উৎসের বাইরে পাওয়া গেছে। এ কারণে দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা অনুযায়ী ইকবালের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
ইমরান ইকবালের নামে ৪৫ কোটি টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। ঘোষিত আয়–ব্যয় বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৫ কোটি টাকার সম্পদের বৈধ উৎস নেই। এ কারণে তাঁর বিরুদ্ধেও পৃথক মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক। এ ছাড়া অনুসন্ধানে ইকবালের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শিল্পীর নামে ১০ কোটি ৮২ লাখ টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৩৭ লাখ টাকার সম্পদের উৎস অস্পষ্ট। তাই তাঁর সম্পদ বিবরণী চাওয়ার অনুমোদন দিয়েছে দুদক।
ইকবালের ছোট ছেলে মঈন ইকবালের নামেও ৪৭ কোটি টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। আয় ও ব্যয়ের হিসাবে ৩১ লাখ টাকার অসংগতি থাকায় তাঁর বিরুদ্ধেও সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।
আরও পড়ুনদুই যুগ পর প্রিমিয়ার ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ হারাল ইকবাল পরিবার১৯ আগস্ট ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ইকব ল র এইচ ব সদস য আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
মনে হয়, অনেক সমালোচনার পরেও মানুষ বিএনপিকেই ভোট দেবে: মান্না
বিএনপিকে নিয়ে অনেক সমালোচনা করা হলেও শেষ পর্যন্ত মানুষ এই দলটিকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে বলে মনে করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
এই নেতা বলেন, ‘আগামী পাঁচ বছরের জন্য কারা দায়িত্ব পাবেন, বোঝা যায় তো না কি? আমি জানি না। আপনারা হয়তো বলতে চাইবেন না। আমি বলি, আমার তো মনে হয়...আমি কোনো বিএনপির পক্ষে ক্যাম্পেইন করি না, আমি তো বিএনপি করি না। কিন্তু আমার মনে হয়, অনেক ক্রিটিসিজমের (সমালোচনা) পরেও শেষ পর্যন্ত মানুষ বিএনপিকেই ভোট দেবে।’
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) আয়োজিত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় মাহমুদুর রহমান মান্না এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের ওয়াচডগের ভূমিকায় থাকতে হবে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, সাংবাদিকেরা শুধু ওয়াচডগ নন, তারা মাঝে মাঝে পথপ্রদর্শকও হতে পারেন। যারা সাংবাদিকদের দাবিগুলো পূরণ করার অঙ্গীকার করবে, তাদের পেছনেও সাংবাদিকদের ওয়াচডগের মতো থাকতে হবে। তবে সাংবাদিকদের দাবিগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে না জানিয়ে পরবর্তীতে যারা ক্ষমতায় যাবে তাদের কাছেই বলার পরামর্শ দেন নাগরিক ঐক্যের এই নেতা।
বিজেসির চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হকের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব ইলিয়াস হোসেনের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিজেসির নির্বাহী মিলটন আনোয়ার। বিজেসির ট্রাস্টিদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন তালাত মামুন ও ফাহিম আহমেদ। অনুষ্ঠান আয়োজনে সহায়তা করে বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশন।